তিনটি কবিতা
হাঁসের ছানা
হাঁসের ছানা হলুদ ডানা
চোখ দুটো তার টানা,
তুলতুলে লোম মখমলে ওম
ধরতে তাদের মানা।
বিলের জলে হাওয়া দুলে
শাপলা শালুক ফুলে,
খায়’যে খানা হাঁসের ছানা
ছোট্ট শামুক তুলে।
মায়ের সাথে দিবস প্রাতে
দল সাঁতারেই মাতে,
দিচ্ছে পাড়ি হাঁসের সারি
দারুণ মজা তাতে।
খোকা খুকি দিচ্ছে উঁকি
পিছলে পড়ার ঝুঁকি,
গাছের মালি কাঠবিড়ালি
খেলছে লুকালুকি।
হাঁসের ছানা আছে জানা
একা যেতেই মানা,
বিল ও ঝিলে ভূবন চিলে
দিতে পারে হানা।
বৃষ্টিভেজা কাশফুল
বর্ষার মেঘগুলো ভেসে আসে এ শরতে,
ছুঁয়ে দিতে কাশফুল বৃষ্টিভেজা পরতে।
দুঃখগুলো মেঘের মতো
ডানা ঝাপটায় অবিরত,
ঝরে পড়ে শিশিরসিক্ত শিউলি ফুলেতে।
ভালোলাগে ঐ আকাশ বিস্তীর্ণ বনভূমি,
শুভ্রঠোঁটে কাশফুল দিগন্তকে দেয় চুমি।
মনের যতই লেনাদেনা
সুখ-দুঃখেই বাজে বীনা,
নীরব রাতের বুকে ভেসে ওঠো সেই তুমি।
শরতের মাঝে আসে বৃষ্টিভেজা মৌন সুখ,
শুভ্রতার ডানা মেলে কাছে টানে চেনামুখ।
সঙ্গী দূরের চাঁদ-তারা
বিষণ্ণতায় দিশেহারা,
তুমিহীনা ছন্নছাড়া কাটে না যে মনের দুখ।
স্মৃতির জানালা
ওরা প্রায়ই আসে–
স্মৃতির জানালা খুলে ঢুকে পড়ে
প্রিয় ঝর্ণা, পাহাড়, সমুদ্র সৈকত,
ঐ আকাশ, কাশফুল, ঝুমবৃষ্টি।
শরতের আলো-আঁধারি রাতে
ওরা চিঠি নিয়ে আসে,
আমার কিছু ফেলে আসা চিঠি।
আমার শরীর ভিজিয়ে দেয় ঝর্ণা
পাহাড়ি বুনোফুল ছুয়ে দেয় মন,
অন্ধকার ভেদ করে ঢুকে যায়
সমুদ্র সৈকতের একমুঠো রোদ্দুর।
স্বপ্নভাঙা বুকে জোনাকির সুর
সুরমূর্ছনায় ভাসে প্রেমের পদাবলি।
ওরা ফিরে যায় শিশিরসিক্ত ভোরে,
আমার চোখে শরতের নীলাকাশ
তবু কবিতায় নামে বিরহের ঝুমবৃষ্টি।