মহামারীতে ব্যবসায় বাজিমাত করা একদল নারী উদ্যোক্তা!
করোনা মহামারী থমকে দিয়েছিল পুরো বিশ্ব। কিন্তু তার সাথে তাল মিলিয়ে থেমে থাকেনি অনেকেই। উপার্জন হারিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে তৈরি করেছেন নিজস্ব প্লাটফর্ম। আজ কথা হচ্ছে তেমনি একদল নারীদের নিয়ে। যারা নিজের তৈরি পণ্য ফেইসবুকের মাধ্যমে বিক্রি করে রীতিমতো বাজিমাত করেছেন।
ঢাকার পূর্বাচলে শতাধিক নারী উদ্যোক্তার পণ্য নিয়ে শুরু হওয়া দুই দিনের মেলায় এমন অনেক সফলতার গল্প শোনালেন উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম বা উইয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা। পূর্বাচল ক্লাব প্রাঙ্গণে ‘উই কালার ফেস্ট’ নামে এই মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন নারী উদ্যোক্তারা। প্রদর্শন করেন তাদের পণ্যও।
উই কালার ফেস্টে যেসব নারী উদ্যোক্তা অংশ নিয়েছেন গত এক বছরে, তাদের সবাই ছোটবড় সাফল্যের সাক্ষী হয়েছেন। কেউ নিজ হাতে তৈরি পণ্য, কেউ আবার দেশীয় পণ্যের বিপণন করে হয়েছেন লাভবান। সখের বসে শুরু করা কাজই এনে দিয়েছে সচ্ছলতা। তাই অনেকেই এই পথটিকেই বেছে নিয়েছেন ভবিষ্যত নির্মাণের উপায় হিসেবে।
দেশীয় পণ্য বিপণন ও ব্যবসা উদ্যোগের একটি সামাজিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান 'উই'। এই পেইজে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সমন্বয় করে দেওয়ার কাজটি করা হয়, কীভাবে পণ্যের ব্র্যান্ডিং করা যায়, ব্যবসার প্রসার ঘটানো যায় সে বিষয়ে পরামর্শও দেওয়া হয়। কোভিড-১৯ শুরুর আগে ফোরামের সদস্য ছিল ৩০ হাজার। মাত্র চার মাসে জুনে তা বেড়ে তিন লাখ ছাড়িয়ে যায়।
প্রযুক্তি উদ্যোক্তা নাসিমা আক্তার নিশা ২০১৭ সালে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এই প্ল্যাটফর্ম চালু করলেও পুরুষদের জন্যও এখন এই পেইজটি উন্মুক্ত করা হয়েছে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাসিমা বলেন, “সাড়ে ৩০০ নারী উদ্যোক্তা লাখ টাকার পণ্য বিক্রির মাইলফলক ছুঁয়ে গেছেন। এর মধ্যে ১০ জনেরও বেশি উদ্যোক্তা ১০ লাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি করেছেন। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে দেশীয় পণ্য এখন বাইরের দেশেও রপ্তানি শুরু হয়েছে।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, “এই উদ্যোগে যুক্ত হয়ে ৩৫০ নারী লাখপতি হয়েছেন। কয়েকজন হয়েছেন মিলিয়নিয়ার- এটাই হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন।”
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, "নারী উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম উই আজকে ১০ লাখ ক্রেতা-বিক্রেতার ঠিকানা। ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল কাজে লাগিয়ে দেশে উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থানের পরিমাণ প্রত্যাশার চেয়েও বেশি হচ্ছে।"
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, "যে কোন সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন এগিয়ে থাকার সূচক। এজন্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির সবচেয়ে টেকসই পথ। উই যেটা করছে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ব্যবসা-বাণিজ্য নারীর ক্ষমতায়নের পথ সুগম করে। "