Skip to content

৫ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একনজরে প্রযুক্তির রাজপুত্র ইলন মাস্ক

বর্তমান প্রযুক্তি বিশ্ব কিংবা কর্পোরেট জগত- যেটাই বলেন,  ইলন মাস্ক এর মতো প্রতিভাধর ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তিনি শুধু সফল ব্যবসায়ীই নন, বরং হালের তরুণদের আইকনে পরিণত হয়েছেন। অনেকে হয়ত টেসলা ও স্পেসএক্স এর কল্যাণে  ইলন মাস্কের নাম জেনে থাকবেন। কিন্তু টেসলা এবং স্পেসএক্স এর বাইরেও তার আরো অসাধারণ কিছু উদ্যোগ রয়েছে।

টেসলা কিংবা স্পেসএক্স এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে খ্যাতি পেলেও তিনি যে জনপ্রিয় পেমেন্ট মেথড পেপ্যাল এর একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা সেটা অনেকেই জানেন না। আমাদের বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট  মহাকাশে পাঠিয়েছে কিন্তু ইলন মাস্ক এর কোম্পানি স্পেস এক্স। টনি স্টার্ক সিনেমার আয়রন-ম্যান হলেও রিয়েল লাইফ এর আয়রন-ম্যান যে ইলন মাস্ক তাতে কারো সন্দেহ নেই। মজার ব্যাপার হচ্ছে আয়রন ম্যান ২ ছবির শুটিং স্পট হিসেবে তার স্পেসএক্স কোম্পানি ব্যবহৃত হয়। একই সাথে ছবিটিতে তিনি ক্যামিও হিসেবে অল্প সময়ের জন্য পর্দায় আসেন।

বিশ্বের অন্যতম এই ধনী ব্যক্তিটি নিজের কোম্পানির সিইও হিসেবে বছরে মাত্র এক ডলার করে বেতন নেন। কখনো আবার তাও নেন না। তাহলে তিনি টাকাপয়সা কোথায় পান? অবাক হচ্ছেন? নিজের অংশীদারিত্ব থাকা বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ সহ আরও কিছু সুবিধা পান ইলন মাস্ক, যার বেশিরভাগই আসে টেসলা থেকে। বছরে ১ ডলার বেতন নেয়াটা আসলে সিলিকন ভ্যালির একটা ট্রেন্ড, যেখানে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা সরাসরি বেতন না নিয়ে স্টক ও অন্যান্য খাত থেকে সুযোগসুবিধা নিয়ে থাকেন। স্টিভ জবস ও মার্ক জাকারবার্গেরও এমন রেকর্ড আছে।

 

মাত্র ১২ বছর বয়সে ইলন মাস্ক প্রোগ্রামিং শিখেন এবং সে জ্ঞান কাজে লাগিয়ে তখন একটি ভিডিও গেম তৈরি করে। মজার ব্যাপার হলো তিনি সেটি ৫০০ ডলারে বিক্রি করতেও সমর্থ হয়েছিলেন। ১৭ বছর বয়সে মাস্ক তার জন্মস্থান দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে কানাডায় চলে আসেন এবং তারপর যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ায় ভর্তি হন।

 

বর্তমানে ইলন মাস্ক দক্ষিণ আফ্রিকা, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ধারণ করেন। গ্রাজুয়েশনের পর স্ট্যানফোর্ড এর মতো নামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় মাস্টার্স করার জন্য ভর্তি হয়েও মাত্র দুই দিন পরেই তা ছেড়ে চলে আসেন উদ্যোক্তা হওয়ার নেশায়।

 

তার প্রতিষ্ঠিত প্রথম কোম্পানি জিপ২- যেটি ১৯৯৯ সালে তিনি ৩০৭ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন। ইলন মাস্ক তার নিজের ইলেকট্রিক ভেহিকেল কোম্পানি টেসলাতে একই সাথে সিইও এবং চিফ প্রোডাক্ট আর্কিটেক্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টেসলার জনপ্রিয় গাড়ি টেসলা মডেল এস আমেরিকান ন্যাশনাল হাইওয়ে সেফটি এডমিনিস্ট্রেশন এর কাছ থেকে সেফটি রেটিং ৫ স্কেলে ৫.৪ স্কোর অর্জন করে। এটা একটা রেকর্ড ব্রেকিং রেটিং।

মাস্ক এর স্পেসএক্স এর কল্যাণে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে যাওয়ার খরচ ৯০ % কমানো সম্ভব হয়েছে। নিজের সম্পদ ব্যবহার করে কল্পনাকে বাস্তব করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে মাস্ক কে মজা করে “থ্রিলিয়নেয়ার” বলা হয়ে থাকে। সৌরশক্তি নিয়ে গবেষণাকারী সোলারসিটি নামক প্রতিষ্ঠানটি মাস্ক এর কাজিনরা প্রতিষ্ঠা করলেও সেটির পেছনের বেশিরভাগ অর্থও ইলন মাস্কেরই।

 

হাইপারলুপ হলো তার এমন একটি প্রজেক্ট যার লক্ষ্য মানুষের ভ্রমণকে আরো দ্রুত করার জন্য দ্রুতগতির প্রেসারাইজড টিউব ক্যাপসুল তৈরি করা। হাইপারলুপ এর জন্য সুরঙ্গ খুঁড়তে তিনি “দ্যা বোরিং কোম্পানি” নামক একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইলন মাস্ক এর আরেকটি কোম্পানি হলো নিউরালিঙ্ক। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানিটি সম্প্রতি একটি ব্রেইন-মেশিন ইন্টারফেস প্রকাশ করেছে যা মানুষের মস্তিষ্কের সাথে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন যুক্ত করবে। 

 

মঙ্গল গ্রহে বসতি গড়ার স্বপ্ন হয়তো তার হাত থেকে পূরণ হবে। আমরা কেবল স্বপ্ন দেখেই গিয়েছি এমন অনেক কিছুই সে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। তাই এখন সময়ের প্রশ্ন, কোথায় গিয়ে থামবেন এই প্রযুক্তির রাজপুত্র?

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ