পুরাতন পোশাকই গায়ে উঠুক আরেকবার
দিন মাস বছর পেরিয়ে আবার আসছে খুশির ঈদ। আর ঈদ মানেই যেন নতুন পোশাক। কেননা, নতুন পোশাক প্রাপ্তি ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ । সবসময় ঈদের নতুন পোশাক নিয়ে থাকে বাড়তি এক উত্তেজনা। আর আমাদের ছোটবেলায় ঈদের পোশাক নিয়ে থাকতো বাড়তি আগ্রহ। কেমন হবে ঈদের পোশাক, কবে হাতে পাব আর কখন বা পড়বো। ঈদের পোশাক হাতে পাওয়ার পর দিন যেন আর কাটতেই চাইতো না।
বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই অনুভূতি হারিয়ে গেলেও ঈদের পোশাকের প্রতি এখনও রয়েছে সমান আগ্রহ। আর তাইতো ঈদের সবাই ছুটে বিপণী বিতানগুলোতে নিজেদের পছন্দ মতো পোশাক কিনতে। আর তাই এই প্রচুর ভিড় দেখা যায় বিপণী বিতানগুলোতে। তবে, বর্তমান পরিবেশ পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে নেই। করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। আর এই তালিকা থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। গত বছর মার্চে সর্বপ্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ধীরে ধীরে তা ব্যাপকভাবে সংক্রমিত হয়। যার ফলে সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনে যেতে বাধ্য হয় সরকার। আর লকডাউন অবস্থায় পালিত হয় পবিত্র ঈদুল ফিতর।
সেবার সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের ঈদ পালন করে সবাই। সবাই পুরাতন পোশাক গায়ে দিয়ে ঘরোয়া ভাবে ঈদ উদযাপন করে। এরপর ধীরে ধীরে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে তুলে নেওয়া হয় লকডাউন। তবে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারও বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত। সেখানে করোনায় মৃত্যু হার এত বেশি যে মৃতের সৎকারের জন্য গণ চিতা করা হয়েছে। ভারতের বাতাসে শুধু লাশের গন্ধ। এছাড়াও অনেক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভুগছেন অক্সিজেন হীনতায়। পর্যাপ্ত অক্সিজেন সাপ্লাই দিতে পারছে না হাসপাতালগুলো। আর সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের দেশেও। আর তাই আবারও লকডাউনে যেতে বাধ্য হয়েছে সরকার।
দিন দিন পরিস্থিতি আরো বেশি খারাপ হচ্ছে। আর তাই এমন অবস্থায় ঘর থেকে বাহিরে বের না হওয়ায় ভালো। অকারণে ঘর থেকে বের হলে ক্ষতিটা মূলত আমাদেরই। লকডাউনে যদিও খোলা রয়েছে দোকানপাট ও শপিং মল। তবুও করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে এড়িয়ে চলতে হবে জনসমাগম। এইসময়ে বন্ধু, স্বজনদের সাথে আনন্দে মেতে না উঠে বরং আরো একবার পুরাতন পোশাক গায়ে ঘরে তৈরি করি উৎসবের আবহ। এই সময়টা আমাদের সুস্থ থাকাটাই বেশি জরুরি। বেঁচে থাকলে আবারও সুস্থ পৃথিবীতে নতুন পোশাক গায়ে বন্ধু, স্বজনদের সাথে মেতে উঠা যাবে ঈদের আনন্দে।