আপনার পাঠানো ই-মেইল জলবায়ুকে করছে ক্ষতিগ্রস্ত!
জীবনের প্রয়োজনে আমরা নানান ধরনের কর্মক্ষেত্রে সংযুক্ত। কর্মক্ষেত্রের নানান প্রয়োজনে আমরা ই- মেইল আদান-প্রদান করে থাকি। অফিসিয়াল কাজে কাউকে কোন ই-মেইল পাঠালে, সে হয়তো ধন্যবাদ লিখে একটি রিপ্লাই দিয়ে থাকেন। ছোট্ট এই ই-মেইল টি পরিবেশ ও জলবায়ুর জন্য কার্বন নিঃসরণের মাধ্যমে ক্ষতিকর হয়ে উঠছে।
ধন্যবাদ লিখে পাঠানো এই অপ্রয়োজনীয় ই-মেইলটি প্রভাব ফেলছে কার্বন ফুট প্রিন্টে। কথা হচ্ছে কার্বন ফুট প্রিন্ট কি? কার্বন ফুট প্রিন্ট হচ্ছে কোন একটি এলাকা বা জনগোষ্ঠীতে উৎস, সংগ্রাহক বা ধারক বিবেচনায় নিঃসৃত হওয়া মোট কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও মিথেনের সমষ্টি।
বর্তমান বিশ্বে অফিসিয়াল যোগাযোগে ই-মেইল একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে প্রয়োজনের পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় ই-মেইলের সংখ্যাও বাড়ছে দিনদিন। এই অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল যে কার্বন ফুট প্রিন্টের সাথে সংযোগ স্থাপন করছে সে সম্পর্কে এখনো মানুষ অনেকটা অসচেতন।
গতবছর যুক্তরাজ্যে একটি এনার্জি রিটেইল কোম্পানি 'ওভো এনার্জি' এ বিষয়টির উপর গবেষণা চালান। তারা জানান, যুক্তরাজ্যের প্রায় ৭২ শতাংশ মানুষের এ বিষয়ে ধারণা নেই। অথচ প্রতিদিন যদি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা একটি করে অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল কম পাঠান তাহলে বছরে ১৬,৪৩৩ টন কার্বন সাশ্রয় করা সম্ভব। গবেষণাটিতে দেখানো হয়, এই অসচেতনতার কারণে প্রতিদিন ৬৪ মিলিয়ন অপ্রয়োজনীয় ই-মেইল পাঠানো হয়। যা থেকে বছরে ২৩,৪৭৫ টন কার্বন যুক্তরাজ্যের ফুট প্রিন্টে যোগ হচ্ছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ই-মেইল থেকে কিভাবে কার্বন নিঃসৃত হয়?
ই-মেইল পাঠাতে বা গ্রহণ করতে আমাদেরকে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকতে হয়। ইন্টারনেট সংযোগের জন্য বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন। এছাড়া একটি ই-মেইল পাঠানোর পর গ্রাহক অব্ধি পৌঁছাতে ই-মেইলটি প্রতিটা সার্ভারে কিছু সময়ের জন্য স্টোর বা জমা থাকে। সেখানেও বিদ্যুৎশক্তির প্রয়োজন। আর বিদ্যুৎ থেকে কার্বন নিঃসরণ ঘটে। অনেক সময় আমরা ই-মেইলের মাধ্যমে মেসেজের পরিবর্তে কোন ছবি বা কোন ফাইলের বিভিন্ন ধরনের কপি পাঠিয়ে থাকি। সেক্ষেত্রে ফাইল বা ইমেজ বেশি জায়গা দখল করে। এতে তুলনামূলক ভাবে বেশি বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন হয়। আর বেশি বিদ্যুৎ মানে বেশি কার্বন নিঃসরণ।
এভাবেই একটি ছোট্ট ই-মেইলের মাধ্যমে কার্বন ফুট প্রিন্টে প্রভাব পড়ে। যা জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও বিরূপ প্রভাব ফেলে।
তবে ইন্টারনেট বা প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা ভালো ভালো কাজও করি। সেক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকলে এমন ক্ষতির হাত থেকে বাঁচা সম্ভব।