ছবির ন্যায় সড়ক
স্থাপত্য শিল্পের কথা চিন্তা করলেই আমরা ভাবি যেন আকাশচুম্বী দালানকোঠা কিংবা দীর্ঘ কোন সেতুর কথা। কিন্তু সারাদিন আমরা যে রাস্তায় চলাচল করি, সেটিও যে স্থাপত্য শিল্পের নিদর্শন হতে পারে সে কথা ভেবেছি কখনো? আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম গুলোতে অনেক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিশ্বের ভ্রমণ-প্রেমী মানুষের পছন্দে থাকা দৃষ্টিনন্দন কিছু সড়কের নাম। যেখানে হাঁটার সময় আপনিও হয়তো গেয়ে উঠবেন, ‘এই পথ যদি না শেষ হয়…'
‘প্যারিস রোড’ বাংলাদেশ
হাজারো শিক্ষার্থীদের গান, গল্প, প্রেম, ভালোবাসা ও নানা আন্দোলন জড়ানো স্মৃতির নাম ‘প্যারিস রোড’। ফ্রান্সের নয়, এটা বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ‘প্যারিস রোড’। দু’ধারের সুউচ্চ গগণশিরিষ গাছ ও পিচঢালা পথ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য। যা ৫০ বছরের পুরনো এই ‘প্যারিস রোড'।
দ্য ফিলোসফার্স ওয়াক, জাপান
কিয়োটোর ছবির মত সুন্দর এই সড়কের এক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে স্বচ্ছ পানির খাল আর অন্যপাশে জাপানের জাতীয় ফুল – সাকুরার সারি সারি গাছ। বিশেষ প্রজাতির এই চেরি ফুল ফোঁটার মৌসুমে সড়কের চারপাশের সৌন্দর্য দেখে আপনিও দার্শনিক হয়ে যেতে পারেন। এপ্রিলের শুরু থেকে এই চেরি ব্লসম বা ফুল ফোঁটার মৌসুম শুরু হয়। জাপানি দার্শনিক নিশিদা কিতারো এখানে বসে ধ্যান করতেন বলেই এর নাম ফিলোসফার্স ওয়াক।
লম্বার্ড স্ট্রিট, যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের সবচেয়ে ব্যস্ত সড়ক এটি। অনেকটা মেয়েদের চুলের কাঁটার মত বাঁকানো এই সড়কে সবাই আসেন ফেসবুক আর ইন্সটাগ্রামের জন্য ছবি তুলতে। ধারণা করা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে আঁকাবাঁকা সড়ক সান ফ্রান্সিসকোর লম্বার্ড স্ট্রিট।
জিনলি স্ট্রিট, চীন
চেংদু শহরের এই সড়কটি চীনের প্রাচীন সভ্যতার এক অনন্য নিদর্শন। তাই কাঠের ঘরবাড়ি, দোকানপাট থেকে শুরু করে সড়কের চারপাশের ঝাড়বাতি সবকিছুতেই আছে চীনা সংস্কৃতির ছোঁয়া। সিচুয়ান প্রদেশে অবস্থিত ১৮০০ সালে নির্মিত এই সড়ক পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে সবসময়।
ব্লু স্ট্রিট, ভারত
নীল রঙের এই রাস্তায় ঠিকানা ভুলে হারিয়ে গেলেও হয়তো কেউ ভয় পাবে না। যোধপুরের মেহেরানগড় কেল্লায় যেতে পথে পড়বে এই দৃষ্টিনন্দন নীল শহরের রাস্তা। পথ এবং পথের দুই ধারের ঘরবাড়ি সবকিছু চোখ ধাঁধানো নীল রঙের। ইতিহাসের সঙ্গে এ যেন আধ্যাত্মিকতার এক অপূর্ব সংমিশ্রণ।
আমব্রেলা স্কাই প্রোজেক্ট, পর্তুগাল
২০১১ সালে আগুয়েদা শহরের চারটি সড়কে পথচারীদের হাঁটার জন্য নতুন করে সাজানো হয়। গরমকালে পথিকদের হাঁটার সুবিধার্থে এতে যুক্ত হয় অসংখ্য রঙিন ছাতি। তাই অনেকেই একে ছাতির স্বর্গ বলে থাকেন।
মিকোনোস ওল্ড টাউন রোড, গ্রিস
হোরা কিংবা মিকোনোস নামে পরিচিত সাগরপাড়ের এই শহরকে বলা হয় ‘টুরিস্টদের মক্কা’। তাই গরমের শুরুতেই ক্রুজ শীপের মত বড় বড় জাহাজে করে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন এখানে। এখানকার সড়কের চারপাশে উজ্জ্বল সাদা, নীল আর হলুদ রঙের ঘরবাড়ি দেখতেও তীর্থস্থানের মতই মোহনীয়।
দ্য ডার্ক হেজেস, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড
ফটোগ্রাফারদের জন্য স্বর্গতুল্য এই সড়কটি অ্যান্ট্রিম কাউন্টিতে অবস্থিত। এর চারপাশের অদ্ভুত সুন্দর আকৃতির গাছগুলো অষ্টাদশ শতকে লাগানো। ভৌতিক আবহের জন্যে গেইম অব থ্রোন্সের মত হলিউডের অনেক সিরিয়াল আর সিনেমার দৃশ্যায়নও হয়েছে এখানে।