বয়সভেদে শরীরচর্চার ভিন্নতা
সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নাই। নিয়মিত ব্যায়ামে আমাদের পেশী শক্তিশালী হয়, নানারকম অসুখের হাত থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘজীবী করে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না, কোন বয়সে কোন ব্যায়াম করা ভালো। চলুন দেখে নেই কোন বয়সে কোন ব্যায়ামগুলো করতে হবে।
বিশ বছর
এই বয়সে যা ইচ্ছা তাই খেলেও তা শরীর এবং স্বাস্থ্যের উপর খুব একটা প্রভাব ফেলে না। তাই অনেকেই এসময় নিয়মিত ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। কিন্তু এই বয়সে যদি পেশী গঠনে মনোযোগ দেন, তাহলে বুড়ো বয়সে ঝরঝরে ও সুস্থ থাকার নিশ্চয়তা বাড়বে। আসুন দেখে নেই বিশ বছর বয়সে আপনি কী ধরণের ব্যায়াম করতে পারেন। – ভারোত্তলন – পুশ আপ – লাঞ্জেস প্রতিদিন অন্তত তিরিশ মিনিট করে এই ব্যায়ামের যে কোন একটি বা তিনটি মিলিয়ে করতে পারেন। সপ্তাহে দুই থেকে তিন ঘন্টা এই ব্যায়ামগুলো করুন।
তিরিশ বছর
এই বয়সে এসে ব্যায়ামের রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনুন। বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এসময় আপনাকে শরীরের সব অংশের উপকারিতার কথা মাথায় রেখে বয়য়ামের ধরণ বেছে নিতে হবে। এসময় স্ট্রেচিং ধরণের ব্যায়ামের প্রতি জোর দিতে হবে। বুড়ো আঙুলে ভর দিয়ে হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন। তিরিশ বছর বয়সে আপনাকে শরীরের উর্দ্ধ ও নিম্ন উভয় অংশের জন্য উপকারী ব্যায়াম বেছে নিতে হবে। এসময়ে করতে পারেন এমন কিছু ব্যায়াম হল- – ক্রস ট্রেইনিং – সাইক্লিং- দৌড়ানো -সাঁতার কাটা যোগ ব্যায়াম -তাই চি – নাচ
চল্লিশ বছর
এই বয়সে এসে অনেককেই পেটে জমা চর্বি জমার হাত থেকে বাঁচার জন্য লড়াই করতে হয়। নারী ও পুরুষ উভয়েরই পেশীর শক্তি কমে যায়। তবে পুরুষের ক্ষেত্রে পেশী দুর্বল হওয়ার হার তুলনামূলক বেশি থাকে যা প্রায় পাঁচ থেকে আট শতাংশ। কমে যায় হজম শক্তিও। শক্তিশালী পেশী ও হজম ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত স্ট্রেস্থ ওয়ার্কআউট বা শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম। এতে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। এই বয়সে এসে নিয়মিত ব্যয়ামের পাশাপাশি ভারোত্তলন করতে হবে।
পঞ্চাশ বছর
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নানারকম ব্যথা শুরু হয়। এসব ব্যথার সঙ্গে খাপ খাইয়েই নানারকম ব্যায়াম করতে হবে। যদি আপনার হাঁটু ব্যথা থাকে, তবে দৌড়ের পরিবর্তে সাঁতার কাটুন। এছাড়াও যেগুলো করতে পারেন তা হল-
-পিলেট – যোগব্যায়াম – অররোবিকস পিলেট এবং যোগব্যায়ামে পিঠের শক্তি বাড়ায় ও কুঁজো হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। প্রতিদিন পাঁচ মিনিট করে সগ্রহে পঁয়ত্রিশ মিনিট অ্যারোবিকস করতে পারেন। তবে ভুলেও শরীরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে এমন ব্যায়াম করা যাবে না। এতে ভয়ানক ক্লান্তি ও পেশীতে ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
ষাট বছর
হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মত রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে নানারকম ব্যায়াম। হঠাৎ পড়ে গেলে কোমরের হাড় ভাঙা রোধ করতেও ব্যায়ামের বিকল্প নাই। তবে অবশ্যই একজন ব্যায়ামের প্রশিক্ষকের পরামর্শ নেবেন। এই বয়সে যে ব্যায়ামগুলো করবেন- – ভারোত্তলন (সপ্তাহে দুই থেকে তিন বারে তিরিশ মিনিট) – ওয়াটার অ্যারোবিকস
সত্তর বছর
এই বয়সে এসে খুবই সাবধানতার সঙ্গে ব্যায়াম করতে হবে আপনাকে। ব্যায়ামের চেয়েও কর্মক্ষম থাকা বেশি জরুরী এই সময়ে। চেয়ারে বসে করা যায় এমন ব্যায়াম এসময়ের জন্য ভালো। – রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ডের সাহায্যে দুই বাহু উপরে তোলা লেগ লিফট (দেয়াল বা চেয়ারে ভর দিয়ে) অ্যারোবিকস (চেয়ার ধরে) স্ট্রেচিং মনে রাখবেন ব্যায়ামের কোন বয়স নাই। তাই সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে ভুলবেন না। সেইসঙ্গে হাঁটাচলা ও কর্মক্ষম থাকাও অত্যন্ত জরুরী। তবে আপনার যদি বিশেষ শারীরিক অবস্থা থাকে যেমন আঘ্রাইটিস, হাঁটুব্যথা, কোমরব্যথা, পিঠেব্যথা বা অন্য কোন আঘাত থাকে।
তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ব্যায়াম করুন।