শিরোনামহীন কবিতা

তুই আমার কিছু না হলেও ঠিক আমার কবিতার হয়ে গেছিস
দুর্দান্ত শিরোনাম দিয়ে শুরু পরিনামে কলঙ্কের ছাপ!
মাঝখানে তোর কাজল কালো চোখ, এলোকেশ আর কম্পিত ওষ্ঠের বর্ণনা।
কেনো যেন নির্লজ্জের মতো প্রতিটি শব্দের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকিস ঠায়,
অনিচ্ছাকৃত ভাবেই গঠিত বাক্যটি চূড়ান্তে তোর হয়ে যায়।
তোকে ভুলে যেতেই আকাশ মাটি আর সমুদ্রের কথা লিখি,
উড়ন্ত বলাকার কথা লিখি।
লেখা শেষে দেখি তুই মেঘলা আকাশ হয়ে অন্ধকার!
তুই পোড়া মাটির কারুকাজে বিচিত্র ভঙ্গিতে নির্বিকার!
আবার সমুদ্র ঢেউয়ের মাঝে হিংস্র হাঙরের রূপকার!
উড়ন্ত বলাকার মতো উড়ে বেড়াস সাত সমুদ্র তেরো নদী পার।
এতদিনে বুঝলাম, আমি আসলে কবিতা লিখি না আমি তোকেই লিখি।
তবে মানুষ কোনো প্রতিনিয়ত বাহবা দেয়!
কেন অভিনন্দিত করে প্রতিটি লেখায়!
সে কি তোর কর্মে? না কি আমার মর্মে?
প্রশ্নগুলো মনের গহীনে ঘুরপাক খাচ্ছে বহুদিন,
উত্তর মেলেনি কোনোদিন।
লেখাগুলো যদি কবিতাই হয়ে যায় তাহলে সে তো তুই!
তার মানে তুইই কবিতা?
তোকে লিখি বলে আমি আজ কবি?
ভাবছি একটা কবিতা লিখবো, প্রথম কবিতা, শিরোনামহীন কবিতা,
যেখানে থাকবে না তোর কোনো অস্তিত্ব,
থাকবে না তোর মায়াবী কোনো দৃষ্টির সীমানা,
থাকবে না কোনো নীল শাড়ি আর লাল টিপের বর্ণনা,
কফি হাউজের আড্ডা,
মধ্যরাতের নিয়ন আলোয় অপ্সরার চিবুকের ছোঁয়া,
থাকবে না অভিমানের সুর,
নির্ঘুম রজনীর করুণ আকুতির সাথে থাকার বাহানা,
আর মঞ্চস্থ হবে না মায়া কান্নার ছলনা।
অনেক চেষ্টা করেও…
পারিনি কবিতার একটি শব্দ লিখতে-
বুঝে গেছি তোর ছলাকলা, রেখে গেছিস তোর নৃত্যকলার নিক্বণ ছন্দ,
তার চেয়ে তুই কবিতা হয়েই থাক-যে কবিতা হবে অসম্পূর্ণ,
অসমাপ্ত বর্ণনায় থাকবে তোর কলঙ্কিত রূপ,
লোভ লালসা আর স্বার্থপরতার প্রতিচ্ছবি,
প্রতিটি কবিতায় দৃশ্যমান হবে তোর মুখচ্ছবি।
সে ই ভালো।
যেখানেই থাকিস তবুও ভালো থাকিস।