কাঠবিড়ালির সঞ্চয় করা ৩২ হাজার বছরের প্রাচীন বীজ থেকে জন্ম নিল ফুলের চারা!
৩২ হাজার বছরের পুরনো বীজ, যে বীজ সঞ্চয় করে রেখেছিলো কাঠবিড়ালি। তার থেকেই জন্ম নিলো ফুলের চারা। আর সৃষ্টি করলো ইতিহাস। ভেঙে দিলো প্রাচীনত্বের রেকর্ড। এর আগে প্রাচীনতম যে বীজ থেকে গাছ জন্ম নিয়েছিল, তার বয়স ছিল ৩০ হাজার।
গবেষকদের একটি দল এই বীজ খুঁজে পান রাশিয়ার উত্তর পূর্ব সাইবেরিয়ায় কোলাইমা নদীর তীরে। রেডিয়ো কার্বন ডেটিং নিশ্চিত করেছে, ৩২ হাজার বছর আগে তুষার যুগে বীজগুলি চাপা পড়েছিল। বীজগুলো খুঁজে পাওয়া যায় ভূস্তর থেকে ১২৪ ফুট নীচে পারমাফ্রস্টের স্তর থেকে। প্রাগৈতিহাসিক ম্যামথ, বাইসন এবং উলি গন্ডারদের হাড়ের অংশও মিশেছিল ওই স্তরে। এই পারমাফ্রস্ট হল একটি বিশেষ ভূমিরূপ, যা পাওয়া যায় উত্তর ও দক্ষিণ দুই মেরুসহ বিশ্বের চির শীতল অংশে। যখন কোনও ভূভাগের তাপমাত্রা ন্যূনতম ২ বছর বা আরও দীর্ঘ সময় ধরে একটানা ০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম থাকে, তখন এই ভূমিরূপ তৈরি হয়।
খুঁজে পাওয়া বীজের মধ্যে ছিল পরিণত এবং অপরিণত দুই ধরনের বীজই। প্রাণী এবং উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের ধারণা, ৩২ হাজার বছর আগে এই বীজগুলো জমিয়ে রেখেছিল সাইবেরিয়ান কাঠবিড়ালি। এর পর পরিণত বীজগুলো নিজেই নষ্ট করেছিল প্রাণীটি। হয়তো সহজাত প্রবণতায় বীজ থেকে অঙ্কুরোদ্গম আটকানোর চেষ্টা করেছিল ছোট্ট প্রাণীটি। কিন্তু পারমাফ্রস্ট থেকে প্রাপ্ত অপরিণত কিছু বীজের মধ্যেও অঙ্কুরোদ্গমের সম্ভাবনা ছিল। বিজ্ঞানীরা সেই টিস্যুগুলি থেকে পরীক্ষাগারে নতুন চারাগাছের জন্ম দিয়েছেন।
প্রাগৈতিহাসিক যুগের বীজ থেকে ‘সাইলেন স্টেলোফাইলা’ প্রজাতির চারাগাছের জন্ম হয় পরীক্ষাগারে। রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে এই গাছ দেখা যায়। তবে এখন এই প্রজাতির ফুলের তুলনায় পরীক্ষাগারের জন্ম নেওয়া চারাগাছের ফুল চেহারায় কিছুটা ভিন্ন । জন্ম নেওয়ার ১ বছর পরে ‘সাইলেন স্টেলোফাইলা’ চারাগাছটি নতুন বীজ উৎপন্নও করেছে।
এর আগে ২০১২ সালে সাইবেরিয়া থেকে পাওয়া হিমায়িত বীজ থেকে গবেষণাগারে জন্ম নিয়েছিল আরও একটি ‘সাইলেন স্টেলোফাইলা’ প্রজাতির চারাগাছ। তবে সেই বীজের বয়স ছিল ৩০ হাজার বছর। এবার বয়সে ২ হাজার বছর এগিয়ে থাকলো সাম্প্রতিক পরীক্ষার বীজটি।