Skip to content

১৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ | মঙ্গলবার | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউসরা মারদিনি: শরণার্থী থেকে অলিম্পিয়ান বনে যাওয়ার গল্প!

এক বছর আগেই সিরিয়ার উদ্বাস্তু তরুণী ভূমধ্যসাগরে ভেসে বেড়াতে হচ্ছিলো। ছিলোনা কোন নিশ্চয়তা কিংবা নিরাপত্তার আশ্বাস। আর ঠিক এক বছর পরেই তাকে দেখা গেলো অলিম্পিকের শরণার্থী দলে। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সিরিয়া ছেড়ে ইউসরা আর তার বোন সারা একসাথে পালিয়ে আসেন। দামাস্কা থেকে বৈরুত, ইস্তানবুল এবং অবশেষে তুরস্কে চলে আসেন তারা। মূলত কোনোমতে ইউরোপে পাড়ি দিতে পারলেই নিজেদের জন্যে ক্ষণিক নিরাপত্তা খুঁজে পাবেন এই বিশ্বাস। 

 

ইউসরা মারদিনি: শরণার্থী থেকে অলিম্পিয়ান বনে যাওয়ার গল্প!

 

তুরস্ক থেকেই গ্রিক দ্বীপ লিসবনের কোণ দিয়ে তারা ভূমধ্যসাগরে পাড়ি দেন। এসময় কোন এক বিপর্যয়ে দুলে ওঠে তাদের নৌকা। আর এদিকে নৌকাতে এই দুবোন বাদে কেউ সাঁতার কাটতে জানেন না। বার্লিনের প্রেসে নিউজের অভিজ্ঞতাই জানাচ্ছিলেন অষ্টাদশী এই তরুণী, "সমুদ্রে ডুবে মরতে হলে আমার জন্যে খুবই লজ্জার ব্যাপার হতো। কারণ আমি নিজেই একজন সাঁতারু।" ঠিক ওই ঘটনার পর থেকেই ইউসরা সমুদ্রকে ঘৃণা করতে শুরু করেছে। 

 

ইউসরা মারদিনি: শরণার্থী থেকে অলিম্পিয়ান বনে যাওয়ার গল্প!

 

ইউসরা আর সারা দুজনই পানিতে নেমে নৌকাটিকে ঠেলে তীর পর্যন্ত নিয়ে আসে। তার এক বছর পর ইউসরার মনে হতে শুরু করে এই সাঁতার ইউসরার জীবন বদলে দিতে পারে। তাই টানা এক বছর জার্মানির বার্লিনে অলিম্পিকের জন্য প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। জার্মানিতে থাকাকালীনই তিনি “দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ” এর জন্যে মনোনীত হন। ১০০ জন ফ্রি স্টাইলার এবং বাটারফ্লাই স্ট্রোকের জন্যে মোট ৪৫ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ৪১ তম হয়ে শেষ করেন। যদিও দু বছর সাঁতারের বাইরে থাকায় পরের রাউন্ডেই তাকে বাদ পড়তে হয়। 

 

ইউসরা মারদিনি: শরণার্থী থেকে অলিম্পিয়ান বনে যাওয়ার গল্প!

 

কিন্তু দ্রুতই পরিশ্রম করে নিজের পুরনো ফর্ম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হয় ইউসরাকে। অলিম্পিকে ৯.২১ মিনিটে নিজের সাঁতার শেষ করায় বেশ খুশি ইউসরা। তবে বুঝতে পেরেছেন পূর্বের কিছুদিনের আতঙ্ক এবং বিশৃঙ্খলায় নিজের সাঁতারের ফর্ম হারিয়ে ফেলেছেন অনেকটা। সে কথাও তিনি জানিয়েছিলেন সাংবাদিকদের। তিনি জানান, “অনেক ছোটবেলা থেকেই চেয়েছিলাম এখানে আসতে। দু’বছর পর আবার প্রতিযোগিতামূলক সাঁতারে ফিরেছি তা বিশ্বের সেরা সাঁতারুদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে পেরে ভালো লাগছে।”

 

ইউসরা মারদিনি: শরণার্থী থেকে অলিম্পিয়ান বনে যাওয়ার গল্প!

 

ইউসরার চোখ এখন পুরোপুরি টোকিও অলিম্পিকের দিকে। যেখানে ইউসরা শুধুমাত্র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের আনন্দেই খুশি নয়। বরং পদকের দিকেই সম্পূর্ণ মনোযোগ তার। ইউসরাকে একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়েই আসতে হয়েছে বিশ্বমঞ্চে। শুধুমাত্র অধ্যবসায় এবং পরিশ্রম যেকোনো মানুষকে তুলে আনতে পারে যেকোনো মঞ্চে। তারই এক অনন্য উদাহরণ যেন ইউসরা।

 

 

ডাউনলোড করুন অনন্যা অ্যাপ