নারী ব্যক্তিত্ব গঠনে মনোযোগ দিক
নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে কে না চায়? সে নারী হোক বা পুরুষ। সৌন্দর্য প্রদর্শন অপরাধের কিছু নয়। কিন্তু ব্যক্তিত্বের উর্ধ্বে গিয়ে শুধু সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দেওয়া অযৌক্তিক। আমার মতে, সৌন্দর্য ২ প্রকার। ১. বাহ্যিক সৌন্দর্য ২.ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্য।
যদি চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে বাহ্যিক সৌন্দর্যের মধ্যে পড়ে গায়ের রঙ, চেহারার গঠন, চুল ইত্যাদি। আর ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্যের মধ্যে আসে মানুষের আচার-আচরণ, ব্যবহার, কথা বলার ধরন ইত্যাদি। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকে সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ ও আরও সুন্দর হয়ে ওঠার প্রবণতা লক্ষণীয়। সময় বদলেছে, বদলেছে মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি। সেই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পাল্টেছে রূপচর্চার ধরন, মাধ্যম ও উপাদান।
রূপচর্চায় মনোযোগ দিলেও ব্যক্তিত্ব গঠনে মনোযোগী কজন? সবাই চায় শুধু বাইরের রূপ। কিন্তু অভ্যন্তরীণ রূপের কী হবে? বাহ্যিক সৌন্দর্য কদিন থাকে? শেষ অবধি থাকে ব্যক্তিত্ব। কিন্তু বর্তমানে অধিকাংশ নারীই ব্যক্তিত্বের সৌন্দর্য থেকে তার বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে অনেক বেশি সংরক্ষণশীল। তাদের ধারণা, বাহ্যিক সৌন্দর্যই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর কে কার থেকে বেশি সুন্দর, এ নিয়ে চলে রীতিমতো প্রতিযোগিতা।
কে বেশি আকর্ষণীয় করে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে এটাই তাদের কাছে মুখ্য বিষয়। আসলে কি তাই? ব্যক্তিত্ব থেকে বাহ্যিক সৌন্দর্যই কি বেশি প্রয়োজন? একদম না। ব্যক্তিত্বের মধ্যেই একজন নারীর বা একজন মানুষের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। যে নারী সুন্দর করে হাসে তাকে বলে সুহাসিনী। যে নারী মিষ্ট ভাষায় কথা বলে তাকে বলে সুভাষিণী। আর এই গুণগুলো ধরা পড়ে একমাত্র ব্যক্তিত্বের মাধ্যমেই।
অফিস হোক কিংবা বাসা, সুব্যক্তিত্বের অধিকারী একজন নারী সেখানে সবসময়ই এগিয়ে। একজন কর্মকর্তা যদি তার অধীনে কাজ করা বাকি মানুষের কাছে নিজের সুন্দর ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তোলেন,তাহলে সবাই তাকে পছন্দ করে। কিন্তু কেউ যদি সুন্দর চেহারার অধিকারী হয়েও কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে, মানুষ কিন্তু তাকে ভালোভাবে গ্রহণ করে না। যতই থাকুক বাহ্যিক সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব সুন্দর না হলে তার বাহ্যিক সৌন্দর্যের কোনো মূল্য নেই।
বর্তমান সমাজে ব্যক্তিত্বই মুখ্য বিষয়। নিজেকে প্রমাণ করার জন্য রূপচর্চার প্রয়োজন নেই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাছে হার মানে সব। কিন্তু রূপচর্চার বিষয়ের বিরুদ্ধে কিছু বলছি না। শুধু জানান দিচ্ছি রূপচর্চা মুখ্য বিষয় না। ব্যক্তিত্বই মুখ্য। তাই নারীদের ব্যক্তিত্ব গঠনে মনোযোগী হতে হবে। রূপচর্চা কে রাখতে হবে গৌণ হিসেবে।