সজীবতায় ও সতেজতায় অন্দরের সজ্জা
আমাদের জীবনের যত মান-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ- হাসি, অনুভূতি সবকিছু এক বিশ্বস্ত সাক্ষী হচ্ছে আমাদের গৃহ বা আমাদের অন্দর। সকল কাজকর্ম, বাস্ততা, বিষাদ সকল কিছু অবসান ঘটিয়ে শান্তির জায়গায় হচ্ছে অন্দর। যেখানে প্রাণ খুলে কথা বলা যায়। যেখানে ভালো সময় কাটানো যায়। যেখানে দুঃখ কষ্ট ভাগ করে নেওয়া যায়। সব থেকে বড় কথা, মন ভালো রাখতে প্রয়োজন সজীবতা ও সতেজতায় ঘেরা অন্দর আসলে অন্দরকে যত অন্যরকম ভাবে রূপ দেওয়া যায় ঘর ততই সুন্দর লাগে। প্রতিটা মানুষেরই যদিও রুচিবোধ বা চিন্তা ভাবনা আলাদা তবে সজীবতা ও সতেজতা অন্দর সজ্জার জন্য অন্যতম একটি বিষয়।
হালকা পাতলা ঘর
ঘর আবার হালকা পাতলা হয় নাকি? বিষয়টা হালকা পাতলা ঘর বলতে বোঝানো হয়েছে ঘরে যত কম জিনিসপত্র থাকবে এবং যেখানে সেখানে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে না থেকে নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে এতে করে ঘরটা বেশ গুছানো লাগবে। বিছানায় অতিরিক্ত বালিশ কিংবা চাদর, ফ্লোরে অতিরিক্ত ম্যাট, জানালায় ভারী পর্দা এগুলো ঘরকে অস্বস্তি দিয়ে থাকে। এছাড়াও গরমের দিনে ফার্নিচার একটি অদল বদল করা দরকার রয়েছে। থরের দেয়ালের রং যেন একটু হালকা তবে উজ্জ্বল হয়। যেখান দিয়ে বাতাস প্রবেশ করে সেই জায়গাটা যাতে যতটা সম্ভব খালি এবং খোলামেলা রাখা যায় সেই সব দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
সবুজ সতেজ বারান্দা
বারান্দায় বিশেষ নজর দিন। অবসরের একটা সময় পরিবারের সাথে বিকেলের চা খেতে খেতে বারান্দায় কাটানো যায়। যদি বারান্দায় সেরকম মনোরম পরিবেশ তৈরি করা যায়। একটা সবুজ সতেজ বারান্দা এই যান্ত্রিক শহরে যতটা স্বস্তি দেবে তা অন্য কোথাও পাওয়া একটু কঠিন। আর এখন গাছ লাগান। অবসরে সেই গাছগুলোর যত্ন নিন। যখন বারান্দাটি সবুজে ঘেরা থাকবে তখন চোখে এক অন্যরকম আরাম অনুভূত হবে। তাই বারান্দায় গাছের বাগান তৈরি করে ফেলুন। সাথে থাকলো চেয়ার টেবিল। এক্ষেত্রে বর্তমান সময় বারান্দাগুলো একটু ছোট থাকে। তাই চেয়ার টেবিল দিয়ে বারান্দার জায়গা নষ্ট না করে চাইলে ম্যাট বিছিয়ে বারান্দায় সুন্দর বসার জায়গা তৈরি করতে পারেন। চাইলে বারান্দায় একটা দোলনা রাখতে পারেন। দোল খেতে খেতে প্রিয় মানুষের সাথে গল্প করলেন।
অন্দরে আয়না
আয়না ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়। এছাড়া প্রতিদিনই আনার প্রয়োজনও পড়ে তাই প্রয়োজনকে শুধু প্রয়োজনে রাখলে চলবে না এটাকে আকর্ষণীয় গড়ে তুলতে হবে যাতে করে সেখানে দাঁড়ালেও মন ভালো হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন আকৃতির আয়না পাওয়া যায়। ঘরের একটা নির্দিষ্ট দেয়ালে চাইলে আয়না রাখতে পারেন। দেয়ালে শুধু আয়না ঝুলিয়ে রাখবেন না। আয়নার আশেপাশের দেয়ালগুলো একটু সুন্দর করে সাজান। যাতে করে খুবই রঙিন ও আকর্ষনীয় লাগে দেয়াল।
পর্দা ও আলো
পর্দা লাগানোর ক্ষেত্রে ঘরের দেয়ালের রং এবং চলমান ঋতু দুইয়ের কথাই মাথায় রাখতে হবে। যেহেতু হেমন্ত চলছে, এখনই খুব ভারী পর্দার প্রয়োজন নেই। কিন্তু পর্দা গুলো যাতে ঘরের সাথে মানানসই হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রঙিন পদী ঘরের জন্য ব্যবহার করা উচিত কারণ ঘরের মূল আকর্ষণই হচ্ছে ঘরের পর্দা।
আলোর ক্ষেত্রে অবশ্যই ঘর বুঝে আলো ব্যবহার করতে হবে। খুব বেশি আলো যাতে ঘরে না থাকে সেদিকেও খেয়াল করতে হবে। আবার অতিরিক্ত কম আলো চোখের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়া ঘরে বিভিন্ন ধরনের আলো ব্যবহার করা যেতে পারে। বিভিন্ন রঙের আলো। যেমন বারান্দায় একটু হলুদ, সবুজ ও লাল রঙের আলো রাখতে পারেন। বসার ঘরে সাদা ও হলুদ রঙের আলো। শোবার ঘরে একটু কমলা হলুদ ধাঁচের আলো রাখতে পারেন।
অন্যান্য অনুসঙ্গ
ঘরের অন্যান্য অনুসঙ্গ বলতে ঘরে ফুলদানি রাখতে পারেন। এছাড়াও ঘরের কাঁচা ফুল রাখতে পারেন। এতে করে ঘরে যে সুন্দর একটা ফুলের আভা ছড়াবে মনকে ফুরফুরে করে তুলবে। সকাল দিকে আগরবাতি জ্বালিয়ে রাখতে পারেন। ঘুম থেকে ওঠার পর যখন ঘর একটা মুদ্ধময় গন্ধে ভরে উঠবে তখন মন সতেজ হয়ে উঠবে। দেয়ালেই কিছু ফটো ফ্রেম লাগান। দেয়ালগুলো যেন একদম শূন্য মনে না হয়। এছাড়াও বসার ঘরে দাবা, লুডু এসব খেলার ব্যবস্থা রাখুন। যাতে করে কেউ আপনার বাসায় গল্প করতে আসনে আপনার সাথে একটা সুন্দর সময় কাটাতে পারে, কিংবা বাচ্চাদের অবসর যেন এ খেলাগুলোর মাধ্যমে সুন্দর হয়ে ওঠে। অন্দর যেমনি হোক না কেন সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কারণ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার সৌন্দর্য ও সুস্থতার অন্যতম একটি আংশ।