Skip to content

৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শনিবার | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাজুক কনে , লাজুক মনে!

একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনের প্রধান শর্ত কী বলুন তো? জ্বি হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, মনের মতো একজন জীবনসঙ্গী বেছে নেয়া, সুখে-দুঃখে পথ চলাতে যার মাঝে নির্ভরতার ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়। জীবনসঙ্গী খুঁজে নেয়ার সবচেয়ে প্রচলিত রীতিটির নামই বিয়ে। আমাদের দেশে শীতকাল মানেই বিয়ের মৌসুম। বছরের শেষ সময়ে হওয়ার কারণে ছুটিছাঁটা মেলে অনেকেরই। আর সেই সুযোগে দেশের অবিবাহিতদের একটি বড় অংশই বিবাহিতদের খাতায় নাম লেখান এই মৌসুমে। বিয়েবাড়িতে বর আসাকে কেন্দ্র করে যতই হইচই করা হোক না কেন, বিয়ের মূল আকর্ষণ কিন্তু কনেই। আর কনের মূল আকর্ষণ হল তার সাজ। বিয়ের এই মৌসুমে তাই চলুন জেনে নেয়া যাক, কনের সাজে কোন ধারাটি এখন চলমান-

কনের সাজ : ভালোবাসার সঙ্গে লাল রঙটি বিশেষভাবে জড়িত। আগেকার দিনে বিয়ের সাজে লাল শাড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল টিপ ছাড়া বউয়ের সাজ ভাবাই যেত না। দিন বদলেছে, বউ সাজে এসেছে অনেক রঙ। মডার্ন ব্রাইডাল লুকে রেড কালারের থ্র“তে ফেসের শার্পনেস বের করে আনা যায়। এ সাজে সাজতে হলে ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কনসিলার লাগান চোখের নিচে, মুখের কালো দাগ বা ব্রণে। ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন দিন সারা মুখে। এক শেড হালকা রঙের ফাউন্ডেশন দিন গালে, কপালের মাঝে, থুতনি ও নাকের ওপরের অংশে। ডার্ক কালার্ড ফাউন্ডেশন দিয়ে কন্টোরিং করুন চিকবোন, নাকের দু’পাশ ও গালের যে কোনো ফোলা অংশ। গালে লাগান ব্রাউন ব্লাশন।

চোখের ধরন যাই হোক, চোখের জন্য কেমন সাজ মানানসই হবে তা ভালোভাবে বুঝেই করা প্রয়োজন। কেননা সব ধরনের চোখে সব সাজ মানানসই হয়। আবার বিয়ে, গায়ে হলুদ ও বৌভাতের তিন দিনের সাজের ভিন্নতা থাকাটাও জরুরি। কারো নাকের দু’পাশে দুই চোখের দূরত্ব কম থাকে, আবার কারো বেশি। কোনো চোখে কর্ণারে কাজল দিলে ভালো লাগবে আবার কোনো চোখে হাইলাইটার। আজকাল চোখের নিচের ল্যাশলিডের কোণ ঘেঁষে সাদা কাজল ব্যবহার করা হয়। কনের সাজের ক্ষেত্রে আইল্যাশ পরানোর পরে আপার ও লোয়ার ল্যাশে অবশ্যই লাগাতে হবে ঘন করে মাশকারার প্রলেপ। ২/৩ কোট মাশকারা লাগতে হবে। আইলাইনারের ব্যবহারটা আসলে নির্ভর করে কী লুক দিতে চাচ্ছেন তার ওপর। চোখে শেপ সুন্দর দেখাতে আই লাইনারের ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি।

চোখের মেকআপ যদি ডার্ক হয় তবে অবশ্যই ঠোঁটকে হালকা রাখতে হবে। অনেক সময় সম্পূর্ণ সাজের উপরও নির্ভর করে কী রঙের লিপস্টিক আপনার জন্য মানানসই হবে। গরমের সময় ক্রিম ও ম্যাট লিপস্টিক ভালো, বিশেষ করে দিনের বেলায় এবং রাতে পার্ল, গ্লসি লিপস্টিক ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

সাজের ক্ষেত্রে চুলের সাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিয়ের সাজের ক্ষেত্রে চুলের সাজ অনেকটাই নির্ভর করে পোশাক ও গহনার ওপর। সিঁথাপাটি, ঝাঁপটা, টিকলি, মাথার ওড়না; আবার অনেকেই হেজাবও পরেন। তাই চুল, কপাল, সাজসজ্জার ধরন সবকিছুর ওপর নির্ভর করেই মানানসই চুলের সাজ নির্বাচন করা প্রয়োজন। তাই মানানসই খোঁপা, বেণী বাঁধতে পারেন আপনার চুলে। চাইলে নিচের দিকটা ব্লো-ডাই করে ছাড়াও রাখতে পারেন। সেই সঙ্গে জড়িয়ে নিতে পারেন একগুচ্ছ ফুল।

 

গয়না : কনের সাজে গয়নাই মূল আকর্ষণ। আর গলার গয়না বা নেকলেস কনের সাজে গুরুত্বপূর্ণ। হাল ফ্যাশন ট্রেন্ড হল, একেবারে গলার সঙ্গে লাগোয়া নেকলেস আর সেই সঙ্গে বড় হার। বড়, লম্বা মালাটি হতে পারে মুক্তা কিংবা কুন্দনের। সোনা আর মুক্তার মিশেলেই কনে সাজ সম্পন্ন করছেন অনেকে। বউভাত কিংবা বধূবরণে আবার হীরা কিংবা ভারি পাথরের জড়োয়া সেট বেশ লক্ষণীয়।

নতুন কনের হাতে হাতভর্তি চুড়ি থাকবেই। চুড়ির ডিজাইনে অনুসরণ করা হয় ফুলেল মোটিফ। কারুকার্যময় চুড়ির গোছার দুই পাশে একেবারে কারুকার্যহীন গোলাপবালাও ব্যবহার করা হয় ষাট-সত্তরের দশক থেকেই। মাঝে এসে যোগ হয় মানতাশা আর রতনচূর। হাতভর্তি কাচের চুড়িতে দেশীয় ঐতিহ্য তুলে ধরেন অনেকেই। সব মিলিয়ে কনের এক হাতে বাহারি ঢঙের চুড়ি, অন্য হাতে মানতাশা ও রতনচূর। ট্রেন্ডি লম্বা রাখি শুধু হলুদে নয়; বিয়ে, বউভাত- সব অনুষ্ঠানেই কনের হাতে স্থান পায়।

কানজুড়ে বড় ঝুমকা কনের চেয়ে বেশি আর কাউকে মানায় না। ট্র্যাডিশন ধরেই এখনও তাই কানের দুলের ডিজাইনে ঝুমকাই বেশি প্রাধান্য পায়। এ ছাড়া বড় ফুলেল, জ্যামিতিক ডিজাইনের কানের দুলও বেশ মানিয়ে যায় কনের সঙ্গে। এক সময় পুরো কান জড়িয়ে কানপাশা পরতে পছন্দ করতেন কনেরা। ঐতিহ্য মেনে নিজেকে সাজাতে চাইলে সেটাও বেমানান হবে না।

অন্য সবকিছুর মতো আগে সোনার টিকলি পরলেও এখন তাতে যোগ হচ্ছে নানারকমের পাথর আর পুঁতির ব্যবহার। কুন্দনের টিকলিও আজকাল বেশ জনপ্রিয়। ডিজাইনের সঙ্গে বদলেছে পরার ঢঙও। দুই দিকের চেইন একদিকে করে নিয়ে পরার চল হয়েছে গত দুই বছরে।

নাকফুলের ট্রেন্ডে চোখে পড়ার মতো পরিবর্তন হল সোনা থেকে হীরার চল। সুন্দর, অভিজাত আর সামর্থ্যরে মধ্যে হওয়ায় অনেকেই হীরার নাকফুল পরেন। বিয়ের আংটি নিয়ে আগ্রহ এবং আতিশয্য আজও অটুট। আংটির ডিজাইনে কিছুটা পরিবর্তন অবশ্য এসেছে। আগের নানা সূক্ষ্ম কারুকার্যের চেয়ে সাদামাটা, সেন্ট্রাল ডিজাইনের আংটিই বেশি পছন্দ সবার। আর সোনার জায়গাটা দখল করে নিচ্ছে ডায়মন্ড আর প্লাটিনাম।

 

লেখা: ফ্রীল্যান্সার
ফেস: নাফিজা মৌ
আউটফিট: নাজাকাত,
মেকআপ: মেকওভার বাই তাবাসসুম মৌরী ।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ