একলা মায়ের লড়াই
আমাদের পৌরাণিক মুনিঋষিরা জাদু জানতেন! বর দিয়ে সন্তানের জন্ম দিতেন, মনের ইচ্ছে শক্তিতে সন্তানের জন্ম দিতেন! সন্তান তো ইচ্ছে হয়েই মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকে! লোকমুখে কবিমানসে এই জন্মদানের বিস্ময়কর কতো রকম সৌন্দর্য! সুন্দরী নারীকে দেখে কাম মোহিত দেবতার বীর্য ঝরে পড়ে পদ্মকুসুমে, অলৌকিক কল্পনায় লৌকিক সন্তানের জন্ম হয়! একটি সন্তানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, মা কষ্ট পাবে, তাই কুশ দিয়ে বানিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে একই রকম দেখতে যমজ সন্তানের জন্ম হয়! কে সন্তানের মা? কে সন্তানের পিতা? নারীর জন্য লোকলজ্জা ভয় যে ছিল না, তাতো নয়l এই চরম সামাজিক ভয় থেকে বাঁচতে কর্ণকে ত্যাগ করেছিল মাতা কুন্তী!
পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ একলা মায়ের স্বাধীনতা, লড়াই, পরিচয়ের স্বীকৃতি আজও দিয়ে উঠতে পারলো কোথায়! মাতৃগর্ভেই তো সন্তানের জন্মl মায়ের অবশ্যই স্বাধীনতা আছে ইচ্ছে মতো পুরুষের বীর্য ধারণ করার! মেধাবী পুরুষের বীর্য, সৃষ্টিশীল মানুষের বীর্য, বিখ্যাত কোন পৌরুষের বীর্য, অথবা বিখ্যাত না-হতে পারে কিন্তু মন থেকে ভালো লাগে এমন সুপুরুষ প্রেমিকের বীর্য! মনের মতো একটি নতুন শিশুর জন্ম, মাতৃত্বের সৃষ্টি সাধনাl আমাদের বাস্তবের জাদুকর বিজ্ঞানীকে আত্মহত্যা করতে হয় সন্তান জন্মদানের নতুন সৃষ্টির পথ( নবজাত শিশু) উন্মোচন করতে গিয়ে! সাধনা মাত্রেই মাতৃজঠরl
ভারতবর্ষের আইন একক মায়ের পরিচয়, সন্তানের পদবি মায়ের রাখা যাবে কিনা সব কিছুকেই তো স্বীকৃতি দিয়েছেl কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজ আজও মেনে নিতে পারলো কোথায়? অভিজাত শ্রেণীর নারী, যাদের অন্তত অর্থ কষ্ট নেই, একক মায়ের লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন সেও বহু কষ্টে! পদে পদে বিচ্ছিরি প্রশ্ন তোলার পুরুষের অভাব হয় না! আর যাদের আমরা এখনো অসামাজিক মনে করি, সেই পতিতারা নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধেও অজান্তে কত পরিচয়হীন পুরুষের সন্তান জন্ম দিয়েছেন! নিদারুণ দরিদ্রতায় নিজের 'গতর' খাটিয়ে সেই সন্তানকে মাতৃ স্নেহে লালন পালন করেছেন একক মাতৃত্বের পরিচয়ে! তাদের তো সমাজ নেই, তাই সমাজের স্বীকৃতিরও পরোয়া করেননিl
নুসরতের সন্তানকে আদর l নুসরতের জন্য শুভ কামনাl