জয়দেব বসু

এখনতো তুমি চির স্থির, আমরা কয়েকজন শুধু স্মৃতিকাতর শ্যাওলা
বয়স থেকে একটি বছরও বেড়ে যাবে না, কমেও যাবে না
গোলাপের পাঁপড়ি শুধু উড়বে, বাতাসে উড়বে
ঝরে ঝরে পড়বে চারিদিকে।
দাঁত পড়ে যাবে না, চামড়া কুঁচকে যাবে না
সব চুল সাদা অথবা টাক
আমাদের প্রতিটি লোমকূপে অস্তরাগের বেহাগ
চলমান সিঁড়ির ধাপে ধাপে রাত গলে গলে পড়বে।
তোমার চোখে ছানি কাটা হবে না, পথ চলতি হাতে উঠবে না লাঠি
প্রতিটি কাঠির মুখে বারুদ, লক্ষ নিযুত এখন শুধুই হরফ, চলমান পথরেখা
দেখা অথবা অদেখা চিরকালীন তরতাজা বলিষ্ঠ এক তরুণ
পাথরের মতো স্থির হয়ে যাওয়া জল অথবা পাষাণ।
পাথরে পাথর ঘষে অগ্নি স্ফুলিঙ্গ, জ্যোৎস্না ভাসান
তোমার কবিতা, ভীষণ চাবুক
ম্যাদামারা সমাজব্যবস্থায় কথা বলে চলে অনর্গল
তেমন কোনো শিখরে উঠতে চাওনি তুমি
লাগাতে চাওনি ময়ূরপুচ্ছ
গুচ্ছ লেখায় শুধু অচেনা জগৎ
স্বপ্ন বুনে গেছো, পোড়া অতীতের ছাউনিতে
মায়া জড়ানো, আগন্তুকের ভবিষ্যৎ।
এখন তো তুমি ঝরে পড়া একটি তারা, মাটিতে হয়েছো বৃক্ষ
শেকড়ে এতো বিষ, ফলে তবু অতি আশ্চর্য এক জাদু
শব্দের পর শব্দ, দুর্বোধ্য মায়াজাল
বেড়া ডিঙোতে ডিঙোতে, হোঁচটের পর হোঁচট
যদি শেষতক কোথাও গিয়ে তবু পৌঁছনো যায়
পড়ে থাকে এক অশরীরী ছায়া, নিজের রক্তে, যে সূর্যকে করেছে লাল
আমাদের পাতা নড়ে, গোধূলি বিকেল পোড়ে।
প্রদাহ অক্ষরে
হয়তোবা ঈশ্বরের সাজানো বাগানে যে তুমি এক থরহরিকম্প
ঢুকে পড়েছিলে বিলাতি নকশাল।
অনন্যা/জেএজে