‘ওমিক্রন’ আতঙ্কে বিশ্ববাসী!
প্রায় দু'বছর পর যখন বিশ্বজুড়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছিলো করোনা পরিস্থিতি, তখন আবারও নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে চলছে দক্ষিণ আফ্রিকাতে সদ্য আবিষ্কার হওয়া করোনাভাইরাস-এর একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট বা প্রজাতি 'ওমিক্রন'।
বিশেষজ্ঞদের মতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এর থেকেও ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আরও বেশি সংক্রামক এবং আরও দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনার এই নতুন প্রজাতি। আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত হয়েছে ভাইরাসের এই নতুন রূপ।
তারপর হংকং এবং ইজরায়েলে আফ্রিকা ফেরত পর্যটকদের শরীরে ওমিক্রনের উপস্থিতি মিলেছে। এই ভ্যারিয়েন্টটি উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে ইতিমধ্যেই সব দেশকে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই রূপ বা ভ্যারিয়েন্টকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
এখনও ভাইরাসের এই নতুন রূপের ভয়াবহতা সম্পর্কে পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি। কিন্তু জিনের বিন্যাসের একাধিক বার বদল ঘটানোয় মনে করা হচ্ছে করোনার এই রূপ বিশ্বজুড়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এর থেকেও ভয়ঙ্কর এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। আরও বেশি সংক্রামক এবং আরও দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়তে পারে করোনার এই নতুন প্রজাতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আগে যাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, এ রকম ব্যক্তিরা ফের খুব সহজেই আক্রান্ত হতে পারে ওমিক্রনে।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা এবং অন্য রূপের তুলনায় ওমিক্রন বেশি সংক্রামক কি না, তা এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার না হলেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা এই রূপকে ধরতে সক্ষম বলে জানিয়েছে হু।
কোভিডের বিভিন্ন টিকার উপর এই ভাইরাসের প্রভাব কতটা, তা জানার জন্য কাজ চলছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
করোনার নতুন রূপ ওমিক্রন আরও জটিল রোগ ঘটাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। করোনার অন্য রূপে আক্রান্ত হলে যে সব উপসর্গ দেখা যায়, তার থেকে আলাদা কোনও উপসর্গ ওমিক্রন ডেকে আনছে কি না, তাও এখনও স্পষ্ট নয়।
চিকিৎসকদের মতে ওমিক্রনের কিছু লক্ষণ রয়েছে যা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যদিও আক্রান্তদের মধ্যে ওমিক্রনের লক্ষণ হালকা এবং কিছু রোগী হাসপাতালে ভর্তি না হয়েই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এ জায়গাটিকেই ভয়ের কারণ হিসেবে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু এর মতে, এই প্রজাতির ক্ষেত্রে উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও বতসোয়ানা, ইসরায়েল, বেলজিয়াম ও হংকংয়ের ১০৪টি নমুনায় এই ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। আর তাই এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে সতর্ক অবস্থা নেওয়া হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বাংলাদেশেও ইতোমধ্যেই সতর্কতা হিসেবে আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। একইসঙ্গে দেশের সব বিমান ও স্থলবন্দর ও অন্যান্য প্রবেশপথে স্ক্রিনিং বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।