নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা
কোন দেশের উন্নয়নে প্রয়োজন নারী ও পুরুষের সমান অগ্রসর। এক সময়ে নারীকে রাখা হতো ঘরকুনো করে, সামাজিক ও আর্থিক যেকোনো সুযোগ সুবিধা থেকে তারা ছিল পিছিয়ে। কিন্তু এখন প্রত্যেক দেশই নারী উন্নয়নের প্রতি নজর দিচ্ছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও নারী উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। নারীর নিরাপত্তায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
২০১৭-১৮ সালের অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের ২৮ শতাংশ নারী উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল, ২০১৮-১৯ সালে তা ২৯.৬৫ শতাংশে উন্নীত করা হয়। বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীর হার ৯৯.৪ শতাংশ। সরকার বিনামূল্যে ৬-১০ বছর বয়সী সব শিশুকে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে বিনামূল্যে। মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত চলছে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ এবং পড়াশোনায় মেয়েদের উৎসাহিত করতে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য বৃত্তি ব্যবস্থা।
এছাড়াও নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে জামানত ছাড়াই সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা এসএমই ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আবার নারী উদ্যোক্তারা বাংলাদেশ ব্যাংক ও এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ১০ শতাংশ সুদে ঋণও নিতে পারছেন। বর্তমানে ৩০ লাখেরও বেশি নারী শ্রমিক পোশাক শিল্পে কর্মরত আছেন। সরকারের সপ্তম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১৬-২০২০) অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতের অঙ্গীকার করা হয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, সেনা, নৌ, পুলিশ, বিজিবি, সাহিত্য-শিল্পসহ সর্বোচ্চ বিচারিক কাজেও নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সাফল্য এখন লক্ষণীয়। আমাদের নারীরা খেলাধুলায়ও পিছিয়ে নেই। বলা বাহুল্য, নারীদের এই অভূতপূর্ব ক্ষমতায়নে অংশগ্রহণের সুযোগ ও অনুপ্রেরণার যিনি প্রথম ভাগিদার, তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে অনেকাংশেই সফল হয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সত্যিই পরিবর্তন এনেছে নারীদের জীবনে। নারী শিক্ষার হার বেড়েছে। কর্মক্ষেত্রেও পিছিয়ে নেই নারীরা। আশা করি সামনে আরো অগ্রসর হবে নারীরা।