শিশুর করোনা পরবর্তী স্কুল প্রস্তুতি
করোনা ভাইরাসের তাণ্ডবে দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে শুরু হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা। কিন্তু দীর্ঘ বিরতিতে শিশুদের মানসিক অবস্থায় এসেছে কিছু ভিন্নতা। তাই স্কুল খোলার আগেই দরকার কিছু আগাম প্রস্তুতি নেয়ার। চলুন তবে দেখে নেয়া যাক কিভাবে নিতে পারেন সে প্রস্তুতি:
১. করোনা সম্পর্কে শিশুদের ধারনা খুবই সীমিত বা নেই বললেই চলে। তাই সবার প্রথমে শিশুদের করোনা সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানে কি তা শিশুদের বোধগম্য হবে না। তাই তাদেরকে সবার আগে এ বিষয়ে শিখিয়ে নিন। যেমন, করোনা থেকে বাঁচতে বাইরে মাস্ক পরা, বারবার হাত ধোয়াসহ পরস্পর থেকে দূরে থাকা ইত্যাদি। এগুলো এখন থেকেই শিশুকে বারবার মনে করিয়ে দিন। স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে আগের মতো হৈ-হুল্লোড়, পথে বাইরের খাবার খাওয়া যাবেনা, এখন থেকেই শিশুকে এ বিষয় সতর্ক করুন। এ ছাড়া স্কুল কর্তৃপক্ষ করোনাকালে যেসব নিয়ম-কানুন চালু করে সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলার উপদেশ দিন। বাসায় প্রবেশের আগে ভালো করে হাত ধুয়ে ও জুতা স্যানিটাইজ করার উপায় দেখিয়ে দিন।
২. সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চললেও পুরোপুরি বিদায় নেয়নি করোনা ভাইরাস। তাই শিশুদের স্কুলে আনা নেওয়ার সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ সতর্কতা শুধু শিশুর জন্যই নয় শিশুদের যারা আনা-নেওয়ার কাজটি করবেন তাদের জন্যও বটে। ঘরে যদি বয়স্ক মানুষ থাকেন তাহলে অবশ্যই তাঁদের থেকে স্কুল ফেরত সন্তানকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
৩. প্রায় একবছর এর বিরতির পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও আসতে পারে নতুন রুটিন। সেক্ষেত্রে দেখা যাবে, ক্লাসের মধ্যে গ্যাপ থাকবে অথবা সপ্তাহের বিভিন্ন দিন বিরতি দিয়েও স্কুল চালু করা হতে পারে। যা হবে শিশুর পূর্ববর্তী রুটিন থেকে একদম ভিন্ন। তাই এ বিষয়ে শিশুকে খাপ খাইয়ে নিতে হলে সবার আগে এ বিষয়টা অভিভাবক হিসেবে আপনার খেয়াল রাখতে হবে । সন্তান যাতে নতুন ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, সে জন্য ওকে এখন থেকেই তৈরি করা শুরু করতে পারেন।
৪. প্রায় একবছর থেকে লেখাপড়ার সাথে সরাসরি সংযোগ নেই শিশুদের। এর মধ্যে আবার অটো প্রমোশন পেয়ে ওপরের ক্লাসে উঠে গেছে তারা। কিন্তু পড়াশোনার গ্যাপটি রয়েই গেছে। এই সময়টাতে বেশিরভগ শিশু ভিডিও গেমস, মোবাইল, বিভিন্ন খেলাধুলাসহ নানা কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ জন্য তাদের বইয়ে ফেরাতে আগের ক্লাসের বইগুলো আবার পড়তে দিতে হবে। এটা না হলে পূর্ববর্তী পাঠক্রমের ধারাবাহিকতা থেকে শিশুরা বাদ পড়বে। পরের ক্লাসের পাঠ বুঝতে অসুবিধায় পড়বে।