Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীর নিরাপত্তা নেই, ধর্ষকের আছে!

দেশ যতই আধুনিক হোক না কেন, নারীর নিরাপত্তা এখনো পদে পদে বিঘ্নিত। শহরের আনাচকানাচে রোড লাইটের সংখ্যা বাড়িয়েও ধর্ষণের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। বরং ধর্ষণের পরও হাজারটা দোষ চাপানো হয় ধর্ষিতার ঘাড়ে।

 

সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচনায় আসে গোপালগঞ্জে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত বুধবার রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। 

 

নারীর নিরাপত্তা নেই, ধর্ষকের আছে!

 

জানা গেছে, রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র ও এক ছাত্রী গোপালগঞ্জ শহরের হেলিপ্যাড থেকে নবীনবাগের দিকে ফিরছিলেন। এ সময় চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত তাঁদের গতি রোধ করে। দুর্বৃত্তরা ছাত্রটিকে মারপিট করে ওই ছাত্রীকে পাশের নির্মাণাধীন জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ ভবনে নিয়ে ধর্ষণ করে। 

 

ধর্ষণের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ শুরু করেন। অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে উত্তাল হয় পুরো এলাকা। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা জেলার ঘোনাপাড়া এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। প্রতিবাদের জোয়ার দেখা যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়েও। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষকদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে কর্মসূচি দেখা যায়। 

 

নারীর নিরাপত্তা নেই, ধর্ষকের আছে!

 

কিন্তু প্রশাসন যেন হাঁটছিল কচ্ছপগতিতে। এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব। শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে গত শুক্রবার গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এ পরিস্থিতির মধ্যেও বিকৃত মস্তিষ্কের কিছু মানুষকে দেখা গেছে, বিকৃত কিছু মতামত প্রকাশ করতে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় অনেকেই বলছে এলাকায় ভার্সিটি গড়েওঠায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। রাত ৮টার পর ওই ছাত্রীর ঘরের বাইরে থাকাকেই প্রধান সমস্যা মনে করছে স্থানীয় অনেকে। আর এভাবেই পার পেয়ে যাচ্ছে ধর্ষক। 

 

শুধু স্থানীয়দের ভাষায় নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এমন বহু নেতিবাচক মন্তব্য দেখা গেছে। কেউ বলছে, 'এত রাতে মেয়েদের বাসার বাইরে থাকা ঠিক না।'  কারো ভাষায়, 'রাত ৯টার পর ঘুরতে যায়, এটা কোনো ছাত্রীর বৈশিষ্ট্য?' কেউ কেউ তুলোধোনা করছে পরিবারকে। বলছেন, 'ছেলেদের দোষ নেই, দোষ পরিবারের। কেমন পরিবারের মেয়ে, রাত সাড়ে ৯টার সময় বন্ধুর সঙ্গে ঘুরে বেড়ায়!'

 

নারীর নিরাপত্তা নেই, ধর্ষকের আছে!

 

মানে মোদ্দা কথা দাঁড়াল, সব দোষ ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর। রাত ৯টার পর কোনো মেয়ে ঘরের বাইরে থাকা মানে তাকে ধর্ষণের অনুমতি-সমাজ এটা কী করে মনে করল! এক দিকে, ধর্ষককে সমাজের এমন আস্কারা। অন্য দিকে, প্রশাসনের কচ্ছপগতিতে এগোনো,  দিন শেষে আরো অনিরাপদ হয়ে পড়ে ধর্ষিতার জীবন। অথচ আরো নিরাপদ হয়ে যায় ধর্ষকের জীবন!

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ