তালেবানি যুগের আগে কেমন ছিল আফগানি নারীদের জীবন?
তৎকালীন যুগের আফগানিস্তান এবং বর্তমান আফগানিস্তানের মধ্যে রয়েছে বিশাল পার্থক্য। মাত্র কয়েক দশক আগেও তারা বেশ স্বাধীনচেতা জীবনযাপন করতেন। এটি বোঝা যায় তৎকালীন সময়ের মেয়েদের কিছু ছবি দেখলেই।
ষাটের দশকে তাদের পড়াশোনা করার অধিকার ছিল। ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অগাধ আনাগোনা। মেয়েদের পড়াশোনায়ও ছিল না কোনও বাধা। পশ্চিমী সংস্কৃতির আদান-প্রদান চলত স্বাভাবিক নিয়মেই। ছেলে-মেয়েরা একসঙ্গে পড়াশোনা নিয়েও কোনও রকম নিষেধ ছিল না। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও পারতেন নানা পেশায় পড়াশোনা করতে৷
সে সময়ে আফগানিস্তানের নারীদের বোরখা পরা নিয়ে কোনও রকম বাধ্যতাও ছিল না। তখন মেয়েরা পশ্চিমী পোশাকে বেশ স্বচ্ছন্দ ছিলেন। সাজ নিয়েও তারা ছিলেন যথেষ্ট সৌখিন ছিলেন। স্কার্ট, ডাংগ্রি প্যান্ট, বেলবটম ট্রাউজারের মতো ছয় এবং সাতের দশকের পোশাক তখন আফগানিস্তানে দেখা যেত।
তখন মেয়েরা চুলও বাঁধতেন ভিন্নভাবে। সবকিছুতে ছিল ফ্যাশনের ছোঁয়া। মডেলিংও পেশা হিসাবে বেছে নিতেন সে সময়ের আফগানি মেয়েরা। তখন তারা অবশ্য অনেক ধরনের পেশার সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। নিষিদ্ধ ছিল না সঙ্গীত চর্চাও। সঙ্গীতজগতে তারা বেশ পরিচিতিও লাভ করেছিলেন।
সেসময়ে মেয়েরা কোন বাঁধা ছাড়াই যেতে পারতেন ঘরের বাইরে৷ বাজারে যেতেও ছিল না সমস্যা। শুধু বাজার নয়, সিনেমা হল, পার্ক, যে কোনও জনসমাগমে তারা যেতে পারতেন।
তবে রাস্তাঘাটে হিজাব ছাড়াও মেয়েদের এখন আর দেখা যায় না। বন্ধ হয়ে গেছে অনেক বছর আগেই। ১৯৯৬ সালের পর থেকেই মেয়েদের পড়াশোনা করাটাই একটি লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। তালিবানি শাসন ফের শুরু হওয়ায় আফগানি মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আবার উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে দেশ ছাড়লেও মেয়েরা তাতেও পিছিয়ে।