বিচ্ছেদে কটূক্তি নয়, গ্রহণযোগ্যতা হোক স্বাভাবিক!

সম্পর্কে বিচ্ছেদ আজকাল বলা যায় নিত্য ঘটনা। প্রেমের সম্পর্কগুলোতে যেমন বিচ্ছেদ হওয়া সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে তেমনি বিবাহ বিচ্ছেদও সাধারণ ঘটনাই। সম্পর্ক তৈরি হওয়া, আবার সে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া জীবনের স্বাভাবিক নিয়মের মধ্যেই পড়ে।
জীবনযাপনের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রতিটি পরিণতিই স্বাভাবিক। একটা মানুষের সাথে বিবাহের পর তার সাথে সারাজীবন একইরকম কাটবে এমন কোনো কথা নেই৷ অভিজ্ঞতার সাথে সাথে মানুষের মতের পরিবর্তন হয়। এই পরিবর্তন কে বরণ করতে কেউ পারে কেউ পারেনা। কেননা সৃষ্টিকর্তা সকল মানুষকে সমান ক্ষমতা দেন নি।
তবে বিচ্ছেদ অবশ্যই কষ্টের। তাও নানা কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে বিচ্ছেদ হয়ে থাকে। চলতি বছরের হিসেব অনুযায়ী শুধু মাত্র ঢাকায় দৈনিক গড়ে ২৬ টি করে বিচ্ছেদের আবেদন এসেছে। এই ২৬ জনের সকলের খোঁজ সবার জানা নেই। সবাই এসব নিয়ে কথাও বলে না। তবে যখনই কোনো সেলিব্রিটি তারকার জীবনে এমন ঘটনা ঘটে তখনই তাকে পড়তে হয় নানারকম মন্তব্যের বিপাকে।
২০১৭ তে আইডল জুটি তাহসান মিথিলার ১১ বছরের বৈবাহিক সম্পর্কে বিচ্ছেদ হয়। শুরু হয় দুজনের চরিত্র, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানারকম মন্তব্য। চলতি বছর আবার অপূর্ব ও নাজিয়া হাসানের বিচ্ছেদের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নানারকম কটু মন্তব্য ভেসে বেড়াতে দেখা যায়।
বর্তমানে আলোচনায় ফারিয়া- অপু। ২০১৮ সালে পাঁচ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ককে বিয়েতে পরিণতি দেন। এবছরই দিন কয়েক আগে সোশাল মিডিয়ায় ফারিয়া তার বিচ্ছেদের কথাটি জানান। তারপর থেকে নানারকম মন্তব্যের বিপাকে ফড়িয়া।
অথচ সাধারণ জীবনে দৈনিক কত সংখ্যক বিচ্ছেদ হয় তার হিসেবও সকলে রাখেন না। স্বাভাবিক ভাবেই তারকা জীবন নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশি থাকে। তবে এই আগ্রহ তাদের ব্যক্তিগত জীবনকেও আলোচনা সমালোচনা থেকে বাদ দেয় না। সেটাও এখন স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকটা মানুষ ব্যক্তিজীবনে স্বাধীন। আর সবারই নিজের জীবন নিয়ে কিছু ব্যক্তিগত আদর্শ থাকে। সে কখন সম্পর্কে যাবে, আর কখন সে সম্পর্কে আর থাকবে না বা থাকতে পারছে না বলে সম্পর্কে বিচ্ছেদ আনবে সেটা তার ব্যক্তিগত আদর্শের মধ্যেই পড়ে।
প্রিয় তারকার সুখকর পরিণয়ে যেমন ভক্তদের আনন্দ হয় তেমনি খারাপ কিংবা বিচ্ছেদে কষ্টও হয়।আর বিচ্ছেদ কারোর জন্যই সুখকর খবর নয়। তাই বলে সমবেদনার পরিবর্তে তার দিকে কটূক্তি ছুড়ে দেওয়া কখনোই উচিত নয়। যেখানে প্রতিটা মানুষ কে তার ব্যক্তিগত জীবনের যেকোনো পর্যায়ে সম্মান দেখানো আমাদের নৈতিকতার মধ্যে পড়ে।
তারকা বলে সে সাধারণ জীবনের বাইরে এমনটা নয়। তাই কটূক্তি বা নেতিবাচক মন্তব্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতিকে অসহনীয় করা উচিত নয়। বরং জীবনের স্বাভাবিক নিয়মের ঘটনা হিসেবে বিচ্ছেদকেও স্বাভাবিক ভাবে নিতে হবে। ব্যক্তিগত ভাবে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে। নিজেদের নৈতিকতার পরিচয়কে অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।