Skip to content

৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ | রবিবার | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রিকেট দিয়েই বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন সুমনার

মেয়ে হিসেবে ক্রিকেটে আসা আমাদের মত দেশে কিছুটা বাধা বিপত্তির হলেও, নিরবচ্ছিন্ন ভাবেই ক্রিকেট দুনিয়ায় পা রাখতে পেরেছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের মাঠ তাকে আকৃষ্ট করেছিলো। মাঠের বাইরে সবার খেলা উপভোগে পাশাপাশি মাঠের সীমানায় নিজেকে দেখার স্বপ্ন বরাবরই ছিল। 

 

তিনি মনে করেন, ক্রিকেট শুধু একটি খেলাই নয়। বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার একটা বড় মাধ্যম ক্রিকেট।  বিশ্বের বুকে লাল সবুজের নিশান উড়ানোর শক্তিশালী মাধ্যম তো এই ক্রিকেটই।

 

২০১৮ সালের ৬ই মে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ ঘটে সুমনার। ২০১৮ সালের ২০ মে দক্ষিণ আফ্রিকা নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে টি—টুয়েন্টিতে অভিষেক করেছিলেন তিনি। জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা বলেন, ক্রিকেটের শুরুটা নিজ ইচ্ছেতেই, প্রাধান্য পেয়েছি পরিবারের কাছ থেকে। যেহেতু ভালো খেলতাম পরিবারের সবাই উৎসাহ দিতেন, আমার স্বপ্নের জায়গা যেহেতু ছিল ক্রিকেট সেহেতু আমার স্বপ্ন বাস্তবায়নেই উৎসাহিত করত সবাই।

বাসায় ছোট ভাইদের সাথে ক্রিকেটের অনুশীলন করতাম নিয়মিত। ছোটবেলায় সমবয়সী ছেলেদের চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলতাম। বাবা আমার জন্য ক্রিকেটের সরঞ্জাম কিনে দিতেন। প্রায় সব খেলাতেই ভালো করতাম তাই পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বাবার সরকারি চাকুরীজীবী, চাকুরীর সুবাদে জন্ম হয় নীলফামারীতে, তবে এই উদীয়মান তরুণীর শৈশব কাটে রংপুরেই। সবাই রংপুরের মেয়ে হিসেবেই চিনেন।

 

এই নারী ক্রিকেটার বলেন, ২০১০ সাল থেকে ক্রিকেটের জাতীয় পর্যায়ে প্রফেশনালি ভাবে যাত্রা শুরু হয়, বাসায় বসে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলা দেখা টানতো অনেক। বাংলাদেশের খেলা দেখার জন্য স্কুল ফাঁকি দিতাম, ক্রিকেট খেলার জন্য স্কুল পালিয়েছি অনেকদিন। এরপর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেসপি) ভর্তি হই, পড়াশোনা আর খেলোয়াড় হিসেবে ওঠে আসা সেখান থেকেই। সবেমাত্র ক্রিকেটের যাত্রাটা শুরু। এখনো অনেক পথ যাওয়ার বাকী, দেশকে এগিয়ে নিতে ক্রিকেটের বহুদূর পথ হাটতে চাই। ক্রিকেট দিয়ে জায়গা করে নিতে চাই মানুষের মনে। পড়াশোনা চালিয়ে যাবো, ক্যারিয়ারে ধরে রাখবো ক্রিকেটকেই। পড়াশোনা ও ক্রিকেটের সুবাদে এখন অস্ট্রেয়েলিয়াতে আছেন ব্যাটিংয়ের ডান—হাতি ও বোলিংয়ে ডান—হাতি অফব্রেক এর এই উদীয়মান নারী ক্রিকেটার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এ বছর অস্ট্রেলিয়ার ব্যাংকসটাউন স্পোর্টস ওমেন'স ক্রিকেট ক্লাব এর বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃতি পান বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের এই ক্রিকেটার।

 

ক্রিকেটে নারীদের সবচেয়ে বড় বাধা কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিবার যদি সমর্থন করে তাহলে মেয়েদের ক্রিকেটে আসতে সহজ হয়, তবে নারীদের ক্রিকেটের মূল্যটা ছেলেদের ক্রিকেটের তুলনায় কিছুটা কম। পেশা হিসেবে ছেলেদের ক্রিকেটকে যেভাবে দেখা হয় সেভাবে দেখলে নারীদের ক্রিকেটের বাঁধা দূর হয়ে যাবে। দেশের সুনাম বয়ে আনার শক্তিশালী মাধ্যম হল ক্রিকেট।  ক্রিকেটের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে চিনেছে অনেক রাষ্ট্র। দেশের পরিচিতি ও দেশের সুনাম বয়ে আনতে ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে, নারীদের ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়াতে হবে।

 

দেশে নারীদের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে রংপুরে আরিফা জাহান বীথি যেমন ওমেন ড্রিমার ক্রিকেট একাডেমি চালাচ্ছেন; বিনামূল্যে মেয়েদের ক্রিকেটের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, এরকম উদ্যোগকে আরও প্রসারিত করলে দেশে নারীদের ক্রিকেট আরও একধাপ এগিয়ে যাবে, বীথির মানবিক বিবেচনায় বিনামূল্যে ক্রিকেটের প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়টি বেশ প্রশংসনীয়। ভালো কাজে এভাবেই এগিয়ে যাক বাংলাদেশ।

 

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ