Skip to content

২রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বৃহস্পতিবার | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুরুষদের পেটের মেদ থেকে ক্যান্সারের ভয়

কথায় বলে, যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই রাত হয়। পুরুষ মানুষের ক্ষেত্রে এই কথা যেন আরো সত্য বলে প্রমাণিত হলো। যে মেদ থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন ডায়েট আর জিম করার প্লানিং করেও, লোভ আর আলসেমিতে শরীরচর্চা সম্ভব হয় না; সেই পেটের মেদ সৃষ্টি করতে পারে ক্যান্সার। কোনো অজানা ভয় নয়, বরং রীতিমতো গবেষণার চার্টের তথ্য থেকে এই নিয়ে চিন্তার কারণ আরো বেশি। 

 

গত এপ্রিলে ‘ক্যান্সার কজেস অ্যান্ড কন্ট্রোল’ শীর্ষক সাময়িকীতে এক বিশেষ গবেষণার ফলাফল বের হয়। যাতে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল, পুরুষদের অতিরিক্ত ওজনের সাথে বাড়তে পারে 'প্রস্টেইট' ক্যান্সারের ঝুঁকি। তাই, যারা ভুঁড়িভোজ দিয়ে প্রতিনিয়ত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে চলেছেন, তাদের জন্য হয়তো এই সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণার তথ্যগুলো বিষের মতো লাগতে পারে।

 

একই গবেষণার কথা উল্লেখ করে বিশ্বের আরো কয়েকটি জনপ্রিয় স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইটে 'প্রস্টেইট' ক্যান্সার নিয়ে পুরুষদের বিশদভাবে চিন্তার কথা উল্লেখ করেছে। তবে, স্থূলতার সঙ্গে এই ক্যান্সারের সম্পর্ক যে নতুন নয় সে কথাও প্রতিবেদনগুলোতে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ রয়েছে, কানাডার পুরুষদের মৃত্যুর প্রধান কারণ এই প্রোস্টেইট ক্যান্সার আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা দ্বিতীয়। তাই, পুরো বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য গবেষকরা এবার এই বিষয় নিয়ে নড়ে-চড়েই বসেছেন।

 

সাময়িকীতে উল্লেখ রয়েছে, ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মোট ১৯০০ জন বিভিন্ন বয়সের পুরুষদের নিয়ে গবেষণা করা হয়, যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাড়তি চর্বি জমা হওয়া ক্যান্সার সৃষ্টিতে কোনো ভূমিকা রাখে কি-না সেটা জানা। এদের মধ্যে সবচাইতে বেশি বয়স্কের পুরুষের বয়স ছিল ৭৫ বছর। এই সকল পুরুষদের কাছ থেকে তাদের কোমর ও নিতম্বের মাপ নেয়া হয়, জানা হয় তাদের উচ্চতা, ওজন এবং ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স (বিএমআই)’ বিষয়ক অন্যান্য তথ্য।

 

এই গবেষণার প্রধান লেখক ইউনিভার্সিটি অফ মন্ট্রিয়াল’য়ের ‘ডক্টরাল স্টুডেন্ট’ এরিক ভালিয়ের বলেন, “সাধারণ স্থূলতা প্রোস্টেইট ক্যান্সার সৃষ্টিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। কিন্তু পেটের চর্বিই মূলত প্রোস্টেইট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার মূল কারণ।”

 

শরীরের অতিরিক্ত মেদ পুরুষ দেহে 'টেস্টোস্টেরন' কমায় এবং অন্যান্য জটিল রোগ সৃষ্টির আশংকা বাড়ায়। তাছাড়া গবেষণায় পেটের চর্বি নিয়ে এই গুরুতর ফলাফল প্রকাশের পর বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য গবেষক ও চিকিৎসকরা এবার নড়ে-চড়ে বসেছেন। তারা পুরুষদের নিয়মিত শরীরচর্চা আর ডায়েটের ব্যাপারে মনোযোগী হতে পরামর্শ দেন; সেই সাথে যেসকল খাবারে চর্বি বৃদ্ধির আশংকা থাকে তা পরিহারে সচেষ্ট হতে বলেন।

 

এই গবেষণার প্রধান গবেষক ছিলেন মেরি-অ্যালিস পারেন্ট। এছাড়া, কানাডার ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ সাইন্টিফিক রিসার্চ’র পাঁচজন ‘হেল্থ অ্যান্ড এপিডেমিওলজি’র গবেষক এই গবেষণার নেতৃত্ব দেন। আর সহযোগিতায় ছিল ‘কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটি’।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ