ভালোবাসায় বসন্ত!
এবারে পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস দুটোই একই দিনে, মানে ১৪ ফেব্রুয়ারি। আর তাই মনে আর সাজে রঙের বাহার একটু বেশিই যেন। ফাল্গুনের রঙে, ভালোবাসার আবিরে সবার চেয়ে আলাদা করে সেজে ওঠার সময় তো এখনই। তবে করোনার প্রভাব এখনো শেষ না হওয়ায় বাইরে বের হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
ভালোবাসার অনুষঙ্গে
পোশাকে, অনুষঙ্গে বসন্ত ও ভালোবাসার অনুভব ফুটিয়ে তোলাই হোক আপনার আজকের স্টাইল। ভালোবাসার রং হতে পারে লাল, তাই বলে সবকিছু লাল পরলে ভালো লাগবে না। শাড়ি, ব্যাগ কিংবা জুতা যে কোন দু-একটি অনুষঙ্গ রাখতে পারেন লাল রঙের। সে ক্ষেত্রে আমার প্রথম পছন্দ ছোট হাতলের রঙিন বড় ব্যাগ। শাড়ি পরার ধরনে বাঙালিয়ানা আনতে পারেন। চাইলে তাজা ফুল জড়াতে পারেন চুলে বা হাতে। জিন্স, ফতুয়া, টপস, সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে কপারের বড় বালা সুন্দর লাগবে। আবার পোশাকটা লাল হলে অনুষঙ্গ একদম বাদও দিতে পারেন। সেই সঙ্গে বাসন্তী রং ও লালের মিশেল পোশাকে থাকলে আপনি হয়ে উঠবেন স্টাইলিশ—এটাই হোক এবার সাজের মূলমন্ত্র।
চুলের বাঁধনে বাঁধা
সকালে চুল ধুয়ে কন্ডিশন করে নিন। খোলা চুলে ওয়েভ কার্ল, স্পাইরাল করে নিতে পারেন। চাইলে কপাল ঘেঁষে চিকন বেণি করে নিতে পারেন। পনিটেইল, ফ্রেঞ্চ বেণিও ভালো লাগবে। যারা শাড়ি পরবেন, তারা হাত খোঁপা করে নিতে পারেন। হরেক রকম চুলের কাঁটা গুঁজে খোঁপায় তুলুন নতুন ছন্দ। খেয়াল রাখবেন, চুল যেন সব সময় পরিষ্কার ও টিপটপ দেখায়। ব্যাগে পাঞ্চ ক্লিপ ও ব্রাশ রাখবেন। রাতের অনুষ্ঠান হলে হেয়ার স্পা করিয়ে নিতে পারেন।
চোখের ভাষার গভীরে
ভালোবাসা দিবসের মেকআপে চোখের সাজকে প্রাধান্য দিন। মুখের মেকআপ হবে হালকা। প্রথমে মুখে পাঁচ মিনিট ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ত্বক নরম করে নিন। তারপর ফোটা ফোটা স্টিক ফাউন্ডেশন লাগিয়ে ভালোমতো মাখুন। হালকা ফেস পাউডার লাগান, তার ওপর পিচ কিংবা গোলাপি ব্লাশন বুলিয়ে নিন। হয়ে গেল সারা দিনের মেকআপ বেজ। চোখে স্মোকি সাজই চলছে এখন। তবে স্মোকি মানেই কালো নয়, তাতে যোগ হয়েছে হরেক রং। প্রথমে পানিরোধক কাজল চোখে টেনে নিন। শুধু কাজলরেখা ঘেঁষে সবুজ, বাদামি কিংবা ময়ূরকণ্ঠী নীল মেশান। নিচের পাতার ভেতরের অংশে ঘন কাজল দিয়ে নিচে বাদামি শ্যাডো টানুন।
পাপড়িতে ঘন করে মাশকারা দিন। পুরো পাতায় শ্যাডো দিতে চাইলে কাজলের বদলে মোটা করে লাইনার টানুন। রাতে চোখে যে কোন শ্যাডো পরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে হাইলাইট হতে পারে সোনালি, বাদামি, রুপালি, পার্ল, তামাটে রঙের। চোখের কোণে একটু কালো শ্যাডো মিশিয়ে নিলেই গভীর হবে আপনার চোখের ভাষা। লেন্স পরতে পারেন। ত্বক বাদামি বা শ্যামলা রঙা হলে হ্যাজেল, বাদামি লেন্স ভালো মানাবে। ফরসা হলে বেছে নিন ছাই, নীল বা সবুজ রং। সারা দিনের জন্য ঠোঁট সাজাতে ফারজানা আরমানের পছন্দ পেনসিল ম্যাট লিপস্টিক। দিন হোক আর রাত, লাল, কমলা কিংবা অন্য উজ্জ্বল রং আপনি বেছে নিতে পারেন। নিজে আত্মবিশ্বাসী থাকলে যে কোন রঙেই আপনি হয়ে উঠবেন অনন্যা।
খেয়াল রাখুন
উৎসবের বন্যায় ভাসলেই হবে না। খেয়াল রাখতে হবে স্বাস্থ্যেরও। কেননা এখনো করোনার প্রভাব বিদ্যমান। সেখানে বেড়াতে যান না কেন, স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলুন। সকালে ৩০ মিনিট ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়াম, হালকা মেডিটেশন, প্রাণায়াম কিংবা যোগব্যায়াম করে নিলে সারাদিন শরীর ঝরঝরে থাকবে। ভালোবাসার এইদিনে হাঁটা হবে অনেক পথ। তাই পায়ের জুতা আরামদায়ক হওয়া চাই। বাইরে কম ক্যালরির খাবার যেমন স্যান্ডউইচ পাস্তা, কম পনির দেওয়া পিত্জা খান। পানি বা জুস খাবেন। এ মৌসুমে বাতাসে প্রচুর ধুলাবালি থাকে। যাদের অ্যাজমা বা অ্যালার্জি আছে, তারা মাস্ক এবং ইনহেলার নিতে ভুলবেন না।