Skip to content

২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনম

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনে কিছু মানুষ এমন আছেন যারা সেকাল থেকে একাল কাজ করে যাচ্ছেন। জায়গা করে রেখেছেন সবার হৃদয়ে। এমনই একজন কিংবদন্তি অভিনেত্রী হলেন শবনম। তিনি বাংলাদেশের সেই চলচ্চিত্র তারকাদের একজন, যারা বাংলাদেশের একটি নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন।

কিংবদন্তি অভিনেত্রী শবনম নামে পরিচিত হলেও তার নাম ছিল ঝর্ণা বসাক। তার জন্ম ১৯৪১ সালের ১৭ আগস্ট। তার বাবা ছিলেন ননী বসাক পেশায় স্কাউট প্রশিক্ষক ও ফুটবল রেফারি। কিংবদন্তি এই অভিনেত্রীর বিয়ে হয়েছিল ১৯৬৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর স্বনামধন্য সংগীত পরিচালক রবিন ঘোষের সঙ্গে।

একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবেও শবনম সুপরিচিতি লাভ করেন। তিনি শৈশবেই ললিতকলা অ্যাকাডেমি থেকে নাচ শিখেছিলেন। একটি নৃত্যের অনুষ্ঠান থেকেই এহতেশাম তার নাচ দেখে এদেশ তোমার আমার চলচ্চিত্রের নৃত্যে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। পাশাপাশি আরও কিছু সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ করে দেন। এহতেশামের পাশাপাশি নিজ অভিনয় দক্ষতায় পরিচালক মুস্তাফিজের নজর কাড়েন তিনি। শবনম ১৯৬১ সালে মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সেই সিনেমাতেই তিনি শবনম নাম ধারণ করেন। হারানো দিন সিনেমায় খ্যাতি অর্জনের পর তিনি ১৯৬২ সালে উর্দু চলচ্চিত্র চান্দা ছবির মাধ্যমে তৎকালীন সমগ্র পাকিস্তানে তারকা-খ্যাতি অর্জন করেন।

ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে শবনম পাকিস্তানের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে চিহ্নিত হন। ১৯৬৮ সালে তিনি পাকিস্তানের করাচীতে স্থায়ী বসবাস শুরু করেন। এরপর সত্তরের দশকের শুরুতে শবনম ললিউড (লাহোর) পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান করে নেন।

আয়না সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন শবনম এবং এই সিনেমা পাকিস্তানের সিনেমাহল গুলোতে দীর্ঘদিন চলার রেকর্ড করেন। একটা সময় পর শবনম বাংলাদেশে চলে আসেন।

তিনি বাংলাদেশের ‘সন্ধি’, ‘শর্ত’, ‘সহধর্মিণী’, ‘যোগাযোগ’, ‘জুলি’, ‘বশিরা’, ‘দিল’সহ অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার পরবর্তী সময়, অর্থাৎ ১৯৯৯ সালের ২৫ জুন কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘আম্মাজান’ সিনেমাটি মুক্তির পর থেকে আজ অবধি দর্শক তাকে ‘আম্মাজান’ হিসেবে খুব সহজেই চেনেন।

১৯৮৮ সালে শবনম তার চরিত্র পরিবর্তন করেন এবং পুনরায় ঢাকা ও লাহোরের চলচ্চিত্রাঙ্গনে অভিনয় করতে থাকেন। ৪০ বৎসরের অধিক সময় ধরে অভিনয়ের ফলে তিনি প্রায় ১৮০টি চলচ্চিত্রের অনেকগুলিতে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন। শবনম অনেকবার সম্মানসূচক নিগার পুরস্কারের পাশাপাশি তিনবার পাকিস্তানের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। কাজী হায়াতের পরিচালনায় ও ঢাকা প্রোডাকশনের ব্যানারে তিনি ১৯৯৯ সালে সর্বশেষ আম্মাজান চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন।

পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে অসামান্য অবদান রাখায় তিনি সম্মানসূচক পুরস্কার হিসেবে মোট ১২বার নিগার পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ২০১৯ সালের লাক্স স্টাইল অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়।

অনন্যা/এসএএস

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ