Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কী করে বুঝবেন স্কুলে শিশু বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে?

সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মতে, বুলিং হলো অপ্রত্যাশিত ও আক্রমণাত্মক আচরণ, যা সাধারণত স্কুলের বাচ্চাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আচরণের মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যে ক্ষমতার অসামঞ্জস্য প্রকাশ পায়। এই আচরণের শিকার শিশু বা কিশোর থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের ব্যক্তিই হতে পারেন। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী বা অফিসের সহকর্মীদের মধ্যেও এমন আচরণ দেখা যায়। এর অর্থ হচ্ছে, কাউকে শারীরিক বা মানসিকভাবে অপদস্থ করা। বুলিং মূলত সচেতন বা অবচেতনভাবে একধরনের আক্রমণাত্মক আচরণ, ইচ্ছাকৃতভাবে কাউকে অপমান, অপদস্থ বা হেয় করা। বুলিংকে মজা হিসেবে দেখার শিকড় আমাদের সমাজের গভীর পর্যন্ত। শিশুদের ক্ষেত্রে বুলিং ফেলতে পারে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব। বুলিংয়ের কারণে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, অনেক সময় বাইরের কারও সঙ্গে মিশতেই ভয় পায়। মাত্রাতিরিক্ত বুলিং হতে পারে আত্মহত্যার কারণ।

বুলিংয়ের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় স্পষ্ট:

* বুলিংয়ের শিকার ব্যক্তি বুলিংকে মেনে নিতে পারেন না।

* যিনি বুলিং করছেন এবং যিনি বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন, উভয়ই বুঝতে পারেন এ ধরনের পরিস্থিতিতে বুলিং করা ব্যক্তির ক্ষমতা বেশি।

* যিনি বুলিংয়ের শিকার হন, তিনি বারবারই হতে থাকেন।

ছোট্ট সন্তানটি স্কুলে বুলিংয়ের শিকার হয়, তখন তা শিশুর জন্য তো অবশ্যই, বাবা-মায়ের জন্যও খুব খারাপ লাগার একটি অনুভূতি। বুলিং বিষয়টি শিশুদের শারীরিক কিংবা মানসিক ২ ভাবেই আঘাত করতে পারে। এটি একটি বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা, যা শিশুর মানসিকতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন আপনার শিশুটি স্কুলে বুলিং এর শিকার হচ্ছে কি না :

– স্কুল থেকে ফিরে আসার পর সে চুপচাপ হয়ে যায়। কোনো নির্দিষ্ট কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে

– দুশ্চিন্তা, অবসাদগ্রস্থ হয়ে যায়

– প্রাথমিক অবস্থায় শিশু স্কুল ও পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারাতে পারে, অমনোযোগী হয়ে পড়তে পারে। তার মনে স্কুলভীতি জন্মাতে পারে। 

– অন্যদের সাথে খেলতে অনীহা তৈরি হতে পারে। 

– মেজাজ খিটখিটে বা রুক্ষ হয়ে যায়।

– স্বাভাবিক উচ্ছলতা হারিয়ে যেতে পারে।

– খাওয়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে

– শিশু চুপচাপ হয়ে যায়, একা থাকতে বেশি পছন্দ করে

-অনেকক্ষেত্রে শিশুরা নিজের ক্ষতিও করে ফেলতে পারে। 

অভিভাবকদের উচিত শিশুদের প্রতি লক্ষ্য রাখা, এই ধরণের কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া৷ 

করণীয় কী? 

মানসিক বিশেষজ্ঞ দের মতে, বুলিং প্রতিরোধে দায়িত্ব নিতে হবে মা – বাবা এবং শিক্ষকদের। শুধু বুলিং এর শিকার হলেই যে কেবল শিশুদের পশে দাঁড়াতে হবে তাই না, বরং শিশুকে শেখাতে হবে,  কীভাবে অন্যের প্রতি সহজ ও সহানুভূতিশীল হওয়া যায়। 

শিশু বুলিং এর শিকার হলে যা করতে হবে-

১. শিশুর সাথে কথা বলুন৷ ওকে সময় দিন৷ জানতে চেষ্টা করুন সারাদিনে স্কুলে বা বন্ধুদের সাথে কি কি করেছে। যদি এমন কোনো সন্দেহ হয় যে, আপনার সন্তান বুলিং এর শিকার, তাহলে তাকে সাহস দিন। তার মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনুন৷ 

২. আপনার সন্তানকে সাহস দিন। “তোমাকে যদি ওরা এভাবে বলে, তাহলে তুমি তাদের ওইসব কথায় রেগে যাবে না, বরং সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করবে। তুমি যদি তাদের ওইসব কথায় পালটা আচর না করো, তবে ওরা থেমে যাবে” এই ধরণের কথা বলে তাকে আশ্বাস দিন। 

৩. স্কুলের শিক্ষকদের সাথে কথা বলুন৷ তাদেরকে বুঝিয়ে বলুন, বুলিং কতোখানি বাজে প্রভাব ফেলছে তাদের শিক্ষার্থীদের উপর। 

৪. যদি আপনার সন্তান মানসিকভাবে বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ৫. সন্তানকে খেলাধুলা, শরীরচর্চায় অভ্যস্ত করুন।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ