যোগ্য মুরব্বি ছাড়া সংসার লক্ষীছাড়া
আমি হচ্ছি আমার নানাভাইর ছোট কন্যার বড় মেয়ে। নানাভাই যেখানে যেতেন আমায় সাথে করে নিয়ে যেতেন। তার মতো আন্তরিক ও আলাপি মানুষ আমি আর দেখিনি, কিন্তু অনিয়ম তিনি কখনো সহ্য করতে পারতেন না। সে-ক্ষেত্রে কাউকেই তিনি ছাড় দিতেন না। পথ চলার সময় সবার সাথে তিনি কথা বলতেন, খোঁজখবর নিতেন আবার কারও ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিতেন, বুঝিয়ে বলতেন, শাসন করতেন। বিশ্বভূবন ও জীবন-সংসারে তার ছিল ব্যতিক্রমী দর্শন। তার একটা কথা আমার খুব মনে পড়ে, কারণ, এ কথাটি অনেকবার তাকে বলতে শুনেছি—তিনি বলতেন, মুরব্বি ছাড়া সংসার হলো লক্ষ্মীছাড়া। সম্প্রতি এ কথাটা গভীরভাবে ভাবছি। বর্তমানে সমাজে পারিবারিক সম্পর্কের যে অসুস্থতা চলছে—এই লক্ষ্মীর অভাবে—মানে, সঠিক পরিচালকের অভাবে।
মুরব্বিরা হচ্ছেন—সমাজ, পরিবারের সুতো। অংসখ্য মুক্তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকলে, তার সৌন্দর্য বা সঠিক সংরক্ষণ যেমন হয় না, তেমনি পরিবারে যোগ্য মুরব্বি না থাকলে যথাযথ উন্নতিও হয় না—সংসারের। একটা মেয়ে যখন সংসার-জীবনে পদার্পণ করে, তখন তার আবার নতুন জন্ম হয়, আর এর সঠিক লালন-পালনের জন্য প্রয়োজন যোগ্য পরিচালক। স্বামীর সাথে তার থাকে আদরের সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কের মধ্যে একটা পর্দা থেকেই যায়। কোনো একটা সময় হয়তো একে-অন্যকে পথ দেখায়, কিন্তু শ্বশুর-শাশুড়ি যেভাবে গড়ে ওঠাতে পারে, সে-রকমটি পরস্পরের পক্ষে কখনো সম্ভব নয়।
আর যে সংসারে মা-বাবা থাকেন, সেখানে বিশেষ এক আবহাওয়া থাকে—একটা শান্ত-শীতল দান-প্রতিদান থাকে। আপনার স্ত্রীর কোনো ব্যাবহারে বা কাজে আপনি মনোক্ষুন্ন হয়েছেন, বাসায় এসে দেখলেন—সে আপনার মা-বাবার সাথে ভালো সময় কাটাচ্ছে। মুহূর্তে আপনার সকল অসন্তোষ জল হয়ে যাবে—এটাই স্বাভাবিক। আপনি চাইলেও যা নয়, তা করতে পারবেন না—চক্ষুলজ্জায়। স্বাধীনভাবে যেমন বউকে আলিঙ্গন করতে পারবেন না, তেমনি অকথ্য ভাষায় তাকে বকতে বা তার সাথে খারাপ আচরণও করতে পারবেন না। ফলে সম্পর্কের মধ্যে একটা ভারসাম্য তৈরি হবে, যা একসময় স্থায়ী হয়ে ভবিষ্যতকে করবে মশৃণ ও সুখময়—এমনকি যে বোঝাপড়ার অভাবে সম্পর্কগুলো ভেঙে যায়, তার সংখ্যাও কমে আসবে।
মোহ যেমন সাময়িক, তেমনি বিয়ের পরে প্রথম স্বাধীনভাবে চলাও সাময়িক। সময়ে অবশ্যই ঘোর কেটে যায়, তখন শুরু হয় স্বাধীন কলহ। আর সন্তানের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। অনেক ব্যাপারে একটা বাচ্চা তার দাদা-দাদির কাছ থেকে যা শেখে, কখনো তা সম্ভব নয় মা-বাবার কাছ থেকে শেখা। প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি সন্তানের জন্য তার মা হয়, তবে সেখানের প্রধান শিক্ষক হলেন মুরব্বি। মার সাথে দাদা-দাদির সম্পর্কের ভালো-মন্দ দেখে সন্তান যে শিক্ষা লাভ করে, তা কোনো প্রতিষ্ঠান তাকে দিতে পারবে না। সন্তানকে বড় স্কুলে ভর্তি করার চেয়ে জরুরি, তাকে বড় একটা সংসারের সদস্য করা।
একটা মেয়ে বউ হয়ে এলে তাকে বলা কখনো উচিৎ নয় যে, তুমি মেয়ের মতো থাকবে। বরং শ্বশুর-শাশুড়ীর উচিত নিজেদের বাবা-মার ভূমিকায় দাঁড় করানোর চেষ্টা করা। বউকে বউয়ের যায়গায় রেখে মেয়ের মতো তৈরি করতে হয়, সময়ে সে নিজেই মেয়ে হয়ে ওঠে। আর মেয়ে বলে তাকে জানান দিয়ে তার কাছে বউয়ের আচরণ আশা করা খুব বোকামি। বরং সে জানুক: আমি এ বাড়ির বউ—আমাকে এভাবে চলতে হবে। আর আপনি তার দোষ-গুণ-মমতা সবটাই—সহজভাবে গ্রহণ করুন, তবেই সম্পর্ক ঝরনা মতো হবে।
ছেলেদের নীরব ভূমিকা যুগে-যুগে সংসারে কলহ বৃদ্ধি করেছে। একসময় বউ নির্যাতিত হয়েছে—এখন উচ্ছন্নেও যাচ্ছে। কিন্তু অনেক কিছু মানাতে পারেন একটু ধৈর্য নিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে। মা ও স্ত্রী ছেলেদের অস্তিত্বের সাথে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত—এদের অবস্থানের পরিমাপ না করে যথাস্থানে রেখে যত্ন নেওয়া উচিত। স্ত্রীকে মার সম্মানের বিষয়ে আর মাকে স্ত্রীর স্নেহের বিষয়ে চাপ প্রয়োগ না করে কার্যক্রম দিয়েই বুঝানো শ্রেয়।
একটা সন্তান জন্মের পরে তার দাদা-দাদির প্রয়োজন যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা ইদানীং খুব দেরি করে বুঝি—অনেক সময় বুঝিও না। শুধু সহায়তা নয়, এই মধুর স্নেহ যে পায় না, সে সত্যিই হতভাগা। বর্তমানে এমন হতভাগাদের সংখ্যা অগুনতি। একা বেড়ে ওঠা সন্তানরা নিজের মতো করে জগত সাজায়, একটা স্বার্থপর জগত, যেখানে দিন-দিন মা-ববার অস্তিত্ব থাকে না। যৌথ সংসারে পারস্পরিক ভালোবাসা, খুনসুটি—এগুলো অমূল্য সম্পদ।
এমন অনেক পরিবার আছে যে, কোনো জিনিস সন্তানদের মধ্যে সমভাবে ভাগ করে দেয়—এতে সাময়িকভাবে সন্তান প্রফুল্ল হলেও ভবিষ্যতে স্বার্থপর হয়ে গড়ে উঠবে। সে ভাববে: পৃথিবীর সবকিছুতেই তার সমভাগ রয়েছে—আদতে পৃথিবী তো এমন নয়! এমন ভাবনায় সে হোঁচট খাবে বারবার। তাকে ছাড় দিতে শেখান, কখনো তার সামনে ছোটকে দিন বা বড়কে দিন—মুরব্বিকে দিন, বাবাকে দিন, প্রতিবেশীকে দিন। না পাওয়ার কষ্ট নিতে শেখান। কখনো-ব তাকে দিয়ে সবাইকে সমভাগে ভাগ করে দিতে দিন। সে তাহলে অবশ্যই সমৃদ্ধ হবে। ভবিষ্যতে অল্পতে ভেঙেপড়া বা হীন্মন্যতায় ভুগবে না। সন্তানকে দাদা-দাদি, নানা-নানিদের সাথে সময় কাটাতে দিন, তারা বিশাল মনের অধিকারী হবে।
নব্বই দশকের শেষের দিকে আমি দু-বছর বয়েসী—তখনও দাদুর সাথেই ঘুমিয়েছি। জীবনবোধ আর মানবিকতা— সবটাই তার কাছ থেকেই প্রাপ্ত। আমি চোখ বন্ধ করলেই তার হাসিমাখা মুখখানা দেখতে পাই। আমি কোথাও কথা বলতে বসলেই তিনি চলে আসেন। আমার সম্পূর্ণ শৈশব জুড়েই রয়েছেন তিনি। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, আমার দেখা শ্রেষ্ঠ নারী তিনি। নিজেকে আমি ধনী মনে করি এই কারণে যে, এমন মহৎ একজন মানুষের নিখাঁদ ভালোবাসা পেয়ে আমি বড় হয়েছি। আমি তাকে নিজের অর্ধেক খাবার ভাগ করে অনাহারীকে দিতে দেখেছি, রাতের খাওয়া-শেষে অবশিষ্ট খাবারটুকু বাড়ির ঘরে-ঘরে ঘুরে, কার খাওয়া হয়নি তাকে দিতে দেখেছি। তিনি ছিলেন ধর্মপ্রাণ কিন্তু ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কখনোই তাকে করতে দেখিনি। কোনো ধর্মের প্রতি বিদ্বেষও দেখিনি তার মধ্যে। পহেলা বৈশাখকে যথাযথভাবে উদযাপন করতে দেখেছি। পুজোর মেলায় আমাদের কখনো যেতে নিষেধ করেননি। আশ্বিন মাসের শেষের দিনে দাদাভাইকে দিয়ে ছোট্ট ঘর করে দিতেন গাশ্মী করার জন্য। হেমন্তের নতুন ধানের পিঠে-পায়েস করতেন মা-চাচিরা। বাড়ির সব বাচ্চারা মিলে নানা রকম রান্না করা হতো—বেশির ভাগই আশপাশ থেকে সংগ্রহ করা হতো। সর্বনিম্ন সাত রকম রান্না করা হতো গাশ্মীতে। হলুদ, নিমসহ বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছের পাতা সংগ্রহ করে বেটে রাখা হতো। ভোররাতে কাক ডাকার আগে সবাই পাতাবাটা দিয়ে গোসল করে রান্না করা খাবার খেতাম। তারপর হাতে পরা হতো মেহেদি। যেহেতু আমরা গ্রামের বাড়ি থাকতাম না, এসব জোগাড় করে দিতেন দাদু। তিনি চাইতেন: আমরা আনন্দ করি—এসবই ছিল তার সুখ।
দাদাভাই বয়স্ক মানুষ ছিলেন, নিজেই হাঁটতে পারতেন না, অথচ আমার ভাইকে ঘাড়ে করে নিয়ে মেলায় যেতেন। আমাদের ঘোরাফেরা, কেনাকাটা শেষ হলে তিনি আবার আমাদের নিয়ে আসতেন। দাদু তালিমে যেতেন আমায় নিয়ে, অত ছোট সময় ধর্ম সম্পর্কে অনেক কিছু জানার সুযোগ আমার এখান থেকে হয়েছিল। সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবাসতে যেমন দাদুর কাছ থেকে শিখেছি, তেমনি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না-করতে এবং ধর্মে ভেদাভেদ না করে মানুষকে মানুষ হিসেবে জানাও তার কাছে শিখেছি। তাকে ধারণ করতে আমি পারিনি, তবে যতটুকু শিখেছি—সম্পূর্ণ তারই দান।
দুই ঈদ, বর্ষা, শীত, গ্রীষ্মের ছুটিতে পরিবারের সবাই আমরা একত্রিত৷ হতাম—এক বেলায় ৫০/৬০ জন মানুষের খাবার রান্না হতো বাড়িতে। মা-চাচি-ফুপুরা রান্না করতেন, আর আমরা ভাই-বোনরা লাগামহীন ছুটে বেড়াতাম। সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার কাহিনি নিয়ে আলোচনা ছাড়াও গান, নাচের রেওয়াজ হতো—হতো নৌকায় ঘোরাঘুরিও। পেঁয়াজ, শরষেফুলের সাথে মাখামাখি, আরো কত কী!
সন্ধ্যা হলেই উঠোন-বৈঠক। বড় ভাইয়া গল্প শুরু করতেন, আমরা সবাই নির্বাক হয়ে শুনে চলছি—দু-মিনিটে যে-গল্প শেষ করা যায়, দু-ঘন্টায়ও শেষ হতো না সে-গল্প, ধারাবাহিকভাবে গল্প চলত—পরের দিনের জন্য রেখে দেওয়া হতো বাকি অংশ। রাতের খাওয়া শেষ হওয়ামাত্র আবার শুরু হতো আড্ডা—এবার সবাই মিলে গানের ডালি খেলা হতো, নয়তো লটারি করা হতো—নাটক, গান, গল্প, কবিতা, অভিনয়, বক্তৃতার। রাত শেষ হয়ে যেত— আসর শেষ হতো না। কোনো কোনো দিন সারা রাত সিনেমা দেখা হতো সিডিতে—একটা শেষ হবে তো অন্য একটা শুরু। ছুটি শেষ হয়ে আসলে সে কি কান্না সবার— চিঠির পর চিঠি লেখা হতো—সবাইকে।
আমাদের বাচ্চারা কী পাবে এমন ঝলমলে সময়? এই যে তারা পাচ্ছে না বা পাবে না—এর জন্য দায়ী কে? যদি নিজেকে প্রশ্ন করেন—এর জন্য দায়ী আপনি-আমি-আমরাই। শিক্ষাব্যবস্থা যতই পরিবর্তন হোক, আমাদের নিজ-নিজ মানসিকতা না বদলালে কোনকিছু সুউন্নত হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করছে—আপনি মুখে বলছেন, অথচ আমরাই তাকে মদদ দিচ্ছি সে-বাণিজ্যে অংশ নিয়ে। আপনার বাচ্চাকে পড়াতেই হবে নামি-দামি প্রতিষ্ঠানে! আপনি নিশ্চয়ই জানেন: বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মনীষী যাঁরা, তাঁদের বেশির ভাগেরই তেমন কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না বললেই চলে—তবু আপনি প্রতিষ্ঠানের পেছনে ছুটবেন, একই সময় তার সমালোচনাও করবেন—সে-ব্যবস্থার—তা তো হতে পারে না।
আমাদের শৈশব ধর্ম বা জাতের গণ্ডিতে আবদ্ধ ছিল না। সে-সময়ে আমাদেরকে ভালো কাজ আর ভালোবাসা শেখানো হয়েছে। একই ক্লাসে ডিসির আর মুচির সন্তান পড়াশোনা করেছে। এখনকার মায়েরা কি পারবেন এটা মানতে? তারা চান না: তাদের সন্তান ভেদাভেদ না শিখে আদর্শ মানুষ হবে—তাহলে এমন ভাবনা হাস্যকর বটে। আমরা চাই: আমাদের সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকার হোক—কখনো কি চাই যে, সন্তানটি মানুষ হোক?! আর এ জন্যই পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ভবিষ্যতের জন্য আমরা একটা মানুষশূন্য পৃথিবী তৈরি করছি—আগত-অনাগত প্রজন্মের জন্য!
হ্যাঁ, অনেকে ভাবতে পারেন: আমি আধুনিক সময়ে থেকেও কিভাবে প্রাচীন ভাবনায় কথা বলছি? আসলে বিষয়টি সময়ের নয়, অনুভবের, সৌন্দর্যের। জন্মসূত্রেই মানুষ আনন্দে হাসে এবং কষ্টে কাঁদে। আর, মানুষ বরাবরই সুন্দরের পূজারীও। তাহলে সম্পর্কে ক্ষেত্রে আধুনিকতার নামে এই দূরত্বের সৃষ্টি কেন হবে! যান্ত্রিকতার এই সময়ে আমাদের যাপনে পরিবর্তন হয়েছে—অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে সঠিক ব্যবহারে যন্ত্র আমাদের কাছে থাকার প্রক্রিয়াও দিয়েছে। কিন্তু আমরা পারছি না কানেক্টেড থাকতে। কাজের জন্য, সাফল্যের জন্য আমাদের যুদ্ধ করতে হয়। থাকতে হয় পরিবার থেকে দূরে, কিন্তু দিনে দু-মিনিট সময় বের করে কি দূরে থাকা মা-বাবার সাথে কানেক্টেড থাকতে পারি না! সন্তানদের কি বলতে পারি না: দাদা-দাদির সাথে যোগাযোগ রাখতে! এতে তারাও ভাববে আমাদের আরও একটা জগত রয়েছে। বরং আমরা পরিবারের চাওয়া, পাওয়া বা না-পাওয়াকে সমস্যা হিসেবে মনে করে বড় যন্ত্রণায় নিমজ্জিত হচ্ছি অজান্তেই—বছরে একবারও পরিবারের সাথে সময় কাটাতে সুযোগ হয় না আমাদের!
বাচ্চাদেরকে সমাজবিজ্ঞানে পরিবারের সংজ্ঞা হিসেবে শেখানে হয়—মা, বাবা, ভাই, বোন নিয়ে তৈরি হয় পরিবার। এখানে দাদা-দাদির অস্তিত্ব কোথায়—সে-সন্তান বড় হয়ে কী-করে উপলব্ধি করবে শেকড়ের টান?!
বড় অ্যাপার্টমেন্ট, নামি স্কুলের গাম্ভীর্যে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি—আমরা এবং আমাদের সন্তানরা।
মেয়ের বিয়ে দিতে গেলে খুঁজি কোন ছেলে তার মা-বাবার পরিবার থেকে দূরে থাকে—একান্তে কে মেয়েকে তার সবটুকু দিয়ে সুখী রাখবে। এতে করে মেয়েরাও বিয়ের আগে থেকে একই মানসিকতার প্রস্তুতি নিয়ে রাখ। সুখ কি এভাবে মেলে?! যদি তা-ই হতো, তাহলে তো ডিভোর্সের সংখ্যা দিন-দিন এত বাড়ত না—ছেলে-মেয়েরা মাদকাসক্ত হতো না—এতটা অবক্ষয় হতো না সমাজের।
সুখের জন্য আমাদের ফিরে যেতে হয় অতীত স্মৃতিতে—আর, আমাদের সন্তানদের যেহেতু সে-স্মৃতি সমৃদ্ধ হয় না, তাই তারা ফিরে যেতে চাইবে অন্ধকারে। সভ্যতাকে ছেড়ে যদি তাকে আদিম অন্ধ যুগকেই খুঁজতে হয়, তাহলে আর কী হবে—এই সভ্যতা আর আধুনিকতা দিয়ে?!