Skip to content

৩রা মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | শুক্রবার | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিরিয়ডের সময় নারীদের ছুটি দেবে স্পেন

পিরিয়ডের দিনগুলোতে নারীদের যে অসহ্য যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবু ছুটে চলেন অদম্য নারীরা। মাসে কয়েকদিন নিয়ম করে শারীরিক অসুস্থতার মধ্য দিয়ে পার করতে হলেও এই দিনগুলোতে নারীদের নির্ধারিত রুটিনে কোনো পরিবর্তন আসে না। কেউ ছোটেন সংসারের দায়িত্বগুলো সামলাতে, কেউ ছুটে চলেন চাকরি বাঁচাতে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের পিরিয়ড নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামান না কেউ। তবে কিছু দেশ ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়েছে। পিরিয়ডের দিনগুলোতে নারীদের ছুটির ব্যবস্থা করেছে। সেই তালিকায় নতুন নাম লেখালো স্পেন৷

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়ায় নারীদের পিরিয়ডকালীন ছুটির অনুমোদন আছে। দেশগুলোতে পিরিয়ডের সময়ে নারীরা চাইলে ছুটি কাটাতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে তাদের বেতনে কোনো হেরফের দেখা যায় না। পিরিয়ডের জন্য মাসে কয়েকদিন ছুটি নিলেও বেতন একই থাকে তাদের। এই চারটি দেশের সঙ্গে এবার নিজেদের নাম লেখালো স্পেন। প্রথম কোনো ইউরোপের দেশ হিসেবে পিরিয়ডকালীন ছুটির ব্যবস্থা করলো দেশটি।

গত ১৭ মে স্পেনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়। খসড়ায় মাসে তিন অথবা পাঁচ দিনের ছুটির প্রস্তাব করা হলেও মন্ত্রিসভা কোনো সময় বেঁধে না দেওয়ায় পিরিয়ড জটিলতা যত দিন চলবে, ততদিন পর্যন্ত ছুটি নিতে পারবেন স্পেনের নারীরা। তবে এজন্য শর্তও জুড়ে দিয়েছে মন্ত্রণালয়। পিরিয়ডের সময় ছুটি নিতে হলে সঙ্গে চিকিৎসকের সনদ থাকতে হবে।

ভারতেও কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানি তাদের নারী কর্মীদের পিরিয়ডের দিনগুলোতে ছুটি গ্রহণের সুবিধা দিয়ে থাকে। এছাড়া, বিহার সরকারের নারী কর্মীদের জন্যও এমন একটি আইন আছে। বিহার সরকারের কিছু বিভাগের নারীকর্মীরা ‘শারীরিক কারণে’ প্রতি মাসে দুদিন ছুটি পান।

স্প্যানিশ গাইনোকোলজি অ্যান্ড অবস্টেট্রিক্স সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, পিরিয়ডের সময় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী গুরুতর ব্যথায় ভোগেন। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ডিসমেনোরিয়া। ডিসমেনোরিয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে তীব্র পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা, ডায়রিয়া ও জ্বর। এসব জটিলতা নিয়ে একজন নারীর পক্ষে রোজ কর্মক্ষেত্রে যাওয়া ও সঠিকভাবে কাজে মনোনিবেশ করা অনেকটাই চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।

তবে পিরিয়ডকালীন এই ছুটি নিয়ে রয়েছে অনেক আলোচনা-সমালোচনাও। কেউ কেউ মনে করেন, নারী-স্বাস্থ্যের জন্য এই সিদ্ধান্ত অনেকটাই উপকারী। আবার অনেকেই মনে করেন এ সিদ্ধান্তের কারণে নারীরা কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যেরও শিকার হতে পারেন। এ আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে ইতালিতে এমন একটি প্রস্তাব দেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে আইনটি আর পাস হয়নি।

তবে বর্তমানে স্পেনে এ প্রস্তাব অনুমোদন পাওয়ায় নতুন করে আলোচনায় পিরিয়ডকালীন ছুটি। এক্ষেত্রে বেশিরভাগই ইতিবাচক চোখেই দেখছেন এই প্রস্তাবকে। প্রতিটি দেশে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন আইন তৈরি করা উচিত বলেও মনে করছেন অনেকে।

অনন্যা/জেএজে

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ