চিরতরে হারিয়ে যাবে চকোলেট!
ছোট-বড় যেকোনো বয়সের মানুষেরই পছন্দের তালিকায় থাকে চকোলেট। চকোলেট প্রেমীদের সংখ্যা নেহাত কম নয়। কিন্তু হঠাৎ যদি চকোলেট প্রেমীরা জানতে পারেন, আর কয়েকবছর পর আপনার হাতের নাগালে থাকবে না চকোলেট। তবে? প্রথমবার শুনে হয়তো মুচকি হেঁসে বলছেন, 'এ আবার হয় নাকি?' অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনটাই আশঙ্কা করছেন পরিবেশিবিদরা। তবে চলুন কারণটা জেনে আসা যাক।
দিন দিন ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। আর গতি যদি অব্যাহত থাকে। আগামী ১০ বছরেই চকোলেটের উৎপাদন প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কৃত্রিম উপায়ে চকোলেট তৈরি নিয়ে গবেষণা চলছে। কিন্তু সে চকলেট কি আসল চকোলেটের ধারেকাছে পৌঁছোতে পারবে?
পৃথিবীর বেশির ভাগ চকোলেট উৎপাদন হয় আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের দুই দেশ— আইভোরি কোস্ট এবং ঘানায়। দুই দেশে সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকায় চাষ করা হয় কোকোয়া গাছ। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে তাপমাত্রা। তাপমাত্রার একটু ওঠানামায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে উৎপাদন।
বিপত্তি তো এখানেই। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, আগামী ৯-১০ বছরের মধ্যে এই এলাকার গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেড়ে যাবে। যার ফলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে এই গাছের ফলন। তবে শুধু গরমই নয়, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তাতে আইভোরি কোস্ট এবং ঘানার এই অঞ্চলগুলো পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে। তা ছাড়াও আছে বিশেষ ধরনের ছত্রাকের আক্রমণ। জলবায়ু পরিবর্তনে ছত্রাকের বংশবৃদ্ধি বেশি হয়।
এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে কোকোয়া গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ‘মার্স’ নামের চকোলেট বার কোম্পানি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে কোকোয়া গাছকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করছে। চেষ্টা চলছে কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে সেখানে কোকোয়ার চাষ করার।
যত পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেন আশংকা তো থেকেই যাচ্ছে। আর বেশি দিন পাওয়া যাবে না চকোলেট। একটা পর্যায়ে চকোলেটই হয়ে যাবে আভিজাত্যের পরিচয়। মধ্যবিত্তের কাছে চকোলেট মানে হবে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন। মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যে হয়তো টেনেটুনে আর ১০ বছর। আর বছর ৪০ পরে পুরোপুরি হাওয়ায় মিশে যেতে পারে চকোলেট।