নারীর ক্যানসার ঝুঁকি বাড়ে যেসব পেশায়
খুব আশ্চর্য হওয়ার মতোই কিছু তথ্য উঠে এসেছে এক গবেষণায়। কিছু পেশা আছে যেগুলোর সঙ্গে যুক্ত নারীদের ডিম্বাশয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে। অর্থাৎ এই নারীদের ডিম্বাশয় আক্রান্ত হতে পারে ক্যানসার দ্বারা। সম্প্রতি এমনই ভয়াবহ কিছু তথ্য উঠে এসেছে!
কানাডার মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরা এ গবেষণা চালিয়েছেন। তারা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪৯১ জন নারীর তথ্যের সঙ্গে ৮৯৭ জন সুস্থ নারীর তথ্য তুলনা করেছেন। হেয়ারড্রেসিং, বিপণন, কাপড় সেলাইয়ের কাজে কসমেটিক ট্যাল্ক, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন পারক্সাইড, সিন্থেটিক ফাইবার, পলিস্টার ফাইবার, জৈব রং, রঙ্গক এবং ব্লিচ-সহ বেশ কয়েকটি বিষাক্ত উপাদানের নমুনা পেয়েছেন তারা। বিএমজে জার্নাল অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মেডিসিনে প্রকাশিত নতুন গবেষণায় জানা গিয়েছে, হেয়ারড্রেসার, বিউটিশিয়ান এবং হিসাবরক্ষকদের মধ্যে ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তাঁরা যে পরিবেশের মধ্যে কাজ করেন, সেটাই তাঁদের মধ্যে বাড়াচ্ছে ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি।
হেয়ারড্রেসার, বিউটিশিয়ান হিসেবে কাজ করা নারীদের ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি অন্য সব পেশায় যুক্ত নারীদের থেকে তিনগুণ বেশি। দশ বছর ধরে হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজ করা নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ এবং নারী নির্মাণ শ্রমিকদের প্রায় তিনগুণ বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। বিপণনের কাজে যুক্ত নারীদের ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি ৪৫ শতাংশ এবং পোশাক শিল্পের সঙ্গে যুক্ত নারীদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের শিক্ষাবিদরা জানান, পেশাগত ক্যান্সারের গবেষণা এতদিন নারীদের বাদ দিয়েই করা হতো। বর্তমানে নারীদের পেশাগত স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপারটি নিয়ে অধ্যয়ন করা হচ্ছে। এটি নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
এছাড়াও এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা খুব বেশি শিক্ষিত নন, যাঁরা গর্ভনিরোধক ওষুধ খান, যাঁরা ক্যানসার সম্পর্কে সচেতন নন, তাঁদের মধ্যেও এই রোগের ঝুঁকি রয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, ২০১০ থেকে ২০১৬ এই ছ’বছরে ১৮ থেকে ৭৯ বছর বয়সি নারীদের মধ্যে করা সমীক্ষা শেষে দেখা গেছে, প্রায় ৫০০ জন নারীর সঙ্গে গবেষকদের করা সমীক্ষার ফল মিলে যাচ্ছে।
কেউ কেউ বলছেন, দশ বছর বা তার বেশি সময় ধরে রূপচর্চার সঙ্গে যুক্ত নারীদের এই ক্যানসারে আক্রান্তের আশঙ্কা বেশি। পাশাপাশি, যাঁরা ওই একই সময়কাল ধরে হিসাবরক্ষকের কাজ করেছেন, তাঁদের এই আশঙ্কা দ্বিগুণ। তবে আক্রান্ত হলে ভীতিপ্রদ ও অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞ গাইনোকোলজিস্টের শরণাপন্ন হয়ে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে হবে।