Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালো মেয়ে ‘মেরি কেনার’

স্যানিটারি ন্যাপকিন, শব্দটি নারীর মুক্তির-ই নামান্তর। এই উপকরণটি নারীর জীবনকে করেছে স্বাচ্ছন্দ্য এবং গতিময়। নারীকে এখন আর মাসের নির্দিষ্ট ক’ টা দিন পিছিয়ে পরতে হয়না। কাপড় ব্যবহারে নারীকে ঘরে বদ্ধ থাকতে হতো, কাপড়ের ধারণক্ষমতা সামান্য ঘোরা ফেরাতেই সীমাবদ্ধ ছিল যা কখনোই নারীকে আত্মবিশ্বাস দিতে পারেনি। নারীর জীবনযাত্রাকে সহজ করতে এগিয়ে এসছিলেন একজন নারীই। উত্তর ক্যারোলিনার কৃষাঙ্গ কেনার উদ্ভাবক পরিবারের সন্তান মেরি কেনার।

ছোটবেলা থেকেই তাঁর ছিল প্রচণ্ড কৌতূহল। দিনে দিনে তা বেড়েছে তিনি ভেবেছেন কিকরে নারীর জীবন যাপনকে সহজ করে তোলা যায়, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন স্যানিটারি বেল্ট এবং ময়েশ্চারাইজার প্রুফ ন্যাপকিন পকেট। যা নারীকে মুক্তি দেয় এ সময়টাতে ঝুঁকিপূর্ণ উপকরণ এবং ঘরের বদ্ধ কোণ থেকে।

যদিও কৃষাঙ্গ বলে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে তাঁর আবিষ্কারের স্বীকৃতি পেতে। শুধুমাত্র বর্ণ বৈষম্যের কারণে এই মহান আবিষ্কারের পেটেন্ট পেতে তাঁর অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ত্রিশ বছর। এমনকি যে প্রতিষ্ঠান প্রথমবার তাঁর আবিষ্কৃত স্যানিটারি বেল্টের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল, তারা পরবর্তীতে মেরি কেনার কৃষাঙ্গ জানতে পেরে পিছু হটেন।

যদিও এই কালো মেয়ে কোন অর্থোপার্জনই করেননি এ আবিষ্কার থেকে, তিনি আসলে চানও নি, তিনি শুধু চেয়েছিলেন সকলের জীবনযাত্রাকে একটুখানি সহজ করে তুলতে।

তিনি এখানেই থেমে থাকেননি ১৯৫৬ থেকে ১৯৮৭ সালের মাঝে বিভিন্ন আবিষ্কারের জন্য আরো পাঁচটি পেটেন্ট পেয়েছিলেন। ব্যাক ওয়াশার, টয়লেট টিস্যু হোল্ডার সহ আরো কিছু আবিষ্কারের জন্য তিনি পেটেন্ট গুলো পান, টয়লেট টিস্যু হোল্ডারটি বাতের ব্যথার রুগী এবং অন্ধ ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছিলো।

১৯৩১ সালে স্নাতক অর্জন করলেও আর্থিক সংকটের জন্য তিনি হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি। স্বল্প চাহিদার এ মহান আবিষ্কারক সারাজীবনই চেয়েছেন সকলের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলতে। সকলের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে, তাই পেশা হিসেবে তিনি বেছে নেন ফুল কেনাবেচার জগতকে। ওয়াশিংটন ডিসিতে তাঁর চারটি ফুলের দোকান ছিল। সকলের হাতে তিনি ফুল তুলে দিয়েছেন দীর্ঘ ২৩ বছর।


বিবাহিত জীবনে কেনারের সঙ্গী ছিলেন, জ্যাক ‘জ্যাব্বো’ জনসন নামে এক বিখ্যাত হেভিওয়েট বক্সার।

২০০৬ সালের জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে তিরানব্বই বছর বয়সে এই নিরহংকারী মহান সত্তা’র অসাধারণ জীবনের সমাপ্তি ঘটলেও তিনি আজো রয়েছেন প্রতিটি নারীর আত্মবিশ্বাসের মূলমন্ত্র হয়ে।

  • আফরিদা ইফরাত

অনন্যা/এআই

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ