মেয়ের প্রথম পিরিয়ড কেক কেটে উদযাপন করলো পরিবার
প্রত্যেক মেয়ের জীবনেই পিরিয়ড খুব স্বাভাবিক ঘটনা। মেয়েদের জীবনের প্রথম পিরিয়ড একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। কারণ এ সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞান থাকেনা। থাকে ভয় ও আশংকা। আর আমাদের সমাজে মেয়ের পিরিয়ড নিয়ে পরিবার তেমন তৎপর থাকেনা। পরিবারে পিরিয়ড নিয়ে কথা বলা একটা ট্যাবুর মতো হয়ে আছে এখনো। ফলে মেয়েরাও তাদের প্রথম পিরিয়ড নিয়ে খোলাখুলিভাবে কিছু বলতে পারেনা কাউকে। ভয়, আশংকা মনের ভিতরেই থেকে যায়।
কিন্তু মেয়ের প্রথম পিরিয়ড উদযাপনের মাধ্যমে ফেনীর এক পরিবার একটি ব্যতিক্রম উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। মেয়ের জীবনের নতুন এক অধ্যায় প্রারম্ভ উপলক্ষে লাল রঙের একটি কেক কেটে উদযাপন করেছে মেয়ের ঋতুমতী হওয়ার গল্প। প্রথম পিরিয়ড হওয়াকে স্মরণীয় করে রাখতে পরিবারের এই আয়োজন।
মেয়ের জন্য বানানো কেকটি তার জীবনের নতুন ধাপগুলো সম্পর্কে জানান দেয়। কেকটি বানিয়েছেন ফেনী কলেজে পলিটিকাল সায়েন্সে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান চৌধুরী প্রিমা। ঘরেই বাণিজ্যিকভাবে কেক বানাচ্ছেন তিনি। সেজন্য ‘কেক মি অ্যাওয়ে বাই প্রিমা’ নামে একটি ফেইসবুক পেইজ চালান তিনি। যে পরিবার ওই কেক অর্ডার করেছিলেন, পরে তাদের অনুমতি নিয়েই প্রজেক্ট কন্যার ফেইসবুক পাতায় ছবিটি প্রকাশ করা হয়।
কেকটা অনেকটা সিঁড়ির অবয়বে বানানো এবং এতে একটা ছোট মেয়ের প্রতি ধাপে বড় হয়ে উঠার গল্প ফোটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। লাল রঙের ওই কেক বানানো হয়েছে চার ধাপের সিঁড়ির আকারে। প্রতিটি ধাপে ছোট থেকে বয়ঃসন্ধি বেলার কন্যা শিশুর একটি করে আদল বসানো। কেকটির নিচে লেখা: ‘নিউ লাইফ…’।
সেই পোস্টে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, প্রশংসা করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় কন্যা সন্তানের প্রথম পিরিয়ড উদযাপনের প্রথা নিয়েও লিখেছেন কেউ কেউ।
আমাদের সমাজে যেখানে পিরিয়ডকে লুকিয়ে চুপিয়ে রাখা হয়, সেখানে পরিবারের এই আয়োজন অসাধারণ একটি কাজ। মেয়ের মানসিক অবস্থা, শারীরিক নিরাপত্তা নিয়ে গভীর সচেতনতা বোধ থেকেই এই আয়োজন। ফেনীর এই ঘটনা বাংলাদেশের অন্য পবিারগুলোতেও ইতিবাচক প্রভাব রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।