দরোজায় কড়া নড়ে
চৌদ্দ'র সেই রাতে আচমকা শহরের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল
মেঝেতে সিঁড়িতে কালো বুটের ঠুক ঠুক শব্দ
অনাহূত সেই শব্দে ঘুম ভেঙেছিল প্রভুভক্ত এক কুকুরের
অন্ধকার খুপরি ঘরে ছটফট করছিল একজোড়া কবুতর।
কোয়ার্টার, আবাসিক এলাকার দরোজার কড়া নড়েছিল।
অস্থির কিছু পা ঘরের দরোজায় ধড়াম ধড়াম লাথি মেরেছিল
প্রিয় দেশের হাত পা বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছিল তারা।
কোনো একভোরে কুয়াশায় ছেয়ে গিয়েছিল সরিষার ক্ষেত।
ফুলের মত এখানে ওখানে, বধ্যভূমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল
হাত পা বাধা এক ডাক্তারের লাশ,
চোখ বাধা প্রিয় সেই শিক্ষকের লাশ,
এবং সমৃদ্ধ মগজের শত শত মানুষের লাশ পড়েছিল;
তাঁদের বুকের ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে রক্তজবা ফুটেছিল।
এখনও চৌদ্দ ডিসেম্বর আসলে শোকের দরোজায় কড়া নড়ে
স্পষ্টতই আমি এলোমেলো গুলির শব্দ শুনতে পাই,
তারপর দেখি লাখ লাখ লাশ বিজয়ের পতাকা হয়ে গেছে।