করোনায় কুড়িগ্রামে বেড়েছে বাল্যবিবাহ
করোনা পরিস্থিতিতে কুড়িগ্রামে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বাল্যবিবাহ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারণে এ হার আরো বাড়ছে। বেড়েছে ঝড়ে পরা শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা প্রতিরোধে বাংলাদেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে মার্চ মাসের ১৬ তারিখ থেকে। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় বাসা থেকে অনেক অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় এ সংখ্যা অনেক বেড়েছে। স্কুল পড়–য়া কম বয়সী মেয়েরাই এর শিকার বেশি হচ্ছে। প্রশাসন খবর পেয়ে অনেক বিয়ে বন্ধ করলেও অজানা থেকে যাচ্ছে অনেক বাল্যবিবাহ। প্রতিবেশি, আত্মীয় স্বজনরাও এর কোনো প্রতিবাদ করছেনা।
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাগলার হাট গ্রামে পঞ্চম শ্রেণী পড়ৃয়া পূর্ণিমা খাতুন খাতুন(১১) ও হামিদুল মিঞার(১৮) বিয়ে হয় কিছুদিন আগে। ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই বাল্যবিবাহ হওয়া সত্ত্বেও বিবাহের দেড়শ অতিথি, আত্মীয় কেউ এই বিয়ে নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেনি। চরাঞ্চলে এরকম অনেকেই বালবিবাহ করে সংসার করছে। বিয়েগুলো পরিবার থেকেই দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এক মেয়ের অভিভাবক বলেন, “করোনায় স্কুল বন্ধ এসময় ভালো ঘর পওয়ায় মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিছি।” আরেকজন অভিভাবক জানান, “মেয়ের বয়স বেশি হলে ডিমান্ড(যৌতুক) বেশি চায়। গরীব মানুষ এতো টাকা পাবো কই থেকে। তাই অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেই।”
একটি বেসরকারী সংস্থার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২০ আগস্ট পর্যন্ত কুড়িগ্রামে বাল্যবিবাহ হয়েছে ২৬০২ টি এবং বিয়ে বন্ধ হয়েছে ৯৬১ টি। এরমধ্যে ২০২০ জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাল্যবিবাহ হয়েছে ৩৩৯ টি এবং বন্ধ হয় ৭১ টি। বাল্যবিবাহের ফলে মেয়েদের স্বাস্থ্যের অনেক সমস্যা হয়। সন্তান জন্ম দেয়ার সময় দেখা যায় অনেক শিশু অপুষ্টিতে ভোগে, আবার অনেক মায়ের স্বাস্থ্যহানি ঘটে।
কুড়িগ্রামের আইনশৃঙ্খলা কর্মকর্তারা জানান, বাল্যবিয়ে রোধে তারা তৎপর রয়েছে। আইন অমান্যকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।