Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলার মেয়েদের জয়ের অন্তরালে!

এশিয়াকাপের সেইদিনের কথা আজও সকলের মনে আছে। সেইদিন অনাবদ্য এক ম্যাচ খেলে বাংলাদেশকে তীরে ভিড়িয়ে প্রথমবার কোন শিরোপা এনে দিয়েছিল নারীরা। খেলার মাধ্যমে দেশের জনগণের মন জিতে নিয়েছে বারবার। বিভিন্ন অর্জন থাকা সত্ত্বেও আশানুরূপ কোন স্পন্সর পাচ্ছেন নাহ তারা। দেশের ছেলেদের ক্রিকেটের নৌকা যেখানে টালমাটাল সেখানে নারীরা এক অসাধারণ ম্যাচ খেলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ছিনিয়ে নিলো এক রাজকীয় জয়।

 

মাহমুদউল্লাহ-মুস্তাফিজরা যা পারেননি, সেটিই করে দেখালেন সালমা-নিগার সুলতানারা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম ম্যাচেই রোববার (২১ নভেম্বর) পাকিস্তান নারী দলের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলার মেয়েরা।জিম্বাবুয়েতে দারুণ সময় কাটছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগে স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে জিতে প্রস্তুতিটা ভালোভাবেই সেরেছিলেন বাংলার বাঘিনীরা। এবার তার সুফল পেলেন হাতেনাতেই।

 

রোববার (২১ নভেম্বর) হারারেতে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা। ৪৯ রানের মধ্যেই পাঁচ পাঁচটি উইকেট শিকার করে নিজেদের সিদ্ধান্ত যে ঠিক ছিল সেটিরই প্রমাণ দেন বাংলার মেয়েরা। যদিও পাক ব্যাটার নিদা দার আর আলিয়া রিয়াজের ব্যাটে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ পায়। নিদা দার ১১১ বলে ৮৭ এবং আলিয়া ৮২ বলে ৬১ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের হয়ে ঋতু মণি ও নাহিদা আক্তার দুটি করে এবং সালমা খাতুন ও রুমানা আহমেদ একটি করে উইকেট লাভ করেন।

 

এদিকে, ২০২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ১০ রানের মাথায় ওপেনার মুর্শিদা খাতুন সাজঘরে ফেরেন। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ফারজানা আর শারমিন মিলে ৭০ রানের সময়োপযোগী ইনিংস খেলেন। এরপর নিয়মিত বিরতিতে বাংলাদেশ উইকেট হারালেও শেষ দিকে অভিজ্ঞ সালমা এবং রুমানার ব্যাটে ভর করে ৩ ‍উইকেট ও ২ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় দল। 

 

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস রুমানার। তিনি ৪০ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন। এছাড়া পাকিস্তানের পক্ষে ওমাইমা সোহাইল এবং নাসরা সান্ধু দুটি করে উইকেট নেন।নিদা দার, আনাম আমিন এবং ফাতিমা সানা একটি করে উইকেট শিকার করেন।পাকিস্তান ছাড়াও গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের অন্য তিন প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও জিম্বাবুয়ে। ২৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র, ২৫ নভেম্বর থাইল্যান্ড ও ২৯ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের মেয়েরা।১০ দলের এই বাছাইয়ে দুই গ্রুপের সেরা তিন দলকে নিয়ে হবে সুপার সিক্স রাউন্ড। সেখান থেকে সেরা তিন দল মূল আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে।

 

ইতোমধ্যে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।নারী দলের এমন একটি জয় কোন সাধারণ কিছু ছিল নাহ। দেশের ক্রিকেটের এই  অবস্থায় এমন একটি জয় নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য।যেখানে অন্য সকল দেশের নারীদলের একের পর এক সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয় সেখানে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ উদ্দেশ্যেতে রওনা ছিল খুবি সাধারণভাবে। 

নারীদের দলটিতে তাদের বেতন, জিমনেশিয়াম সুবিধা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের অবজ্ঞা করে আসা হচ্ছে। নারীদেরকে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে নাহ যেটা তাদের প্রাপ্য। তারপরও ক্রিকেট দলটি একেরপর এক বিশ্বদরবারে নিজেদেরকে প্রমাণ করে আসছে। তারা যেন নিজেদেরকে প্রস্তুত করে রেখেছে বিশ্বমঞ্চে বাংলার পতাকা উঁচিয়ে রাখার জন্য।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ