ঘরের সাজে নতুনত্ব
সারাদিন নানান কাজের পরে দিনশেষে ফিরতে হয় নিজ গৃহে। নিজের একটা চেনা জগত হলো নিজের ঘর। ভালো খারাপ সময়টা সবাই নিজের ঘরে কাটাতেই পছন্দ করি। কিন্তু নিজ হাতে সাজানো গোছানো অন্দরে থাকতে থাকতে অনেক সময় এক ঘেয়ে মনে হয়। আর ঘরের ভেতরের সৌন্দর্য যদি নিজের পছন্দের না হয় তাহলে, মন খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
মন ভালো রাখতে অন্দরসজ্জায় উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার প্রয়োজন। কারণ, মনের সঙ্গে উজ্জ্বল রঙের সম্পর্কটাও বেশ গভীর। খুব সহজেই ঘরে রঙের প্রাচুর্য বাড়ানো যায়। এ ক্ষেত্রে বাধা হলো পুরো ঘরের রঙ পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই দেয়ালের রঙ পরিবর্তন না করেই, ঘরের বিভিন্ন জায়গায় রঙিন নানা অনুষঙ্গ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ জন্য হতে হবে সৃজনশীলতা।
যদি মনে করেন ঘরে আপনার চাই রঙের ছটা, তাহলে শুরুতেই বসার ঘরের মেঝের রঙ পরিবর্তন করা জরুরি। এ জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় রঙিন কার্পেট। বসার ঘর, শোয়ার ঘর বা ডাইনিং এরিয়ায় টেবিলের নিচে রঙিন কার্পেট পেতে দিতে পারেন। কার্পেটের পরিবর্তে কালারফুল ম্যাটও ব্যবহার করা যেতে পারে। আজকাল বাজারে রঙিন ম্যাটও পাওয়া যায়। এতে ঘর উজ্জ্বল দেখাবে।
মেঝের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে বা বিপরীত রঙের কুশন রাখতে পাড়েন বসার ঘরে সোফা বা চেয়ারের সঙ্গে। কিংবা সোফাটি যদি বেশি পুরোনো হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে এটি বদলে নেওয়া যেতে পারে কালারফুল থ্রো সোফায়। ডাইনিং টেবিলে রঙিন রানার রাখলেও রঙের আবহে পরিবর্তন আসবে, যা বদলে দিতে পারে পুরো ঘরের সৌন্দর্য।
অন্দরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা টেবিল, শেলফ, টিভি ক্যাবিনেটের ওপর নানা আকারের ফুলদানিতে রংবেরংয়ের কৃত্রিম ফুল সাজিয়ে রাখা যেতে পারে। অথবা কালারফুল শোপিস বা ডেকর আইটেম সাজাতে পারেন। এতেও ঘরের রং-বৈচিত্র্য বাড়বে।
দেয়ালের রং পরিবর্তন করা না গেলে এর পরিবর্তে ঝোলানো যেতে পারে রঙিন ফটোফ্রেম। বাজারে মনের মতো ফটোফ্রেম পাওয়া না গেলেও ইন্টারনেট থেকে পছন্দের ছবি ডাউনলোড করে মাপ মতো প্রিন্ট করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে খরচও কম হবে। আবার রঙের সাহায্যে সুন্দর নকশাও করা যেতে পারে দেয়ালে।
অনেকের ঘরে বইয়ের বড় আলমারি বা তাক থাকে। চাইলে যেকোনো একটি তাকের কিছু বই নানা উজ্জ্বল রঙের মলাটে মুড়ে রাখতে পারেন। বইগুলো এমনভাবে সাজাতে হবে যেন, রঙিন মলাট দেখা যায়। এ ছাড়া বইয়ের সঙ্গে রঙিন পেপার ওয়েট, কলমদানি বা কলমও রাখতে পারেন।
শোয়ার ঘরের শ্যান্ডেলিয়র হতে পারে রঙিন কাচের। এ ছাড়া ল্যাম্পশেড বা এর আলোও হতে পারে রঙিন।
ঘরের পুরোনো কিচেন ক্যাবিনেট, কাঠের চেয়ার, টেবিল, আলমারির তাকেও নতুন করে রং করতে পারেন।
বাথরুমে আয়নায় রঙিন ফ্রেম বসানো যেতে পারে। এ ছাড়া বাথরুম অ্যাকসেসরিজ, যেমন: সাবানদানি, লিকুইড সোপ ডিসপেনসার বা ব্রাশ হোল্ডারও রঙিন হতে পারে।
বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় বাগান থাকলে রঙিন টব হতে পারে সবচেয়ে ভালো অনুষঙ্গ। কিছু টব চাইলে বসার ঘরেও সাজিয়ে রাখা যেতে পারে। ব্যালকনিতে পাশাপাশি অনেক রঙিন টব সাজিয়ে ছোট বসার ব্যবস্থা করতে পারলে চায়ের আড্ডা আরও জমজমাট হবে।
রঙ নির্বাচনের সময় হলুদ, কমলা, নীল, সবুজ, গোলাপি, লাল ইত্যাদি নির্বাচন করা যেতে পারে। এগুলো ঘর উজ্জ্বল দেখাতে সবচেয়ে কার্যকর।
ঘরের নতুন আবহাওয়া মনকে উৎফুল্ল রাখবে। সেই সঙ্গে ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতেও সাহায্য করবে।
অনন্যা/এসএএস