পাঁচ কবিতা
চোরের মন
ঠাকুরঘরে কে আছিস রে?
আমি তো কলা খাই নি
অঘোষিত স্বীকাররোক্তি
আমরা সবাই জানি।
চোরের মন পুলিশ পুলিশ
সদা থাকে ভয়ে ভয়ে,
অন্তরে যে কাঁপন লাগে
আসেনা যে বলে কয়ে।
সে মালের বরকত নাই
হাতের বদল হয়,
চোরেরা সব অভারী বড়
সেতো ভাগ্যেরই ক্ষয়।
বুক পকেটে কষ্ট
অস্থিচর্মসার কঙ্কালময় দেহখানি
বয়সের ভারে কুজো ন্যুজ
লাঠি সম্বল করে হাঁটাহাঁটি চলে
ভগ্ন স্বরে ম্রিয়মাণ কথা বলে।
এটা ওটা খেতে পারেনা ঠিকঠাক
শক্ত-নরম, ঠান্ডা- গরম হজম হয়না আর
চুল দাড়ি সব ধারণ করেছে ধূসর পাটের বর্ণ
শখের দাঁতগুলো আর একটিও অবশিষ্ট নাই।
পরিজনদের কাছে শুধু অবজ্ঞারই পাত্র
সন্ধ্যার খানিক বাদে গল্প জমে প্রৌড়ার কাছে
জীবনের অন্তিম ক্ষণে ঝাপসা হয়ে আসে দুটি আঁখি
বুক পকেটের বিড়িতে টান দিয়ে ওঠে মরণের কাশি।
সত্যিকারের প্রণয়
জেনে রেখো ওগো প্রিয়তমা
এ প্রণয় ক্ষণিকের নয়,
বিলাসিতা বা বাজীও নয়
এতো দুটি আত্মার জয়।
কামনা বাসনা মোহ নয়
দ্বৈত হৃদয়ের মিলন,
নিদ্রাময় অলীকও নয়
সুখময় জীবনের ক্ষণ।
আবেগমাখা বচন নয়
আঙ্গুল ছুঁয়ে হাটা নয়,
ভালোবাসা অমর অমলিন
সত্যি প্রেম চিত্ত বিনয়
সেলাই করা মুখ
সেলাই করা মুখ আমার
বন্ধ থাকে তাই,
অনেক কিছু বলতে চাই
কোন উপায় নাই।
স্বাধীন দেশে থেকেও যে
বোবার মতো বাস,
কথার পাহাড় জমা হয়ে
করি যে হাঁসফাঁস।
মুখ বুজে থাকলে পরেও
কষ্টে ভাসে বুক,
বলতে চেয়েও পারিনা যে
সেলাই করা মুখ।
জীবনের সাতকাহন
সাতরঙা রঙে রাঙানো জীবনে
হাসি কান্নার সমারোহ,
কখনো কালো মেঘ শীতল বৃষ্টি
জীবনে ঝরে অহরহ।
আঁধার কালো ছাপিয়ে আসে
বাসন্তীর রঙিন রঙ,
জীবনটা নাটকের রঙ্গমঞ্চ
সাজে সবাই সঙ।
কষ্টের বন্যায় উপচে পড়ে
জীবনের আহ্লাদ,
অঙ্কুরেই স্বপ্ন মিলিয়ে যায়
জীবন তখন বিস্বাদ।
জীবনটা বড়ই বৈচিত্র্যময়
ক্ষণেই হাসি কান্না,
জীবন চলে আপন নিয়মে
কখনো সে অচেনা।