Skip to content

৮ই মে, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | বুধবার | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে স্বাভাবিক জন্ম দানে ব্যর্থ!

স্বাভাবিক জন্মদানে গর্ভবতী মায়েরা কেনো ব্যর্থ হচ্ছে? কেনো তাদের সিজার পদ্ধতির সাহায্য নিতে হচ্ছে, কেনো তাদের আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে?  এক জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, বর্তমান সময়ে ১০ জন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে ৭জনই স্বাভাবিক জন্ম দানে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেকর প্রথম সন্তান স্বাভাবিক ভাবে জন্ম হলেও ২য় সন্তানের ক্ষেত্রে ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। তাদের ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে সিজার পদ্ধতি গ্রহণ করতে হয়। কেননা আমারা খাল কেটে কুমির ডেকে আনতে ভালোবাসি।

 

তবে এর প্রধান কারণ হচ্ছে আল্ট্রাসনোগ্রাফি। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ২৬ সপ্তাহ বয়সে ১ থেকে ২ বার ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে পরীক্ষা করে, ভ্রূণের স্বাভাবিক অবস্থা জানার জন্য। সম্ভব হলে আরও একবার পরীক্ষা করেন,বার বার এই পরীক্ষা করার কারণে মাতৃগর্ভে ভ্রূণকে ঘিরে জেলি জাতীয় পদার্থ থাকে এর রাসায়নিক বন্ধন ভেঙে যায়। যাকে আমরা সাধারণত পানি নামে অবহিত করে থাকি, কারণ আল্ট্রাসনোগ্রাফি হচ্ছে একটি উচ্চ কম্পাঙ্ক শব্দের প্রতিফলনের মাধ্যম।

 

এই শব্দের কম্পাঙ্ক ১থেকে ১০ মেগাহার্টজ যা মাতৃগর্ভে আবদ্ধ পানির বন্ধন ভাঙতে প্রায় ১ থেকে ২ মেগাহার্টজ শব্দের প্রয়োজন হতে পারে, এর থেকে কয়েক গুণ বেশি। তাই ডাক্তার যখন গর্ভবতী মায়ের আল্ট্রাসনোগ্রাফ  করার সময় পেটের উপর ট্রান্সডিউসর এক স্থান হতে অন্য স্থানে নড়াচড়া করান তখন হিম শীতল তাপ বা শব্দের অনুভূত হয়। যা পেটের ভিতর আঘাত হানছে বলে মনে হয়, ঠিক তখনি মাতৃগর্ভে ভ্রূণকে ঘিরে যে পানি আবদ্ধ থাকে এর বন্ধন ভেঙে যায়। কারণ আল্ট্রাসনোগ্রাফি উচ্চ কম্পাঙ্ক শব্দের প্রতিফলনের মাধ্যম হলেও যান্ত্রিক উপায়ে ০-১ ডিগ্রী তাপমাত্রা সৃষ্টিতে সক্ষম। আর এই ০-১ ডিগ্রী তাপমাত্রা মাতৃগর্ভে অমরা প্লান্টে ভ্রূণকে ঘিরে পানি আবদ্ধ থাকে এর বন্ধন ভেঙ্গে ফেলে। 

 

কারণ আমরা জানি যে কোন তরল পদার্থ জমাট বদ্ধ হলে এর বন্ধন ভাঙতে বায়ু ও তাপের প্রয়োজন হয়, আর যখন বন্ধন ভেঙে যায় তখন কণাগুলো ছোটো ছুটি করে, আন্ত আণবিক শক্তি কমে যায়। আর কখনো জমাট বদ্ধ হতে পারে না, সময়ের আগে পানি পড়ে যায় বা প্রসবের সাথে বেরিয়ে আসে, যা অনেকে বুঝতে পারে না। অর্থাৎ ভ্রূণের সাথে পানির আবদ্ধ না থাকায় সময় পার হয়ে গেলেও প্রসব বেদনা উঠে না। কারণ ভ্রূণকে ঘিরে যে পানি আবদ্ধ থাকে তা প্রসব বেদনা সৃষ্টি ও স্বাভাবিক জন্মদানে প্রধান ভূমিকা রাখে, তা সঠিক সময় মাতৃগর্ভে উপস্থিত না থাকায় প্রসব বেদনা উঠে না। এ কারণে স্বাভাবিক জন্মদানে ব্যর্থ হয়।

 

সময়ের মধ্যে সন্তান প্রসব না করায় মাতৃগর্ভে সন্তান প্রসব পায়খানা করে থাকে এবং তা ভক্ষণ করে, নড়াচড়া করে না, এমন তড়িৎ মুহূর্তে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার সিজার পদ্ধতি ব্যবহার করে, এতে অনেক সময় মা মৃত্যু বরণ করে বা সন্তান মৃত্যুবরণ করে। তাই নিজের পায়ে নিজে কুড়াল না মেরে প্রয়োজন বোধে একবার পরীক্ষা করতে পারেন। আর সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যেনো আঘাত না লাগে, কোন কারণে আঘাত লাগলে পানি পড়ে যাওয়া সহ ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে, এবং স্বাস্থ্য সম্মত খাবার ও নিয়মিত ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজন।
 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ