গ্রামীণফোনের নিকট ক্ষতিপূরণ চাইলো হুমায়ূন আহমেদের পরিবার!
বাংলা সাহিত্যের এক কিংবদন্তির নাম হুমায়ূন আহমেদ। স্বাধীনতার পরে ৪০ বছর থেকে পাঠকদের মনে যিনি জায়গা করে নিয়েছেন তার কাজের মাধ্যমে। কখনো কলম হাতে, কখনো ক্যামেরার পেছনে দাঁড়িয়ে সৃষ্টি করেছেন একের পর এক নতুন চরিত্র৷ যার সৃষ্ট 'কোথাও কেউ নেই' নাটকের 'বাকের ভাই' চরিত্রের ফাঁশি আটকানোর জন্য চারিদিকে লেগেছে পোস্টার, বেরিয়েছে মিছিল। শুধু কি 'বাকের ভাই' চরিত্র, এমন আরো বহু চরিত্রের স্রষ্টা হুমায়ুন আহমেদ।
তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো বরাবরই থাকে মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে বর্তমানে নতুন করে আলোচনায় হুমায়ূন আহমেদ, তার পরিবার এবং তার সৃষ্ট চরিত্রগুলো। কারণ, হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্টি করা নাটকের জনপ্রিয় কিছু চরিত্রের বাণিজ্যিক ব্যবহার করেছেন গ্রামীনফোন মোবাইল অপারেটর কোম্পানি। অনুমতি ছাড়াই এসব চরিত্র ব্যবহার করায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে গ্রামীণফোনকে।
হুমায়ুন আহমেদ এর পরিবারের ছয় সদস্যের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার নোটিশ পাঠানো হয়। পরিবারের সদস্যরা হলেন- হুমায়ূন আহমেদ এর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, কন্যা নোভা আহমেদ, শীলা আহমেদ এবং বিপাশা আহমেদ, পুত্র নুহাশ হুমায়ূন এবং ভাই জাফর ইকবাল।
নোটিশে বলা হয়েছে, নন্দিত লেখক হুমায়ুন আহমেদ এর জনপ্রিয় চারটি নাটকের জনপ্রিয় চরিত্রের বাকের ভাই, এলাচি বেগম, সোবহান সাহেব এবং তৈয়ব আলী-র বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করেছেন গ্রামীনফোন। যার জন্য কোন অনুমতি নেয় গ্রামীণফোন ফলে আইন অনুযায়ী লেখকের মেধা স্বত্ব লঙ্ঘন হয়েছে।
২০২০ সালের জুলাই মাসে গ্রামীণফোন 'কেমন আছেন তারা' শীর্ষক কয়েক পর্বের একটি ধারাবাহিক প্রমোশনাল চালায়, যার টাইটেল ছিল গ্রামীণফোন নিবেদিত 'কেমন আছেন তারা'। এটি গ্রামীণফোনের ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচারিত হয়েছিল। অনুষ্ঠানে হুমায়ূন আহমেদ এর সৃষ্টি চারটি জনপ্রিয় চরিত্র বাকের ভাই (কোথাও কেউ নেই), এলাচি বেগম (অয়ময়), সোবহান সাহেব ( বহুব্রীহি) এবং তৈয়ব আলী (উড়ে যায় বকপক্ষী) এই চরিত্রগুলোর ব্যবহার করা হয় এবং প্রতিটি পর্বের ভিউ ৩০ লাখের উপরে হয়। প্রচলিত আইনে এসব চরিত্র ব্যবহার করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও গ্রামীণফোন তা মানে নি। ফলে মেধা স্বত্ব আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।
গ্রামীণফোনের কাছে পাঠানো নোটিশে ' কেমন আছেন তারা' অনুষ্ঠানের পর্বগুলো তিন দিনের মধ্যে অপসারণ করে হুমায়ূন আহমেদ এর পরিবার কে জানানোর কথা বলা হয়েছে। সেইসাথে মেধা স্বত্ব লঙ্ঘনের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩ কোটি টাকা ১৫ দিনের মধ্যে হুমায়ূন আহমেদ এর পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। তা না হলে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে নোটিশে।