Skip to content

২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবারপ্রধান হিসেবে নারী: এবার বাড়ুক সক্ষমতা

বর্তমানে সবদিক থেকে নারী এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষা-যোগ্যতা-দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নারীদের সামগ্রিক উন্নয়ন এখন চোখে পড়ার মতো। পড়াশোনা করে শুধু নারী তার আত্মোন্নয়নই করছে না, পরিবারেরও হাল ধরছে। এই পরিবার যেমন বাবার বাড়ির পরিবার, ঠিক তেমনই স্বামীর সংসারও। নারীর এই উন্নয়ন বর্তমান নারীর সামগ্রিক জীবনের কথা বলে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, পাঁচ বছরে অবিবাহিত নারীদের মধ্যে পরিবারপ্রধান হওয়ার হার বেড়েছে। তা প্রায় ছয়গুণ। বিবাহিত নারীদের মধ্যে এই হার বেড়েছে সামান্য। আর বিধবা ও বিবাহবিচ্ছেদ হওয়া নারীদের মধ্যে বরাবরের মতো এই হার উচ্চ।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২২’ প্রতিবেদন অনুসারে, পরিবারপ্রধান হিসেবে অবিবাহিত নারীর হার প্রায় ১৭ শতাংশ। ২০১৮ সালে এই হার ছিল প্রায় ৩ শতাংশ।

বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খানাপ্রধান হওয়ার জন্য উপার্জনকারী বা বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য হতে হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

এছাড়া বিবিএসের স্যাম্পল ভাইটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (এসভিআরএস) ইন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম প্রকল্পের পরিচালক বলেন, অনেক পরিবারের পুরুষ বিদেশে আছেন। সে ধরনের কোনো কোনো পরিবারে প্রধান হচ্ছেন নারী। পরিবারে দায়িত্ব পালনের মতো সক্ষমতা বৃদ্ধির কারণেও পরিবারপ্রধান নারীর সংখ্যা বাড়ছে।

পরিবারে নারীর দায়িত্ব আজীবনই ছিল কিন্তু সেই দায়িত্ব একস্থানেই নিবিষ্ট ছিল। নারীকে ঘরের কাজেই বেশি করতে হয়েছে কিন্তু এখন আর সেই দিন নেই। এখন নারীরা ঘরে-বাইরে সমানভাবে নিজেদের যোগ্য করে তুলছেন। ফলে তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা বলে তারা বিশ্ব দরবার যেমন জায়গা করে নিয়েছেন তেমনই নিজেদের পরিবারেরও একটি স্থান করে নিচ্ছেন। পরিবারে নারী এখন শুধু গৃহিণী নয়; বরং তিনি সন্তানের অভিভাবক ও পরিবারের সর্বময় কর্ত্রী।

নারী প্রধান পরিবার নিয়ে সমাজে নানা নেতিবাচক কথা প্রচলিত যেমন আছে তেমনই নারী প্রধান পরিবারের পিছনে ইতিহাসও আছে। প্রাচীনকাল থেকেই পরিবার প্রধান ছিল নারী। পরবর্তীকালে যুগের পরিবর্তনে তা পুরুষের ওপর চলে যায়। কিন্তু পরিবার প্রধান নারী বা পুরুষ যেই হোন না কেন পরিবারকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করাই তার উদ্দেশ্য থাকে।

এমন অনেক পরিবার আছে যে পরিবারে ছেলে সন্তান নাই!সেই পরিবারগুলোতে মেয়ে সন্তানই বাবা-মাকে দেখভাল করেন। এমনকি তাদের সব দায়-দায়িত্ব তারা বিশেষভাবে পালন করেন। এখন এই নারীদের সংখ্যা কম নয়। তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো উচিত। তারা গুরু দায়িত্ব পালন করেন। আবার স্বামীর বাড়িতেও নারী প্রধান পরিবার দেখা যাচ্ছে। আগে দেখা যেত স্বামী যে পোশাক বা ব্যবহার্য জিনিস কিনে আনতেন সেটাই নারী ব্যবহার করতেন। এখন পুরুষের কাজ শুধু পুরুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। নারীরা সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। পরিবারের চাপ কারোর একার নয় মনে করেন। ফলে তারা নিজেদের কাজ এবং পরিবারের দায়িত্ব বুঝে চলেন। নারীর অগ্রযাত্রা সমাজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। নারীদের উন্নয়নকে তরান্বিত করছে। এভাবেই এগিয়ে যাক নারী। পরিবার, সমাজ ও দেশের কর্ণধার হোক।

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ