Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্ব ট্রমা দিবস: সচেতন হওয়া জরুরি

মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে পালিত হয় বিশ্বব্যাপী ট্রমা দিবস (১৭ অক্টোবর)। এই দিবসটিতে বিশেষভাবে মানুষকে সচেতন হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়। ট্রমা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হলো যারা বিভিন্নরকম দুর্ঘটনায় আহত হন তাদের দ্রুত চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা। এ লক্ষ্যে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পারিবারিক সহিংসতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গুরুতর গাড়ি দুর্ঘটনা, আগুনে পুড়ে যাওয়া, নারী, শিশু ও বয়স্কদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, গাছ বা উঁচু ভবন থেকে পড়ে যাওয়া, হঠাৎ স্ট্রোক, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া প্রভৃতি শারীরিক বা মানসিক আঘাতজনিত ঘটনা। মানুষের মাঝে যদি সচেতনা বৃদ্ধি করা যায় তবে অনেকাংশেই প্রাণহানি রোধ করা যায়।

বিশ্বে গড়ে ৪৫ বছরের কম বয়সী মানুষের মৃত্যুর কারণ ট্রমাজনিত। প্রতিবছর প্রায় ৬ মিলিয়ন মানুষ মারা যায় শুধু ট্রমাজনিত কারণে! আনুমানিক ৬৯ মিলিয়ন মানুষ প্রতি বছর আঘাতমূলক মস্তিষ্কের শিকার হয়। যত তাড়াতাড়ি রোগের চিকিৎসা করা হবে ততই রোগীর জন্য মঙ্গল । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আহতরা সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছতে পারেন না।

যত মানুষ নিহত হন তারচেয়ে ৩ গুন বেশি মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। ফলে তাদের সাধারণ জীবনচ্যুতি ঘটে। মানুষের জীবনকে একটু সহজ করে দিতে, সচেতনাবৃদ্ধিতে বিশ্ব ট্রমা দিবস পালিত হয়ে আসছে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ, বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে অনেককেই আজীবন পঙ্গুত্বও বরণ করতে হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলেন কিছু কিছু আঘাতজনিত দুর্ঘটনায় দ্রুত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করলে প্রাণহানি কমিয়ে আনা সম্ভব এমনকি শারীরিকভাবে ক্ষতিও কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। এ লক্ষে জরুরি চিকিৎসার পর্যাপ্ত সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী থাকলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০% মৃত্যু কমিয়ে আনা যেতে পারে। বিশ্ব ট্রমা দিবসে আহত ব্যক্তিদের দ্রুত চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের তৎপরতাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়।

শরীরে বা মনে সৃষ্ট কোনো আঘাতকে সাধারণত ট্রমা বলে। তবে মনের জন্য মানুষের মধ্যে কোনই বিকার দেখা যায় না। মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে সেক্ষেত্রে। এছাড়া অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় মনের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ে। শরীরের সঙ্গে তখন মনের স্ট্রেচ কমিয়ে আনতে পারলে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারে আহত ব্যক্তি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ১২ লাখ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এবং ৫ কোটিরও বেশি মানুষ আহত হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়। যদিও বাংলাদেশে সরকারি পর্যায়ে এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। যত মানুষ নিহত হন তারচেয়ে ৩ গুন বেশি মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেন। ফলে তাদের সাধারণ জীবনচ্যুতি ঘটে। মানুষের জীবনকে একটু সহজ করে দিতে, সচেতনাবৃদ্ধিতে বিশ্ব ট্রমা দিবস পালিত হয়ে আসছে।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ