পাঁচ যুগ পেরিয়ে সুবর্ণা মোস্তফা
"জানেন বাকের ভাই, এই পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ শুধু কষ্ট পাওয়ার জন্যই আসে।"
স্থির নয়ন আর হাসিমুখে এমন গভীর যন্ত্রণার অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষমতা নিয়ে কজন আসে পৃথিবীতে?
'কোথাও কেউ নেই' এর মুনার মুখটা মনে আছে? আছে নিশ্চয়ই। এমন কালজয়ী হাজারো চরিত্রের অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তফা। আজ ০২ ডিসেম্বর এই দুর্দান্ত অভিনয়শিল্পীর জন্মদিন। ষাটের কোটা পেরিয়ে একষট্টিতে পা রাখলেন এই অভিনেত্রী।
নন্দিত এই অভিনেত্রী শিশু বয়স থেকেই কাজ শুরু করেন। একইসাথে কাজ করেছেন টেলিভিশন নাটক, মঞ্চ নাটক ও সিনেমায়।
অভিনেত্রীদের মধ্যে পুরো একটি প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেছেন এই খ্যাতনামা অভিনেত্রী। জীবনের দীর্ঘ সময় জড়িত ছিলেন মঞ্চ নাটকেও। ঢাকা থিয়েটারের হয়ে অভিনয় করেছেন অসংখ্য মঞ্চ নাটকে। প্রথম সেলিম আল দ্বীনের 'জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন' নামে মঞ্চনাটকের মাধ্যমে তাঁর অভিনয়ের যাত্রা শুরু হয়।
আশির দশকে 'ঘুড্ডি' সিনেমার মধ্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রে আসেন। এরপর ১৮৮৩ সালে 'নতুন বউ' ও 'নয়নের আলো' সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতির শিখরে উঠেন। 'নতুন বউ' এর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন তিনি। এমনকি গত বছরও 'গহীন বালুচর' সিনেমায় অভিনয় করেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এই কালজয়ী অভিনেত্রী।
বাংলা নাটকেও রয়েছে তাঁর অসামান্য অবদান। বলতে গেলে টেলিভিশন নাটকের জুটি প্রথা শুরু হয় সুবর্ণা মোস্তফা আর আফজাল হোসেনকে দিয়ে। 'কোথাও কেউ নেই', 'শিল্পী', ' রক্তে আঙুর লতা' এসব জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন সে যুগে।
সুবর্ণা মোস্তফা ১৯৫৯ সালে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে তাঁর জন্ম। পিতা প্রয়াত অভিনয় শিল্পী গোলাম মোস্তফা।
অভিনয়ের সেকাল থেকে একাল, একইরকম সাড়া জাগানো অভিনয় করে চলেছেন এই গুণী অভিনেত্রী। সম্প্রতি 'গন্ডি' নামক সিনেমার কাজ শেষ করেছেন। ইতোমধ্যেই সিনেমাটির ট্রেলার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নাম লিখিয়েছেন রাজনীতির খাতায়ও। 'অভিনেত্রী' এই পরিচয়ের পাশাপাশি তিনি একজন সংসদ সদস্যও।
তাঁর এই পথ চলো আরো দীর্ঘ দিনের হবে বলেই আশা রাখেন তাঁর ভক্তরা। উপহার দেবেন আরো নতুন কাজ, নতুন সৃষ্টি, নতুনভাবে উপলব্ধির জায়গা তৈরি করবেন।