Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দূরে থেকেও সম্পর্ক অটুট

আর কয়েকটা পথ পেরোতে পারলেই কমে যাবে, বহুদিনের জমে থাকা দূরত্ব। অবশ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে দূরত্ব কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে তার কথা নিয়ে সারাবছরই কেউ না কেউ কথা বলে। কিন্তু যে দূরত্ব ক্রমশ আমাদের জীবনে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে বিগত এক বছরে, তার কথাই বলা যাক। ভার্সিটি পড়ুয়া আড্ডাবাজ ছেলেটি থেকে শুরু করে নিজের আগলে রাখা মিষ্টি সম্পর্কটুকুর কথাই ধরা যাক। সবাই দূরত্বের স্পর্ধার ভারে হাশফাঁশ করছে। বহুদিন আর হাঁটা হচ্ছেনা প্রিয়জনের সাথে ফুটপাথ ধরে – হোক না সেটা সামান্য কিছুক্ষণের জন্যেই।

 

হচ্ছেনা আড্ডা আর প্রিয়জনদের সাথে দেখা। আর অনলাইনের এই জীবনে বহিরাগতদের আগমনে সকলেই ক্লান্ত। তবু দূরে থেকেও সম্পর্ক অটুট রাখা যায়। সেটা শুধুমাত্র প্রেম কিংবা বন্ধুত্বের জায়গাতেই নয়। এই দূরত্বকে হার মানিয়ে আস্তে আস্তে সম্পর্কের সূতোগুলোকে রঙিন করে রাখাটাও অসম্ভব নয়। বরং একসময় কোন একদিন কাছাকাছি দাঁড়িয়ে বলা যেতেও পারে, ওই বিষন্ন সময়টুকুতেও সূতোগুলো ছিল। পৃথিবী আবার সুন্দর ও ব্যস্ত হয়ে উঠবে তখন। 

 

তার আগে সম্পর্কগুলোর মধ্যকার দূরত্ব কমানো ভীষণ জরুরী। যাতে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে গেলে অভিযোগটুকু খুঁজে না পাওয়ার হয়। খোঁজা হয়নি এমন অভিযোগ কারোই কাম্য নয়। এহেন সময়ে অনলাইন কিংবা সামাজিক মাধ্যম ছাড়া আপাতত কোন সমাধান নেই। কিন্তু প্রতিনিয়ত একই খোঁজ নেয়া আর মেসেজিং এর রীতি থেকে বের হয়ে নতুন কিছু করাটা দোষনীয় কিছু নয়। বরং সেটাই সবচেয়ে ভালো বলে মনে হয়। 

 

তাহলে, কি করা যেতে পারে? সেগুলো নিয়েই কিছু আলোচনা করা যেতে পারে আজ। 

 

 

আড্ডা দিন

না, শুধুমাত্র ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেসেজিং এর কথা বলছি না। মাঝেমধ্যে একসাথে ভিডিও কলিং কিংবা লাইভে আসার চিন্তা করুন। বর্তমান সময়ে আড্ডা দেয়ার জন্যে জুম এবং গুগল মিটের মত চমৎকার কিছু অপশন পাওয়া যাবে। মাঝেমধ্যে এভাবে আড্ডা দিলে সবাই সবার অভিজ্ঞতাগুলো সবার কাছে বলতে পারবে। হয়ত শারীরিক দূরত্বটুকু ঘুচবে না, কিন্তু একাকীত্ব অন্তত কিছুটা কমানো যাবে। 

 

মাঝেমধ্যে নিজেকে প্রকাশ করুন

হয়তো প্রতিদিন সবার সাথে আর দেখা হচ্ছেনা। কথাও সবার সাথে বলা সম্ভব না। এই সময়ে আপনি নিজে কিভাবে আপনার দিনগুলো উদযাপন করছেন তা শেয়ার করতে পারেন। হয়তো বাইরে একাই ঘুরতে বের হয়েছেন। অবশ্যই সুরক্ষা সামগ্রী এবং সামাজিক দূরত্ব মেনেই বের হবেন। কিন্তু নিজের দিনের অভিজ্ঞতা কিংবা দু একটি চমৎকার ছবি অনলাইনে দেয়া দোষের কিছু না। ছবিটা হতে পারে আপনার সামনে আসা সুন্দর কোন দৃশ্যেরই। 

 

বন্ধুরা চাইলে ট্যুর দিতে পারেন

হ্যা, এখন এমন কোনোকিছু করা মোটেও ঠিক না। কিন্তু সারা দেশেই সবাই ট্যুরের হিড়িক তুলেছে। যেহেতু বন্ধুবান্ধব বা প্রিয়জনদের আপাতত দেখা করার উপায় নেই – তাই ছোটখাটো একটা ট্যুর আয়োজন করা মন্দ হয়না। তবে হ্যা, বিধি-নিষেধ এবং অবস্থা দেখেই এমনটা করা উচিত। যদি সুযোগ থাকে এবং নিরাপদ মনে হয় – তবে একটা ট্যুর দিয়েও অনেকদিন পর বন্ধুরা দেখা করতে পারেন। 

 

প্রিয়জনকে একটা দিন উপহার দিন
প্রিয়জনের সাথে দূরত্ব হয়তো বেড়েছে। কিন্তু একটা দিন উপহার দিতেই পারেন। অনেক সময় অনলাইনের যোগাযোগ সত্যিকারের মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে দেয়না। কারণ ওই ফাঁকা স্ক্রিনের পেছনে সকলেই এক ধরণের মুখোশ এঁটে রাখে। তাই প্রিয়জনের মনের অবস্থা এবং সুস্থতা বোঝার জন্যে হলেও একবার কফি শপে দেখা করতেই পারেন। 

 

শখ ছড়িয়ে দিন

নিজের নানারকম শখ থাকতেই পারে। সেটা হতে পারে বই পড়া, বাগান করা কিংবা ছোটখাটো অনলাইন ব্যবসা। চালু করেই দেখুন, এভাবে হয়তো আয়ের একটা ভালো উৎসও পাওয়া গেলো – সবচেয়ে বড় কথা আপনি কাউকে না কাউকে ব্যস্ত রাখতে পারবেন। তাতেও অন্তত সম্পর্কগুলো ব্যস্ত এবং ভালো থাকবে। 

 

সময়টাই বিষন্ন। সবকিছু স্বাভাবিক ছন্দ পেলেও সম্পর্কগুলো এখনো পায়নি। বন্ধুত্ব, প্রেম সবকিছুই এখনো বিঘ্নতার মেঘে ঢাকা। সেটা কমানোর জন্যেই কিছুটা ব্যস্ততা এবং একে অপরের প্রতি অনুভূতিগুলো জাগিয়ে তোলা উচিত। সেটা যে সম্পর্কই হোক না কেন। 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ