শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কমাতে যা করবেন
আজকাল আর কয়েক যুগ আগের মত শৈশব বলতে খেলাধুলা করা বিকেল নেই। এখন শিশুরা ঘরমুখো জীবনযাপনে বেশি অভ্যস্ত। শিশুদের আসক্তি এখন ইন্টারনেটেই বেশি। অনেকে গেমস খেলায় আসক্ত। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপডেট থাকতে চায়। এতে করে শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি ব্যাপক হারে বেড়ে যাচ্ছে। যা শিশুদের জন্য অনেকটা ক্ষতিকরও বটে।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিরাপদ করতে বাবা-মাকে মূলত দুটি জিনিস যোগাযোগ-মাধ্যমে রাখতে হবে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে– শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গিয়ে কোন বিপদে পড়ছে কিনা। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে– তারা কোন আসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে কিনা। সাইবার অ্যাবিউজ এখন খুব কমন ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এটি একটি হুমকির জায়গা। আরেকটি হচ্ছে অ্যাডিকশন। তাই শিশুদের ইন্টারনেট আসক্তি কমাতে পরিবারের সদস্যের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে যা করা যেতে পারে :
কিছু গুরুত্বপূর্ণ অ্যাপ ইনস্টল করুন। প্যারেন্টাল সেফ ব্রাউজার একটি অ্যাপ আছে। এটি যদি শিশুর ডিভাইসে ইনস্টল করা হয় এটি ব্যবহার করে কোন ধরনের অ্যাডাল্ট কন্টেন্ট দেখতে পারবে না শিশু। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা-বিষয়ক কিছু অ্যাপ ইনস্টল করা উচিত।
প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করুন। শিশুদের যদি কোন ডিভাইস দেওয়া হয়, তা হলে সেটিতে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করাটাই নিরাপদ। গুগলে একটা প্যারেন্টাল কন্ট্রোল সিস্টেম আছে, যা ব্যবহার করে শিশু কি দেখছে তার ওপর নজরদারি করা সম্ভব।
ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় সচেতন হোন। কোম্পানির কাছ থেকে ইন্টারনেট সংযোগটি নেওয়া হচ্ছে তা শিশুর জন্য সেফ ইন্টারনেটের ফিচারটি আছে কিনা সেটি যাচাই করে নিন।
চাইল্ড ভার্সন অপশনটি ব্যবহার করুন। ফেসবুক ও মেসেঞ্জারের ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের চাইল্ড ভার্সন আছে। সেক্ষেত্রে শিশুদের একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে দেওয়া যায়, যেটি তারা ব্যবহার করলেও অভিভাবকদের সুপারভাইস করার সুযোগ থাকে।
শিশুর সঙ্গে আপনিও অংশ নিন। ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় আপনিও শিশুর সঙ্গে বসুন। শিক্ষামূলক বিভিন্ন চ্যানেল ও ওয়েবসাইট রয়েছে। তাদেরকে সেগুলো দেখতে উৎসাহিত করুন। নতুন কিছু শিখতে বা তৈরি করতে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলুন।
আপনি কি দেখছেন সে বিষয়েও সতর্ক হোন। বাড়ির বাবা-মা বা প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরা যদি ওই ওয়াইফাই সংযোগ ব্যবহার করে আপত্তিকর কিছু সার্চ করে বা দেখে, তা হলে সেগুলো ওই আইপি অ্যাড্রেসেই জমা হয়। ওই ইন্টারনেট ব্যবহার করে যদি বাড়ির শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সদস্যরাও কিছু ব্রাউজ করে তা হলে ওই জিনিস বা কন্টেন্টগুলো তাদেরও সামনে চলে আসে। তাই সতর্ক হোন।
শিশুর ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সময় বেঁধে দিন। শিশুদের ইন্টারনেট ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হলে ইন্টারনেট সংযোগ বাসায় কখন কখন থাকবে আর কখন থাকবে না, সেটির একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে।