ন্যায্য দাবির বিদ্রোহ
সকালবেলা স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে কাজে বেরোলাম
পাটুলি হয়ে যাদবপুর, যাদবপুর থেকে যোধপুর পার্ক আমার গন্তব্য স্থল
গন্তব্য স্থলে যেতে-যেতে মাঝপথে যাদবপুর ইউনিভার্সিটির সামনে রাস্তা অবরোধ
পাঁচ মিনিট;দশ মিনিট; কুড়ি মিনিট; প্রায় আধ ঘণ্টা দাড়িয়ে
তিত বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলাম ঐ আন্দোলনকারী যুবক যুবতীদের ওপরে।
ওরা চিৎকার করে বলছে
আমাদের কর্ম চাই,
আমাদের ধর্ম চাই।
আমাদের অধিকার চাই,
আমাদের প্রতিবাদ করার স্বাধীনতা চাই।
আওয়াজ গুলো আমার কর্ণপাত হওয়া মাত্রই আমার শত বিরক্তি থেমে গেল,
আমি শত ব্যস্ততার মাঝেও হঠাৎ করে শক্ত বরফের মতো শীতল পাথরে পরিণত হলাম।
ভাবলাম; হ্যাঁ ওরা তো ঠিকই বলছে,
যে কথা আমি এবং আমরা বলছি না,
যে কথা আমরা কেউই সাহস করে বলতে পারছি না
সেই কথাই ওরা বলছে।
যে কথা বাধ্য হয়ে মুখ বুজে থাকা শিশু শ্রমিক বলতে পারছে না,
যে কথা বিধবা মায়ের দুর্দশা মোছাতে চায়
যেকথা রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে বদলাতে চায়
ওরা সেই কথাগুলিই বলতে চায়।
এতক্ষণে আমি
যাদবপুর ইউনিভার্সিটির তিন নম্বর গেটের সামনে।
স্লোগান আরও জোরদার,
মাঝরাস্তায় বড় বড় নেতাদের কুশপুত্তলিকা জ্বলছে দাউ দাউ করে।
আমি মাথা নিচু করে একজন স্বার্থপর মানুষের মত
সবকিছু না দেখার ভান করে সামনের দিকে এগিয়ে যাই।
সামনেও রক্তাক্ত অবস্থায় আন্দোলনকারী
বেশ কয়েকজন যুবক আহত অবস্থায় খোঁড়াচ্ছে।
কেউ কেউ আবার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
পেছন থেকে কয়েকজন সাদা পোশাকের পুলিশ আহত আন্দোলনকারী যুবকদের সাহায্য করার চেষ্টা করতে এগিয়ে আসছে।
পুলিশের চোখেও সেদিন আমি লেখা দেখেছি দয়ার অক্ষরমালা।