নারী-শিশুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বেশি
বর্তমান সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন এক বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষ ব্যাপক সামাজিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। প্রত্যেক মানুষের ওপরই এই জলবায়ু পরিবর্তন ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। নারীর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের বৈষম্যমূলক প্রভাব সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে খর্ব করে।
অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন অন্ বাংলাদেশ ক্লাইমেট বাজেট (২০২১-২২)’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এই তথ্যগুলো উঠে এসেছে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, পরামর্শক, আলোচক, সাংবাদিক এবং স্টেকহোল্ডাররা জলবায়ু পরিবর্তনের এরূপ প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনে লৈঙ্গিক বিষয়গুলো আমলে নিতে হবে। জেন্ডার-ভিত্তিক বাজেটের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের ২৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ৮ শতাংশেরও কম বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, যা ২০২১-২০২২ অর্থবছরের মোট জাতীয় বাজেটের ৫৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ, অর্থাৎ ২৫,১২৪ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা। কিন্তু এর মধ্যে অপারেটিং বাজেটের অধীনে ১০,২৮৬ দশমিক ১৭ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বাজেটের অধীনে ১৪,৮৩৮ দশমিক ৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত বছরের বরাদ্দের তুলনায় চলতি অর্থবছরের বাজেট ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ থেকে কমে ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয় ৩৭৯ দশমিক ২১ কোটি টাকা, যা গত বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১৯ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা কম। তা ছাড়া আগের বছরের তুলনায় বাজেটে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৪২৭ দশমিক ১৯ কোটি টাকা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ১১৩ দশমিক ৩২ কোটি টাকা কমেছে।
বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া শুরু হবার কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে জলবায়ু অর্থায়ন কমে যাবে বলে আশংকার কথা বলেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সাইন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট এর প্রফেসর ড. মিজান আর খান। তিনি বলেন, ‘জলবায়ু অর্থায়নের ৮৫ ভাগ বরাদ্দ আসে স্থানীয় খাত থেকে, তাই স্থানীয় খাতকে গুরুত্ব দিতে হবে। একইসাথে নিজেদের টাকা কিভাবে খরচ হচ্ছে তা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্যে রাখতে হবে।
ওয়েবিনারে উপস্থিত মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি ফেরদৌসি বেগম বলেন, যে কোনো দুর্যোগে নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই চেষ্টায় আছে কীভাবে নারী ও শিশু-বান্ধব বাজেট প্রণয় করা যায়। সার্বিক উন্নয়ন নারী ও যুববান্ধব কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখার কথা বলেছেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির।