ফোর্বসের তালিকায় ৩ বাংলাদেশি তরুণী
বিখ্যাত বিজনেস জার্নাল ফোর্বস ২০২৩ সালের ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ তরুণ সংগঠক, উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকের তালিকা প্রকাশ করেছে। সে তালিকায় স্থান পেলেন তিন নারীসহ ৭ বাংলাদেশি। তিন নারী হলেন, তাসফিয়া তাসবিন, জাহ্নবী রহমান ও সারাবন তহুরা। বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যবসা খাতে অবদান রেখে বিশ্ব গণমাধ্যমে নাম ওঠা মুখের কথা নয়। তবে কোনো কিছুই যে অসাধ্য নয়, তা প্রমাণ করেছেন এই নারীরা।
তাসফিয়া তাসবিন
প্রতিষ্ঠাতা, মার্কোপলো.এআই । মার্কোপোলো.এআই হলো একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান, যেটি ছোট ও মাঝারি আকারের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল বিপণনে কাজ করে থাকে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে সেগুলো প্রচার করা হয়। সাবস্ক্রিপশন-ভিত্তিক প্রোগ্রামটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিজ্ঞাপনের সাফল্য ও পোস্টিংয়ের বিষয়ে তারা পূর্বাভাসও দিয়ে থাকে। গত বছর, কোম্পানিটি সিঙ্গাপুরের ভিসি ফার্ম এক্সিলারেটিং এশিয়ার মাধ্যমে ৭ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে।
জাহ্নবী রহমান
রিল্যাক্সির সহ-প্রতিষ্ঠা জাহ্নবী রহমান। এটি একটি প্রযুক্তি-ভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্ল্যাটফর্ম। যেটি বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয়ে কাজ করছে। মানসিক স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত সমস্যায় ভুগছেন এমন তরুণদের ডিজিটালি সমাধান দিয়ে থাকে রিলাক্সি। পাশাপাশি রিল্যাক্সি বেশ কয়েকটি বিনামূল্যের পরিষেবা দিয়ে থাকে। যেমন, মানসিকস্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেডিটেশন ও কম খরচে ভার্চুয়াল থেরাপি সেশন। সম্প্রতি হুয়াওয়ের আইসিটি ইনকিউবেটর ২০২২-এ দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে এই অ্যাপ। এটি ডাউনলোড হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি। সামাজিক প্রভাব শ্রেণিতে তালিকায় স্থান পেয়েছেন জাহ্নবী।
সারাবন তহুরা
প্রতিষ্ঠাতা, টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিও। সারাবন তহুরা তুরিন ও আনোয়ার সায়েফ অনিকের প্রতিষ্ঠিত টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিও নতুন স্ট্যার্টআপদের অর্থায়ন, পরামর্শসহ বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক সুবিধা দিয়ে থাকে, বাংলাদেশে যা এ ধরনের প্রথম কোনো উদ্যোগ। ২০১৮ সাল থেকে তারা ৯০ জনের বেশি উদ্যোক্তার সঙ্গে কাজ করেছে। ফল—সেই উদ্যোক্তারা ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ পেয়েছে। প্রযুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করতে ‘ইয়াং টার্টল’ নামে একটি কর্মসূচি পরিচালনা করছে টার্টল ভেঞ্চার।
এছাড়া, এ বছর ফোর্বস ৩০ অনূর্ধ্ব ৩০-তে জায়গা করে নেওয়া ৭ বাংলাদেশিদের মধ্যে বাকি চার জন হলেন -‘যাত্রী’র সহপ্রতিষ্ঠাতা আজিজ আরমান, মার্কোপোলো.এআইসহ সহপ্রতিষ্ঠাতা রুবাইয়াত ফারহান, অ্যাগ্রোশিফট টেকনোলজিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা দীপ্ত সাহা, টার্টল ভেঞ্চার স্টুডিও এর প্রতিষ্ঠাতা, আনোয়ার সায়েফ।
বিখ্যাত বিজনেস জার্নাল ফোর্বস ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ তালিকা প্রকাশ করে। ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ৩০ বছরের কম বয়সী ৩০ জনকে নিয়ে তালিকাটি তৈরি করা হয়।
২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য মোট ২৫ জন বাংলাদেশির নাম এ তালিকায় স্থান পেয়েছে। এই বছর ৩০ বছরের কম বয়সী ৭ জন বাংলাদেশিকে ৩টি ক্ষেত্রে তাদের অবদানের জন্য স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ক্ষেত্রগুলো হলো: কনজিউমার টেকনোলজি; গণমাধ্যম; বিপণন; বিজ্ঞাপন ও সামাজিক প্রভাব।