চির-বিচ্ছেদ
সেদিন সে এসেছিল, বসেছিল পাশে,
চোখের জলে বেদনা মিশিয়ে, লুকিয়েছিল সেই চোখের জল,
কি আশ্চর্য আনন্দ হচ্ছিল আমার, যেন কোন পিশাচ হৃদয় অবিকল, যেন সবকিছুই ভ্রান্তি, যেন এ জীবন কিছুই নয়, কিছুই নয় এই ক্ষণ, শুধুই মায়ার ছল।
বলেছিল, কেমন আছি, আহ, কত বছর পর,
হাত দুটি যেন কেঁপেছিল থর থর, ছোঁয়ার আশায়
পুরনো অভ্যাস মত, সেই সব দুর্লভ দিনের নষ্ট স্মৃতির ভাষায়।
আমি শুধু বসেছিলাম নির্বাক, নিরন্তর, যেন কোন নিভে যাওয়া শিখাটির পাশে,
সেই প্রথম দিনের মত, পুরনো অভ্যাসে,
শুনে শুনে তার প্রশ্ন কিছু আর,
ভয়ে ভয়ে যেন বিভ্রান্ত চাহনি তার, যেন দেখেও না দেখার মত,
তবুও হাসি পায়, কত কষ্টে চেপে রেখেছি, দীর্ঘ শ্বাস, আর ক্ষত, শত শত সমুদ্রের মত।
তারপর সন্ধ্যা ঘনায়ে এলো, দুজনেই নিশ্চুপ, যেন কোন মৃত কবর দুটি পাশাপাশি,
হঠাৎ জেলেছে ধূপ, ক্ষুদ্র, অতি তুচ্ছ আলোকরাশি।
সে আলোয় কি দেখা যায় আর, অস্পষ্ট অতীতের ঝাপসা ছবি
বল? যদি জানতে চাইতাম, উত্তর ছিল কি তোমার? হে নষ্ট বিলাশ, নষ্ট করেছি তো সবি
তবে আজ আর কেন এমন মুখোমুখি বসিবার এই ছলনার অভিপ্রায়
সামান্য কিছু প্রশ্ন শুধু, তার উত্তর দিলে কি আসে যায়?
তারপর ধীরে, সে চলে গেল। আর কোন প্রশ্ন করেনি।
কিছু দূরে তখনো তাকে দেখা যায়, শেষ সন্ধ্যা আলোর অতি ক্ষীণ রেখায়
আমি শুধু বসে চেয়ে অপলক বিভ্রান্ত চোখে,
জলের সাথে বেদনা মিশায়ে ঝাপসা সে স্মৃতি জমিয়েছি বুকে।