রান্নায় যে ভুলগুলোর দিকে নজর রাখা উচিত
রান্না করার সময় অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের অজান্তেই আমাদের দ্বারা কিছু ভুল হয়। রান্নার পর্ব শুরুই হয় ভুল থেকে। এরপর ধাপে ধাপে এত ভুল হয় যে শেষমেশ খাবারের প্লেটে কোনো পুষ্টি উপাদান থাকে না। তাই রান্নার সময় আমাদের কিছু দিকে নজর দেয়া উচিত।
সচরাচর রান্নায় আমরা যে ভুলগুলি করে থাকি
আমরা রান্নার আগে সবজি কেটে যে পানিতে ডুবিয়ে রাখি তা ঠিক নয়। দীর্ঘক্ষণ সবজি পানিতে ভিজিয়ে রাখলে দেখা যায়, ময়লা কীটনাশকের সঙ্গে দূর হয় ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি-এর ৪০ শতাংশ। তবে ত্বক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবজি কাটার আগে ভালোভাবে ধোয়া উচিত। আর কাটার পর সঙ্গে সঙ্গে রান্না করা উচিত। ফাইবার ও পুষ্টির কথা ভাবলে খোসা না ছড়ানোই ভালো।
আমাদের ধারণা, গরম কড়াইতে তেল দেওয়ার পর যতক্ষণ না ধোঁয়া ওঠে ততক্ষণ পেঁয়াজ, সবজি বা মাছ দিতে নেই। কিন্তু এ ধারণা ভুল। প্রতিটি তেলের নির্দিষ্ট স্মোক পয়েন্ট থাকে, অর্থাৎ যে তাপমাত্রায় তেল ভেঙে গিয়ে ধোঁয়া ওঠে৷ এই ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ে যায় উপকারী ফ্যাটি এসিড৷ তৈরি হতে শুরু করে ফ্রি-র্যা ডিক্যালস নামের ক্ষতিকর উপাদান৷ হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, স্ট্রোক, আলঝেইমার, ক্যান্সার ইত্যাদি রোগের মূলে যার হাত আছে৷ কাজেই তেল হালকা গরম হলেই তাতে ফোড়ন দিন।
তেলে ভাজার সমস্যা ও সমাধান
১. একবার ব্যবহার করা তেল ছেঁকে ভাজলে ভিটামিন ও প্রোটিনের পরিমাণ কমে৷ বাড়ে ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট, ওজন, অপুষ্টি এবং হাই প্রেশার–কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোকের আশঙ্কা৷
একমাত্র নারকেল তেলের স্মোক পয়েন্ট বেশি বলেও তেলের গুণাগুণ অবিকৃত থাকে।
৩. পুষ্টিবিদের মতে, স্বাদের খাতিরে সপ্তাহে এক আধবার ভাজা পোড়া অল্প করে খেতেই পারেন৷ তবে ছাঁকা তেলে না ভেজে কড়াইতে অল্প তেল দিয়ে ভাজুন।
পোড়া তেল কি করা উচিত?
পোড়া তেল পুনরায় ব্যবহার করা যাবে কিনা তা নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর৷ যেমন কোন তেলে কত তাপমাত্রায় ভাজা হয়েছে, তেল ঠান্ডা হওয়ার পর কি ভাবে তাকে রাখা হয়েছে ইত্যাদি৷ কাজেই মাঝারি তাপে অল্প সময় ধরে ডিপ ফ্রাই করলে পরে আরেক বার সেই তেলে রান্না করতে পারেন৷ তবে অবশ্যই ছেঁকে নিতে হবে।
রান্নার সময় এই বিষয়গুলির দিকে আমাদের অবশ্যই নজর দিতে হবে। তা না হলে শরীরের ক্ষেত্রে তা উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে।