কৃষ্ণার গোলে ২-০ গোলের লিড বাংলাদেশের
নিঃশব্দ শ্মশানে পরিণত হয়েছে নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়াম। স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে ম্যাচের ৪১ মিনিটেই ২-০ গোলের লিড পেয়ে গেছে বাংলাদেশ।
সাফের ফাইনালের মহারণে স্বাগতিক দর্শকদের যেন এক ঝলকে থমকে দিয়েছেন বাংলাদেশের বদলি ফরোয়ার্ড শামসুন্নাহার জুনিয়র। ফাইনালের ১৪তম মিনিটেই নেপালের জালে বল জড়িয়ে বাংলাদেশকে এনে দিলেন ১-০ গোলের লিড।
দ্বিতীয় গোল্টি এসেছে ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রাণী সরকারের পা থেকে। ম্যাচের ৪১ মিনিটে নেপাল গোলরক্ষককে একা পেয়ে দুর্দান্ত শটে তার মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে লাল-সবুজকে উচ্ছ্বাসে ভাসান কৃষ্ণা।
সাফের চলতি আসরের ফাইনালে দুই দলই দাড়িয়ে ইতিহাসের সামনে দাড়িয়ে। অধরা সাফের শিরোপার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে দুই দল। স্বগতিক নেপালকে হারাতে পারলেই দক্ষিণ এশিয়ার সেরার মুকুট উঠবে সাবিনা-সানজিদাদের মাথায়। দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন ফরোয়ার্ড সিরাত জাহান স্বপ্নার ইঞ্জুরি এই ফাইনালেই কিছুটা শঙ্কা জাগিয়েছিলো কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের মনে। তবে সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের শুরু একাদশে মাঠে নামিয়েছিলেন স্বপ্নাকে।
তবে ১০ মিনিতের বেশি খেলতে পারেননি স্বপ্না। পাইয়ের চোটটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠলে মাত্র ১০ মিনিটেই তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিতে বাধ্য হন ছোটন।। স্বপ্নার সেই উঠে যাওয়াটাই যেন সাপে-বর হয়ে এলো বাংলাদেশের জন্য।
স্বপ্নার বদলি হিসেবে ছোটন মাঠে নামান শামসুন্নাহার জুনিয়রকে। আর মাঠে নেমেই স্বাগতিক নেপালের দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়ে মাত্র ১৪ মিনিটেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন শামসুন্নাহার। মনিকা চাকমার ডান প্রান্ত থেকে করা ক্রস বক্সের মধ্যে থেকে কোনাকুনি প্লেসিংয়ে তিনি বল জড়িয়ে দেন নেপালের জালে।
২০১৬ সালে অল্পের জন্য স্বপ্নভঙ্গ। সেবার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেও ৩-১ গোলে হার ভারতের কাছে। আজ সাবিনা-সানজিদাদের সামনে আরো একটি ফাইনাল। এবার প্রতিপক্ষ ‘হিমালয় কণ্যা’ নেপাল। আবারও রঙ্গিন স্বপ্নে বিভোর লাল সবুজের সোনার মেয়েরা। অধরা সাফের ট্রফি জিতেই দেশে ফিরতে চায় বাংলার বাঘিনীরা। সেই স্বপ্নে যেন শুরুতেই পাল তুলে দিলো শামসুন্নাহার।
নেপালের সিনিয়র দলকে আগে কোনো সময় হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। আজ সেই ইতিহাস পরিবর্তনের ইঙ্গিত ম্যাচের শুরু থেকেই। নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেই সাফের শিরোপা নিজেদের করে নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন গুরু ছোটন।
নেপালের একাদশেও শুরু থেকে নেই তাদের সেরা তারকা সাবিত্রা ভান্ডারী। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে পুরোপুরি ম্যাচ খেলার মতো সামর্থ্য না থাকাতেই হয়তো তাকে মাঠে নামাননি নেপাল কোচ কুমার থাপা।
ফাইনালে বাংলাদেশের একাদশ:
রুপনা চাকমা (গোলরক্ষক), সাবিনা খাতুন, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার, আখি খাতুন, মাসুরা পারভীন, মনিকা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্ডা, কৃষ্ণা রাণী সরকার ও সিরাত জাহান স্বপ্না।
অনন্যা/এআই